সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

রাম, কৃষ্ণ ও শীব ঠাকুরের কন্যাশীশু বিবাহ এবং হিন্দুদের মিথ্যাচার



আসলে আমার স্পষ্ট রেফারেন্স পুর্বক কিছু নোট যেগুলো অনলাইন উগ্র হিন্দুদের পর্দাফাস করে দেয়, সেগুলোকে খন্ডানোর প্রয়াসে অনলাইন হিন্দুরা ফেসবুকের কিছু কুটিল কিন্তু মুর্খ ও মিথ্যুক হিন্দুদের শরনাপন্ন হয় এবং তারা কোনরকম কিছু একটা জবাবমুলক নোট বা লেখা লিখে দেয়, আর অন্ধ হিন্দুরা সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। যদিও এসব লেখক হিন্দুরাও নীচু জাতের হয়ে থাকে এবং এদের শাস্ত্রীয় জ্ঞান নাই বললেই চলে।এরা এসব হাবিজাবি লিখে উগ্র হিন্দুদের কাছে বাহ বা পায়।কারন ফেসবুকের অন্ধ হিন্দুদের  ইটের টুকরা ধরিয়ে যদি বলা হয় এটা হীরা, ওটা ওরা চোখ বুঝে বিশ্বাস করে নেয়।  হিন্দুদের ইট দেখানো তেমনি এক কুটিল এবং মিথ্যুক হিন্দু হচ্ছে সমীর কুমার মন্ডোল। এই ব্যাটা এক বছর আগেও আমার সাথে ডিবেটে না পেরে আমাকে ব্লক দিয়েছিল। ব্যাটা এখনো আমাকে ব্লক দিয়ে রেখেছে ভয়ে। এ অনলাইন হিন্দুদের বাহবা পেতে এসব হাবিজাবি জবাবমুলক পোষ্ট লিখে থাকে। এর এইসব নোট নিয়ে অবশ্য সাধারন হিন্দুদের তেমন ফালাফাল করতে দেখা যায় না। তবে বিভিন্ন ফেক আইডী, যেমন গর্বিত হিন্দু, আর্য হিন্দু ইত্যাদি নামধারী আইডি, যেগুলো চালায় আসলে দাস শ্রেনীর স্কুল পড়ুয়া হিন্দু ছেলেপেলে,  তারাই এইসব নিয়ে কিছুটা ফাল পাড়ে।
ঠিক তেমনি কিছুদিন আগে স্পষ্ট রেফারেন্স পুর্বক হিন্দু ধর্মে শিশুবিবাহ নিয়ে একটা নোট লিখেছিলাম,
নোট লিংক হিন্দু ধর্মে শীশু বিবাহ
 সমীর নামক ভন্ড সেটা খন্ডানোর নাটক করেছে, আসুন দেখি তার মিথ্যাচার,
সে লেখে,
কতিপয় ফেসবুকিও মৌলবাদী মুসলমানরা নবী মুহাম্মাদ ও তার স্ত্রী আয়েশা বয়সের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকার জন্য, খুব লজ্জা বোধ করে! সম্ভবত নবী তখন প্রায় বুড়ো হওয়ার কাছাকাছি ৫৪ বছর এবং তার স্ত্রী আয়েশা ৬ বছরের শিশু যখন তাদের বিবাহ হয় এবং শারিরীক সম্পর্ক গড়ে ৯ vs ৫৪ বছর বয়সে। ( তথ্যসুত্র → Aisha the Child Wife of Muhammad)তবে কিছু কিছু ইসলামি আলেমরা এই বয়স নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে। তার সত্বেও মুসলিম প্রধান দেশ যেমন - সৌদি আরব, ইরাক, ইরান প্রভৃতি দেশে বহু আলেমরা এই নবীর সিদ্ধান্ত কে সহী হিসাবে মানে, এমন কি সেখানে অনেক মুসলমান আছে যারা নবীর এই পদাঙ্ক অনুসরণ করে।

আমার জবাবঃ
কোন কোণ মুসলিম রাসুলুল্লাহর সাথে আয়শা রাঃ এর বিয়ে নিয়ে লজ্জা বোধ করে সেটা আগে এই মুর্খ দেখাক। এই মুর্খ এরপর তথ্যসুত্র প্রদান করেছে Faithfreedom নামক ইসলাম বিদ্বেষী সাইট থেকে। এদের কাছে আসলে ইসলাম বিষয়ক তথ্য মানেই ইসলাম বিদ্বেষী সাইট। তা সেই সাইটের লেখাও তো ওর কথার সাথে মিলছে না। এই মিথ্যুক চন্ডাল লিখে, আয়শা রাঃ এর বিয়ে হয় ৬ বছর বয়সে আর শারিরীক সম্পর্ক হয় ৯ বছর বয়সে। কিন্তু উক্ত ইসলাম বিদ্বেষী যে সাইট রয়েছে সেখানেও ৯ বছরে শারীরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ নেই। বলা হয়েছে ৬ বছরে বিবাহ ও ৯ বছরে সে রাসুলুল্লাহর ঘরে আসেন। ঘরে আসা বলতেই ও সেক্স বুঝিয়ে ফেলেছে।
এই বয়স নিয়ে বিবাদে জড়ানো অস্বাভাবিক নয়, কারন সীরাত ও ঐতিহাসিক গ্রন্থ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে আয়শা রাঃ এর বিবাহ যখন হয় তখন তার বয়স ১৮ বছর এর কম ছিল না। যাক গে সেসব আলোচনা না করি।আর রাসুলুল্লাহর সাথে মা আয়শা রাঃ এর বিবাহ নিয়ে বিদ্বেষীদের মিথ্যাচারের জবাব জানতে এটা পড়ুন, রাসূল (সাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) কে নিয়ে যত মিথ্যাচার

মুর্খটা আবার লিখে, 
তবে এইসব নিয়ে মমিনরা মাথা ঘামাক গা, সে দেখে আমার দরকার নাই। কিন্তু ওইসব আবাল গণ্ডমূর্খরা - যারা সনাতন দর্শন, শাস্ত্র সম্পর্কে পরিচিত নই, কোনো পুরাণ গোটা পড়েও না, কোথাই কোন পুরাণের এক দুই লাইন নিয়ে টানাটানি করে হিন্দু গ্রন্থের পশ্চাৎ দেশের ফাঁকে ওদের নবীর মুখ গুঁজতে আসে কেনো ? যেখানে রাম ও কৃষ্ণের বিবাহ বয়স নিয়ে প্রামান্য গ্রন্থ বাল্মিকি রামায়ণ ও কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস মহাভারতে স্পস্ট করে কিছু বলা নাই, আছে শুধু অনুমান যোগ্য কিছু প্রমাণ। কিন্তু এরপরে আগত বিভিন্ন পুরাণে কিছু বর্ণনা আছে, এইক্ষেত্রে দেখা যায় পুরাণের বর্ণিত কিছু অংশ আবার প্রামান্য গ্রন্থ গুলির সাথে মেলে না বা এক এক পুরাণে এক এক রকম বর্ণনা। স্পস্টত পুরাণের এইসব অংশ গুলো হতে পারে নতুন ভাবে সংযোজিত। এইক্ষেত্রে কোন পুরাণ কতটা প্রাচীন এবং তার সাথে অন্য পুরাণের সামঞ্জস্যতা কতটুকু তার বিচার করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরসঙ্গে পুরাণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য এটি একটি মিশ্রপ্রকৃতির গ্রন্থ - এতে দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, কলা, প্রায়োগিক বিদ্যা, আধ্যাত্মবিদ্যা, রীতিনীতি প্রভৃতির সংমিশ্রণ। পুরাণের এই বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে - রবীন্দ্রনাথ, অরবিন্দ ঘোষ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্বামী বিবেকানন্দ সহ অনেকেই কম বেশি সহমত ছিলেন।

আমার জবাবঃ
পুরানের দু এক লাইন নিয়ে টানাটানি তখনই হবে যখন পুরানে সেরকম কথা থাকবে। আমার প্রশ্ন ওদের পুরানে সেসব থাকে কেন তবে ? হিন্দু ধর্ম গ্রন্থের পশ্চাতদেশ আছে জেনে ভালো লাগল, কিন্তু এই পশ্চাতদেশে তো ওদের ঠাকুরেরা দণ্ড ঢুকিয়ে বসে থাকে, ওদের আর জানার সুযোগ কোথায় ? আর বাল্মিকি রামায়ন ও কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস এর মহাভারত কে এই এক চোখা এখন প্রামান্য দাবি করল, কিন্তু যখন এই দুটি থেকেও রেফারেন্স প্রদান করা হয় তখন ওরা হেগে মুতে দিয়ে পেছায়। মূলত হিন্দুরা পিছানোতে ওস্তাদ। যাইহোক, রামায়ন ও মহাভারত ভিত্তিক কিছু নোটও লেখা হবে, দেখি ওরা কই যায়। যেহেতু ওর দাবী মতে এদুটো প্রমান্য গ্রন্থ। তাই আসুন দেখি মহাভারত বাল্যবিবাহ সম্পর্কে কি বলে,
মহাভারত, অনুশাসন পর্ব ১৩/৪৪, শ্লোক নং ১৩,
तरिंशद्वर्षॊ दशवर्षां भार्यां विन्देत नग्निकाम एकविंशतिवर्षॊ वा सप्त वर्षाम अवाप्नुयात
"ত্রিংদাদর্শী দশাবর্ষী ভার্যা বিন্দেত নগ্নিকাম,
একবিংশতিবর্ষী বা সপ্ত বর্ষাম অবাপ্নুয়াত।"
অর্থঃ ত্রিশ বছরের পুরুষের উচিত, দশ বছরের কন্যা বিবাহ করা, যাকে বলে নগ্নিকাম।
এবং একুশ বছরের পুরুষের উচিত, সাত বছরের কন্যা বিবাহ করা।
অনুবাদঃ কিশোরি মোহন গাংগুলি।
নীচে স্ক্রীনশট

এখন মুর্খটা কি বলবে ? মহাভারতেই তো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে শিশু বিয়ের অনুমোদন।
আর পুরানে যদি পরস্পর বিরোধি কথা থাকে, তো হিন্দুরা পুরান মানে কেন ? বৈষ্ণবীদের মূল ধর্মটাই ব্রাক্ষবৈবর্তপুরান নির্ভর। ইস্কনীরা ভগবত পুরানকেই তাদের দ্বিতীয় মূল গ্রন্থ মানে গীতার পরে। তা পুরানে যদি এত অসংগতি থাকে তবে এই মুর্খ পুরান নিষিদ্ধ ঘোষনা করে দাবি দাওয়া পেশ করছে না কেন হিন্দু পন্ডিতদের কাছে ? তারা নিয়মিত পুরাণ মেনেই নিজেদের ধর্ম পালন করছে, কিন্তু সেই পুরান থেকে রেফারেন্স দিলেই আবার মুর্খরা কান্নাকাটি শুরু করে। কি দ্বিমুখিতা।

এরপরে লেখে,
বাস্তবে বাল্মিকি রামায়ণ অনুসারে মাতা সীতার বয়স ছিলো আনুমানিক ৯ বছর এবং শ্রীরামের বয়স ছিলো আনুমানিক ১৬ বছর যখন তাদের বিবাহ হয় এবং মাতা সীতার বয়স যখন আনুমানিক ৩২ এবং শ্রীরামের বয়স যখন আনুমানিক ৩৯ বছর তখন তারা মিলিত হন। নিচে তার সম্পূর্ণ হিসাব প্রমাণ সহ।
বাল্মিকি রামায়ণ - ৩:৪৭:১০ শ্রীরাম ও মাতা সীতার বনবাসের পূর্বে তাদের বয়স ছিলো যথাক্রমে ২৫ বছর ও ১৮ বছর। অতয়েব শ্রীরামের থেকে মাতা সীতার বয়সের অন্তর (২৫-১৮) = ৭ বছর।
বাল্মিকি রামায়ণ - ১:২০:২ এখানে শ্রীরামের বয়স উল্লেখ আছে আনুমানিক ১৬ বছর যখন সে রাক্ষস বধের উদ্দেশ্যে ঋষি বিশ্বামিত্রের সঙ্গে বনে গমন করেন। রামায়ণ অনুসারে তিনি রাক্ষস বধের পরে মিথিলা গমন করেন মাতা সীতার সাথে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে। সুতরাং বিবাহের সময় শ্রীরামের বয়স ছিলো আনুমানিক ১৬ বছর এবং মাতা সীতার বয়স আনুমানিক (১৬-৭) = ৯ বছর।
শ্রীরাম ও মাতা সীতার বনগমনের পূর্বে বয়স ছিলো যথাক্রমে ২৫ বছর ও ১৮ বছর, এরপর ১৪ বছরের বনবাস অর্থ্যাৎ বয়স দাঁড়াবে গিয়ে (২৫+১৪) = ৩৯ বছর ও (১৮+১৪) = ৩২ বছর। এরপরে ১৪ বছরের বনবাস পূর্ণ করে শ্রীরাম মাতা সীতাকে সঙ্গে করে নিয়ে অযোধ্যা ফিরে আসেন এবং আনুমানিক এর আরো ১ বছর পরে লব ও কূশের জন্ম হয়, সুতরাং কমপক্ষে মাতা সীতার ৩২ বছরের আগে শ্রীরাম তার সাথে মিলিত হন নাই। অতয়েব বাল্যবিবাহ হলেও মিলন হয় সম্পূর্ণ প্রাপ্ত বয়সের চেয়েও বেশি সময়েরও পরে। ★ এখানে কুৎসাকারীরা আরো একটি রেফারেন্স টানে :- স্কন্দ পুরাণ ৩.২.৩০.৮-৯ থেকে। এখানে বলা হয়েছে বিবাহের সময়ে মাতা সীতার বয়স ছিলো ৬ বছর! উক্ত অংশটি যে নতুন ভাবে স্কন্দ পুরাণে সংযোজিত এক ভ্রান্ত মন্তব্য তার প্রমাণ এই প্রাচীন বাল্মিকি রামায়ণই দিয়ে দিচ্ছে।


আমার জবাবঃ
এই মিথ্যুক অপপ্রচারকারীর মতে রাম এর সাথে সীতার বিয়ে হয় তখন সীতার বয়স ছিল ৯ বছর। যাক গে, ধরে নিই ৯ বছর ছিল সীতার বয়স যখন রামের সাথে তার বিয়ে হয়। এখন ৬ আর ৯ এর মধ্যে পার্থক্যটা কি রইল ?
তবে যাই হোক, সীতার বয়স বিয়ের সময় ৯ বছর ছিল এবং ৬ বছর ছিল না এ ব্যাপারে কিন্তু ও কোন প্রমান দেখাতে পারল না।
ও লিখল,  বাল্মিকি রামায়ণ - ১:২০:২ এখানে শ্রীরামের বয়স উল্লেখ আছে আনুমানিক ১৬ বছর যখন সে রাক্ষস বধের উদ্দেশ্যে ঋষি বিশ্বামিত্রের সঙ্গে বনে গমন করেন। রামায়ণ অনুসারে তিনি রাক্ষস বধের পরে মিথিলা গমন করেন মাতা সীতার সাথে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে। বুঝলাম যে বাল্মিকি রামায়ন-১ঃ২০ঃ২ অনুসারে ১৬ বছর বয়সে রাম রাক্ষস বধের উদ্দেশ্যে গমন করে, যখন সীতার বয়স ছিল ৯ বছর। কিন্তু এরপরে যে মিথ্যুকটা লিখল রাক্ষস বধের পর সে সীতাকে বিয়ে করে, এটার রেফারেন্স কই ? ও কি পুরো রামায়ন থেকে একটা রেফারেন্সও দেখাতে পারবে যে রাক্ষস বধের পর রাম সীতাকে বিয়ে করে ? মিথ্যুকটা এখানে এলোমেলো রেফারেন্স দিয়ে অনলাইন হিন্দুদের একটু চোখের আরাম দিল মাত্র।
আমার দেয়া রামায়নের রেফারেন্স নিয়েও মিথ্যুকটা মিথ্যাচার করে লেখে,
স্কন্দপুরাণ ছাড়াও এখানে কুৎসাকারীরা বাল্মিকি রামায়নের অরণ্য খন্ড, ৪৭ অধ্যায়ের ৪ নং শ্লোক দেখিয়ে এক মূর্খামো অঙ্ক কষে মাতা সীতার বয়স ওদের নবীর স্ত্রী আয়েশার বিবাহের বয়সের সমান দেখাতে চাই। বাস্তবে এই ১২ বছর টি "ইশ্বাকূণাম" ইশ্বাকু রাজবংশের অর্থ্যাৎ শ্রী রামের পিতার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে।
মুলত অনলাইনের হিন্দুদের শাস্ত্র সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকার কারনে এবং জীবনেও এরা ধর্মগ্রন্থকে চোখের সামনে না দেখার কারনে এই বাটপার মিথ্যাচার করার সুযোগ পেল। ও বলল, এখানে নাকি রামের বাবার কথা বলা হয়েছে। নীচে স্ক্রীনশট দিলাম, নিজেরাই দেখুন এখানে কার সম্পর্কে বলা হয়েছে, রাম ও সীতার সম্পর্কে, রামের বাবার সম্পর্কে নয়।

অর্থাৎ ১২ বছর পর্যন্ত সে ঈশ্বকুশ(রামের বাবা) এর প্রাসাদে অর্থাৎ শশুরবাড়িতে রয়েছে।
আর সে রামের সাথে বনবাসে গিয়েছে তখন তার বয়স ছিল ১৮,
এবার নিজেই হিসেব করুন ১৮-১২= ৬ বছর। অর্থাৎ সীতার বিয়ের সময় বয়স ছিল ৬ বছর।
আর এই স্পষ্ট রেফারেন্সই দেখি আমরা স্কন্দ পুরানে, যেটার রেফারেন্স মেইন নোটটিতে দিয়েছিলাম। যেহেতু এটা হুবহু রামায়নে উল্লখিত সীতার বয়সের হিসাবকেই সাপোর্ট করে তাই, এটা ভুল হবার কোন কারন দেখি না।

এবার এই বরাহশাবক একটা যুক্তি প্রদান করে যে, যেহেতু লব ও কুশের জন্ম হয় তখন সীতার বয়স ছিল ৩২  অতএব রাম এর সাথে সীতার বাল্য বিবাহ হলেও তাদের মিলন ঘটে অনেক পরে অর্থাৎ ৩০ বা ৩১ বছর বয়সে।
যুক্তিটা মোটামুটি ভালোই ছিল। কিন্তু তথ্যবিভ্রাটে যুক্তিটা আর ধোপে টিকবে না।আসলে মুলত হিন্দুরা হিন্দু ধর্ম নিয়ে যত জবাব দেয়ার চেষ্টা করবে, ততই মূলত হিন্দু ধর্মের কুতসিত রুপ সামনে চলে আসবে। আসুন দেখি এখন কি বেরোয়।
রাম সীতার সাথে বনবাস থেকে আসার পরে নয়, বরং বহু আগে থেকেই সেক্স করেছে। প্রমান,
বাল্মিকি রামায়ন, সুন্দর খন্ড, স্বর্গ ৩৯, শ্লোক ৫১, বলা আছে,
"মন্মথ [কাম দেবতার অপরনাম] এর বান দ্বারা  জৈবিকতায় আঘাতপ্রাপ্ত রাম, সুখ হতে বঞ্চিত, যেন একটা হাতি উত্যক্ত হচ্ছে সিংহ দ্বারা"
সরাসরি পড়ুন www.valmikiramayan.net/sundara/sarga39
অর্থাৎ সীতা অপহরনের পর তার অভাবে রাম জৈবিক চাহিদায় দগ্ধ। অর্থাৎ বনবাসে সে সীতার সাথে মিলন করে জৈবিক চাহিদা মিটাতো। তাই তার অভাবে এখন আঘাতপ্রাপ্ত হাতির মত ছটফট করছে।
একিভাবে সীতার অভাবে কামের জালায় দগ্ধ রামের কথা উল্লেখ আছে, বাল্মিকি রামায়ন যুদ্ধখন্ড, স্বর্গ ৫, শ্লোক ৮ ও ৯ এ। সরাসরি পড়ুন www.valmikiramayan.net/yuddha/sarga5
স্ক্রীনশট



তবে শুধু যে বনবাসে বসেই রাম সীতার সাথে সেক্স করেছে এমন নয়, বরং বনবাসের পুর্বেই এবং বিবাহের পর পরই রাম সীতার সাহিত দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করেছে
বাল্মিকি রামায়ন, বালাখন্ড, স্বর্গ ৭৭, শ্লোক ২৯ বলা আছে,
"যখন কামোদ্দিপনার সহিত রাম রাজা জনকের কন্যার (সীতা) সহিত দাম্পত্য অতিবাহিত করছিল, তখন রামকে লাগছিল দেবতাদের দেবতা বিষ্ণূর মত যখন সে তার দেবী লক্ষীর সহিত রত থাকে।"
সরাসরি পড়ূন www.valmikiramayan.net/baala/sarga77
স্ক্রীনশট



অর্থাৎ শিশূ অবস্থায় সীতাকে বিয়ে করে সেই সময়েই রাম দাম্পত্য অতিবাহিত করেছিল।তাই এই মুর্খটা যা দাবি করেছে  তা সবই ভিত্তিহীন।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, বিয়ের এত বছর পরেও রাম ও সীতার কোন সন্তান ছিল না কেন ? উত্তরটা হিন্দুদের জন্য বেশ দুখজনক ও লজ্জাজনকই বটে। সন্তান না হওয়ার কারন হচ্ছে রাম ছিল নপুংসক। সন্তান উতপাদনে অক্ষম।
রেফারেন্স, বাল্মিকি রামায়ন, সুন্দর খন্ড, স্বর্গ ৩৫, শ্লোক ১৮,
এখানে, হনুমান যখন সীতার নিকট আসে, তখন সীতা রামের বর্ননা শুনতে চায় হনুমানের নিকট সন্দেহ দূর করতে যে সে সত্যিই রামের বার্তাবাহক কিনা। হনুমান তখন রামের অনেক বৈশিষ্ট্য বর্ননা করতে করতে ১৮ নাম্বার শ্লোকে বলে,
"রাম চারটি বিষয়ে খাটো ছিল, ঘাড়, পুংজনেন্দ্রিয় শক্তি , পিঠ এবং পা।"
(নীচে স্ক্রীনশট, অনুবাদকঃ কিশোরি মোহন গাংগুলি)


বাল্মিকি রামায়ন হতে সরাসরি পড়ুন www.valmikiramayan.net/sundara/sarga35

অর্থাৎ ভগবান রাম ছিল নপুংসক, আর এ কারনেই সীতার সাথে মিলিত হলেও তাদের কোন সন্তান হয়নি।

এবার তাহলে প্রশ্ন জাগে, লব ও কুশ হল কিভাবে ?
একটি অতি প্রবল সম্ভাবনা জাগে সেটা হচ্ছে, যদিও লব ও কুশ, বৈবাহিক সম্পর্কযুক্ত সুত্রে রামের সন্তান, কিন্তু তাদের আসল পিতা হচ্ছে রাবন। হ্যা মহাভারত ও বাল্মিকি রামায়নের ঘটনা, পটভুমি ও যুক্তি অনুসারে এটাই নির্দেশ করে।
যেমন,
মহাভারত, বনপর্ব, দ্রুপদী হরন বিভাগ,  সেকশন ২৭৭
শকুনরাজ মার্কন্ড, রাবনকে উদ্দেশ্য করে বলছে, তুমি কিভাবে সীতাকে ধর্ষন করবে যেখানে আমি জীবিত রয়েছি। এরপর যুদ্ধ হল মার্কন্ডের সাথে রাবনের। রাবন মার্কন্ডকে হত্যা করল এবং সীতাকে কোলে বসিয়ে উর্ধাকাশে গমন করল।

মার্কন্ড বলল সে বেচে থাকতে রাবন সীতাকে ধর্ষন করতে পারবে না, কিন্তু সে রাবনের হাতে মারা গেল। এরপর রাবন সীতাকে কোলে বসাল এবং উর্ধাকাশে গমন করল। এদ্বারা কি বোঝায় ? শারীরিকভাবে যে সীতার সাথে কিছু হলেও করেছিল।
সীতার নিজের কথায় এই ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট,
বাল্মিকি রামায়ন, যুদ্ধখন্ড, স্বর্গ ১১৬, শ্লোক ৮, সীতা বলছে রামকে,
"O lord! It was not my willfulness, when I came into contact with the person of Ravana. I was helpless.
সরাসরি পড়ূন www.valmikiramayan.net/yuddha/sarga116
অর্থাৎ বোঝা যায় যে রাবন সীতাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন করেছিল।

আর মজার ব্যাপার হচ্ছে সীতা রাবনের নিকট থেকে ফিরে আসার পরই লব ও কুশ এর জন্ম হয়। অথচ রামের সহিত সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরো তার কোন সন্তান জন্ম নেয়নি। আমরা দেখিয়েছি যে বিবাহের পরই সে রামের সাথে দাম্পত্য  জীবন অতিবাহিত করেছে। কিন্তু রাবনের সহিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরই সন্তান হল।এখানে ২ এ ২  যে চার তাই মুলত প্রমান হয়। তবে রামায়নে স্পষ্ট বলা নেই যে লব ও কুশ রাবনেরই সন্তান, কিন্তু ঘটনা প্রচ্ছন্ন ভাবে এটাই নির্দেশ করে। বাল্মিকি ছিলেন রাম এর সমসাময়ীক রাজ কবি। তাই আক্ষরিকভাবে এই কথা রামায়নে লেখা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না, ভয় বা সন্মান যে কারনেই হোক না কেন। কিন্তু রাম জননেন্দিয় শক্তিতে খাটো, এই কথা লিখে তিনি এই ব্যাপারে স্পষ্ট ইংগিত দিয়েছেন।

এরপরে রুকমনীর বিয়ের বিষয়ে লেখে,
শ্রীকৃষ্ণের সাথে রুক্মিণীদেবীর বিবাহ সম্পর্কে প্রাচীন ব্যাস মহাভারতের আদিপর্বেই উল্লেখ আছে, তবে এখানে শুধু তার বিবাহের ব্যাপারে উল্লেখ আছে,উনার বয়সের ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ হয়নি। শ্রীকৃষ্ণ ও রুক্মিণীদেবীর বিবাহ ও বৈবাহিক জীবনের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উল্লেখিত হয়েছে ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে। এখানে সম্পূর্ণ ১০৫ নং, ১০৭ নং ও ১১২ নং অধ্যায় জুড়ে এর বিবরণ আছে। এখানে বিবাহের সময় কালে রুক্মিণীদেবী ও শ্রীকৃষ্ণকে যুবক যুবতী ও বয়ঃসন্ধি অতিক্রমকারী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, নিম্নরূপ - ১০৫ অধ্যায়ে ৪নং শ্লোকে রুক্মিণী দেবী সম্পর্কে বলা হচ্ছে
নবযৌবনাসম্পন্না রত্নাভরনভূষিতা
তপ্তকাঞ্চনবর্নাভা তেজসা জ্বলিতা সতি


আমার জবাবঃএখানে নবযৌবনা দ্বারা ও বলতে চাইলো যে রুকমনী ছিল তখন যুবতী।
মজার বিষয় এখানে নবযৌবনা দ্বারা ও যা প্রমান করতে চাইলো, মুলত শব্দটা দ্বারা তো তার উলটা অর্থই প্রকাশ হয়। নবযৌবনা মানে যার কেবলমাত্র যৌবন এসেছে। আর আমরা জানি একটি মেয়ের শরীরে যৌবন আসে ৮/৯ বছরের মধ্যেই। স্বাভাবিকভাবে একটি মেয়ের মাসিক শুরু হয় সর্বনিম্ন ৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৩ বছর বয়সের মধ্যে
http://kidshealth.org/en/teens/menstruation.html
অর্থাৎ ৮ বছর বয়সে যখন একটি মেয়ের মাসিক শুরু হয় সে তখন নবযৌবনা বলে চিহ্নিত হয়। আর এই মুর্খ নিজেই প্রমান দিল যে রুকমনী ছিল বিয়ের সময় নবযৌবনা অর্থাৎ ৮ থেকে ১৩ এর মধ্যে।যদিও প্রাচীন সময়ে মেয়েদের মাসিক আরো আগেই শুরু হত, উপরে মহাভারত হতেই আমরা রেফারেন্স দেখেছি যে কন্যাকে ৭ বছর বয়সে ।
এরপরে ও যুক্তি দিল রুকমনীকে যেহেতু বিবাহযোগ্য বলা হয়েছে পরবর্তী মন্ত্রে, অতএব রুকমনী শিশু ছিল না। এবার আসুন্ তবে দেখি হিন্দু ধর্মানুসারে কন্যাকে বিবাহযোগ্য গননা করা হয় কত বছর বয়সে, লেখার শুরুতে মহাভারত থেকে দেখিয়েছি কন্যাকে ৭ বছর বয়সে ২১ বছর বয়সের পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এবার দেখি মনুসংহিতা কি বলে,
মনুসংহিতা ৯/৯৪
"ত্রিংশদ্বর্ষোদ্বহেত কন্যাং হদ্যাং দ্বাদষবার্ষিকীম
ত্রষ্টোবর্ষোহষ্টবর্ষাং বা ধর্মে সীদতি সত্তরঃ"
অর্থঃ "ত্রিশ বছর বয়স্ক পুরুষ বিবাহ করবে ১২ বছরের কন্যাকে, আর ২৪ বছর বয়স্ক পুরুষ বিবাহ করবে ৮ বছরের কন্যাকে। ইহায়ই বিবাহ বয়স, ইহার অন্যত্র হইলে ধর্ম ষ্ট হয়।"  


আরো দেখি কি বলা,
মনুসংহিতা ৯/৮৮
"উতকৃষ্টায়া ভিরুপায় বরায় সদৃশায় চ,
অপ্রাপ্তামপি তাং তস্মৈ কন্যাং দদ্যাদ যথাবিধি"
অর্থঃ কুলে এবং আচারে উতকৃষ্ট সজাতীয় বর পাইলে কন্যা বিবাহযোগ্য না হইলেও উহাকে সম্প্রদান(বিবাহ) করাবে।
অর্থাৎ বিবাহ যোগ্যা না হলেও মানে ৮ বছরের ছোট হলেও উতকৃষ্ট পাত্র পেলে তাহাকে বিবাহ দিবে।


অর্থাৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি সনাতন শাস্ত্রমতেই কন্যা বিবাহযোগ্য ধরা হয় ৭/৮ বছরেই। তাই রুকমনীও নবযৌবনা প্লাস বিবাহযোগ্য হয়েছিল এটা প্রমান করে সেও ৭ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ছিল বিয়ের সময়।

এরপরে লিখে, 
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে কুৎসাকারীরা এখানে এই অংশের জন্য যেকইটা রেফারেন্সের স্কিনশটের তলাই দাগ মেরেছে সবগুলো বিবাহ প্রস্তাবের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বিবাহের নয়। এবার যদি কোনো যুবক যুবতী প্রাচীন কালে স্বেচ্ছাই বৈধ্যভাবে বিবাহ করে মিলিত হন তবে আশা করছি কোনো সুস্থ মস্তিস্কের মানুষ,নবীর মতো pedophile এর উপাধী দেবে না। 
আমার জবাবঃআমি যেকয়টাতে দাগ মেরেছি তার একটিতে বেশ স্পষ্টভাবেই বিয়ে এবং বিয়ে পরবর্তী সেক্স এর কথা পর্যন্ত আছে, কিন্তু এই মিথ্যুক সেই অংশটা এড়িয়ে গেল। নীচে আবারো স্ক্রীনশটটা দিচ্ছি,
ব্রাক্ষ বৈবর্তপুরান, কৃষ্ণজন্মখন্ড, অধ্যায় ১১২, শ্লোক ১-১০ স্পষ্ট বলা আছে,
রুকমনী পরিপুর্নভাবে তখনো বেড়ে ওঠেনি, এমন্ সময় কৃষ্ণ তার সাথে সেক্স করল এবং রুক্মনী জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।

এখন কি তবে মিথ্যুকটা বলবে যে, বিবাহ প্রস্তাবের সময়ই কৃষ্ণ রুক্মনীর সাথে সেক্স করেছে ? একিসাথে আমরা স্পষ্টভাবে দেখলাম যে রুক্মনী তখনো বেড়ে ওঠেনি, অর্থাৎ সে শিশু কন্যা ছিল। কারন ৭/৮ বছরে মাসিক শুরুর মধ্যমে নারী যৌবনে পদার্পন করলেও আসলে তার শরীর তখনো বেড়ে ওঠে না। আর রেফারেন্সে স্পষ্ট লেখা যে রুকমনীও তখনো বেড়ে ওঠেনি যা প্রমান করে সে শিশু ছিল।


এবার শীবের ব্যাপার নিয়ে এই জনৈক মিথ্যুক বিশাল  বক্তব্য প্রদান করল। তবে এটা সত্য যে আমার মূল নোটে আসলে শিব পার্বতীকে শিশু অবস্থায় বিয়ে করেছে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কোন রেফারেন্স দেইনি।তবে সমস্যা কি?  এখন দিচ্ছি। তবে  তার আগে ওর কিছু যুক্তি দেখি।
ও লিখল,
প্রথমত, পুরাণের এই অংশে শিব পার্বতীর বিবাহ নয় বরং শিব পার্বতীর প্রথম সাক্ষাৎকারের কথা বলা হয়েছে, কুৎসাকারী যে স্কিনশট তার পোস্টে দিয়েছে তার উপরেই দেখুন লিখা আছে "Siva and Himavat meet together"! শিব পার্বতীর এই দেখা হওয়ার বহু পরে তাদের বিবাহ হয়েছে, এরজন্য প্রথম দেখার ব্যাপারে বলা হচ্ছে ১১ নং অধ্যায়ে এবং বিবাহের ব্যাপারে বলা হচ্ছে ৪৮ নং অধ্যায়ে। দুটি অধ্যায়ের মাঝে - প্রথম দেখা, প্রেমের উৎপত্তি, মাতার তপস্যা, বিবাহ প্রস্তাব, প্রস্তাব খারিজ, আবার দ্বিতীয় প্রস্তাব, পরে হিমালয় ও তার স্ত্রীর বিবাহে সম্বতি, হিমালয়ের সাথে বিভিন্ন দেবতাদের কথাপোকথন........... করে কত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে শেষে তাদের বিবাহ হয়, সুতরাং সময়ের সাপেক্ষে মা পার্বতীর বয়সও বেড়েছে, সুতরাং বিবাহের সময়ে তার বয়স কত ছিলো তা নির্ণয় করা খুব দুঃসাধ্য কর।
দ্বিতীয়ত, আমার এখানে একটি প্রশ্ন! শিব কবেই জন্মালো বা কবেই মৃত্যুবরণ করলো, যে কুৎসাকারীরা তার উপর মনুষ্য স্বভাব আরোপ করতে এসেছে? সাধে কি আগে এইসব মুসলমান কুৎসাকারীদের গণ্ডমূর্খ বলেছি। এরা তো শৈব্য দর্শনের কিছুই জানেও না এমন কি যে পুরাণের প্রসঙ্গ এখানে ওরা তুলেছে সেটাও সম্পূর্ণ পড়েও না!

আমার জবাবঃ
কথার অংশ বিশেষ সঠিক, পুরাণের এই অংশে পার্বতীর বিবাহ নয়, বরং শিব পার্বতীর প্রথম সাক্ষাতকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের সাক্ষাতকারের উদ্দেশ্য ছিল কি, এ ব্যাপারে একটু পরে আসছি।
কিন্তু দ্বিতীয়তে ও লিখল, শিব কবেই জন্মালো বা কবেই মৃত্যুবরণ করলো, যে কুৎসাকারীরা তার উপর মনুষ্য স্বভাব আরোপ করতে এসেছে? আমি আবার কোথায় তার উপর মনুষ্য স্বভাব আরোপ করতে এলাম ? এটা তো আরোপ করেছে ওদের পুরাণ গ্রন্থই। আপনারাই বলুন বিবাহ কি ঐশ্বরিক আরোপ না মনুষ্য আরোপ ? এখন পুরান গ্রন্থই যদি তার বিবাহ কামকেলির বর্ননা থাকে তো সেটা কি আমার দোষ না পুরাণের দোষ ?
পার্বতীর বিবাহের বয়সের রেফারেন্স আরো একটু পরে দিচ্ছি, আগে দেখি ও আরো কি লিখেছে,
এরপরে লিখেছে, 
এখানে কুৎসাকারী যে রেফারেন্স টেনেছে শিবপুরাণ, রুদ্রেসর্গ, পার্বতীখন্ড, ৩.১১.১-২, ঐ একই খন্ডের একই বিভাগে ৪৮ নং অধ্যায়ে, ১৮ থেকে ২৩ নং শ্লোকে - শিবের জাতি, বংশ ও গোত্র সম্বন্ধে বলতে গিয়ে মা পার্বতী বলছেন – “তিনি পরব্রহ্ম, সর্বশ্রেষ্ট, অনাদি, সর্ব্ব্যাপী, তার কোনো গোত্র নাই,পরিবার নাই........ আরো অনেক কিছু।

এখানে সেই শৈব্য দর্শনের কিছু অংশ স্পস্ট বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে শৈব্য দর্শন অনুসারে শিব কে? ও তার স্বরূপ কি? সেটাই উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে সে শিব হোক বা বিষ্ণু বা ব্রহ্মা সেই এক পরব্রহ্মের বিভিন্ন নাম। পুরাণ ছাড়াও উপনিষদেও সেই একই সিদ্ধান্তে শেষে উপনিত হয়। সাংখ্য দর্শনের পুরুষ ও প্রকৃতি, শৈব দর্শনে শিব ও শক্তি নামে আখ্যায়িত হয়েছে এবং বৈষ্ণব দর্শনে গিয়ে লক্ষী নারায়ণ এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনে (চৈতন্য দর্শন) রাধা ও কৃষ্ণ নামে।পুরাণকাররা তাদের এই দর্শন গুলোকে প্রকাশ করেছে এই প্রকৃতির উপাখ্যান, কল্প ও সাহিত্যের মাধ্যমে। অনেকটা মনের ভাব কে যেমন ভাষা, ইশারা ও লিখার মাধ্যমে বোঝানো হয় সেই রকম। এরজন্য আগেই উল্লেখ করেছি পুরাণ বিভিন্ন জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্র বা মিশ্র গ্রন্থ বিশেষ।
আমার জবাবঃখুব ভালো কথা, তাহলে ও স্বীকার করে নিয়েছে যে শীব পরমাত্নার নাম মাত্র। বাস্তবে কেউ নেই। পুরাণকাররা শৈব দর্শন, চৈতন্য দর্শন যেটাই হোক না কেন, এগুলোকে প্রকাশ করেছে প্রকৃতির উপাখ্যান, কল্প সাহিত্যের মাধ্যমে। অনেকটা মনের ভাব যেমন ভাষা ইশারায় প্রকাশ পায় তেমন। এবং পুরাণ নাকি জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্রে।
আমার প্রশ্ন শীব যদি পরমাত্নার নাম হয়, তবে পুরাণকাররা কেন নিরাকার পরমাত্নার পুত্র কন্যা দাম্পত্য জীবন ইত্যাদি কল্পনা করতে গেল ? ধরলাম তার স্বরুপ অনাদি, তবে পুরাণ কাররা কেন মনুষ্য আরোপ করল ? আর সেই আরোপেই মুর্তি বানিয়ে কেন মন্দিরে সেই মুর্তকে পুজা হয় ? তাহলে পুরো ব্যাপারটাই কি সৃষ্টার উপাসনার একটি ভুল পথ নয় ? পুরানকাররা যে শুধু শীবের উপর মানুষ্য রুপ আরোপ করেছে তা নয়, পর্নস্টারের রুপও আরোপ করেছে।
আসুন দেখি, দেবী ভগবত পুরাণ ৪।২০। ৩৬-৩৭
"কামের জ্বালায় দগ্ধ হয়ে শীব ব্রিঘু ঋষির জংগলে গেল। সেখানে যেয়ে সংগম শুরু করল। তার এই অবস্থা দেখে ঋষি বলল, তুমি অত্যান্ত নির্লজ্জ, এরপর ঋষি অভিশাপ দিল আর শীবের লিংগ খসে পড়ল"
অনুবাদঃ স্বামী বিজয়ানন্দ 


এরকম শীবের কামকেলীর আরো রেফারেন্স দেয়া যাবে। এখন প্রশ্ন হল শীব যদি নিরাকার পরমাত্না হয় তাহলে সে কেমনে কামের জালায় দগ্ধ হয়ে বন জংগলে সেক্স করে বেড়ায় ? পুরাণ নাকি দর্শন উপাখ্যান, তা নিরাকার পরমাত্নাকে কামুক পর্নষ্টার বানানো কোন ধরনের সনাতনী দর্শন ? পুরান নাকি জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্র, তা এটা কোন ধরনের জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্র ইশ্বর সম্বন্ধে ?

এবার আসি পার্বতীকে শিশুকালে বিয়ের প্রসংগে, এই জনৈক মিথ্যুক বলল যে এখানে শীব ও পার্বতীর হিমালয়ে দেখা হয়েছে মাত্র, বিয়ের কথা হয়নি। এবার আসুন দেখি বিয়ের অংশে, শিবের সাথে পার্বতীর বিয়ে ঠিক তখন সেই শিশু বয়সেই হয়।
রেফারেন্স একি স্কন্দ পুরান, খন্ড ১, বিভাগ ১, অধ্যায় ২৩, শ্লোক ৩-৯,
এখানে পুরো ঘটনাই বর্নান হয়েছে শীব ও পার্বতীর বিয়ে নিয়ে।শিব ঋষীদের পাঠায় পার্বতীর পিতার নিকট পার্বতীর সাথে বিবাহ প্রস্তাব নিয়ে। এরপর পার্বতীর পিতা পার্বতীকে কোলে বসিয়ে আদর করে ব্যাখা করছিলেন যে শীব কেন তার জন্য উপযুক্ত পাত্র।এখানে কোলে বসিয়ে আদর করা দ্বারা স্পষ্টই প্রমান হয় যে পার্বতী তখন ছিল শিশু।
নীচে স্ক্রীনশট, আর এবার জনৈক মিথ্যুককে চাপ্টার টাইটেলটাও ভাল করে দেখতে বলা হল, অধ্যায়ের নাম,  শীবের বিয়ে।
অনুবাদকঃ জে এল শাস্ত্রী


পুরাণের এই অধ্যায়ের কমেন্টারিতে গনেশ বাসুধা ঠাকুর লিখেছেন,
এই অধ্যায় টি সেই সময়ের বৈবাহিক প্রথার একটি চিত্র তুলে ধরে, এবং পুরাণের এই অংশই প্রমান করে সেই সময়ে শীশু বিবাহের প্রচলন ছিল।
নীচে স্ক্রীনশট


তাহলে আমরা দেখতে পেলাম শীব পার্বতীকে বিয়ে করেছিল শিশু থাকা অবস্থায়।
অর্থাৎ হিন্দু ধর্মে শীশু বিবাহ বৈধ এবং প্রধান প্রধান অবতারেরাই কন্যাশিশু বিবাহ করেছে এটা স্পষ্ট ।

৩টি মন্তব্য: