রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৭

ব্রাক্ষা স্বরস্বতির ইনচেষ্ট নিয়ে হিন্দুদের গোড়ামীর জবাব

হিন্দু ধর্মে ইনচেষ্টের রগরগে কাহিনির কথা সবাই ই জানেন।তবে কিছু  হিন্দুরা, এইসব ইনচেষ্টের একটা আধ্যাত্তিক ব্যাখা দেয়ার চেষ্টা করে, বলে এগুলার রুপক ব্যাখা আছে, আধ্যাতিক ব্যাখা আছে, ইত্যাদি। 
আগে আসুন দেখি এক নজরে বাপ মেয়ে তথা ব্রক্ষা স্বরস্বতির ইনচেষ্টের কাহিনিগুলো ,
ভগবত পুরাণ ৩।১২।২৮ তে উল্লেখ আছে-
“বাচং দুহিতরং তন্বীং স্বয়ম্ভুর্হরতীং মনঃ।
অকামাং চকমে ক্ষত্তঃ সকাম ইতি নঃ শ্রুতম।।২৮
ব্যাসদেব বলছেন “হে বিদুর! ব্রহ্মার কন্যা সরস্বতী(যেহেতু সরস্বতী ব্রহ্মার মুখ হইতে উৎপত্তি লাভ করেছিলেন সেই অর্থে ব্রহ্মার কন্যা,
ভগবত পুরাণ ৩।১২।২৬)অতীব মনোহারিণী সুন্দরী ছিলেন, আমি শুনেছি যে একদা নিজকন্যাকে দেখে ব্রহ্মা কামগ্রস্থ হয়েছিলেন যদিও সরস্বতী নিজে কামভাবরহিতা ছিলেন”
ভগবত পুরাণ ৩।১২।২৯
“পিতাকে এই রকম অধর্মজনক কুকর্মে আসক্ত দেখে তাঁর পুত্র মরীচিপ্রমুখ মুনিগণ সবিনয় বচনে বুঝিয়েছিলেন”
গবত পুরাণ ৩।১২।৩০
“হে পিতা! আপনি অসীম প্রভাবশালী হয়েও আপনার মনে উৎপন্ন কামবেগ সংবরণ না করে নিজ কন্যার প্রতি কামাভিলাষ পূরণের মতো যে দুস্তর পাপকর্মে উন্মুখ হচ্ছেন, আপনার পূর্ববর্তী কোনো ব্রহ্মাই (শ্রেষ্ট ব্যক্তি) তো এমন কর্ম অতীতে করেননি আর ভবিষ্যতেও করবেন না।
ভগবত পুরাণ ৩।১২।৩৩
“নিজপুত্র মরীচি প্রভৃতি প্রজাপতিদের এইরকম বাক্য প্রয়োগ করতে দেখে প্রজাপতি পিতা ব্রহ্মা অত্যন্ত লজ্জিত হলেন এবং ব্রীড়াবশত তাদের সামনেই নিজ দেহ পরিত্যাগ করলেন। তখন ব্রহ্মার পরিত্যক্ত সেই নিন্দনীয় শরীরটি দিকসকল গ্রহণ করল। সেটিই কুয়াশা-রূপে পরিণত হল, যাকে অন্ধকারও বলা হয়”
অতঃপর অত্যান্ত অশ্লীল ও ইনচেষ্ট এর এই রগরগে বর্ননা দেয়া ঘটনাগুলোকে হিন্দুরা আধ্যাত্তিক বর্ননা দেয়ার চেষ্টা করে ।
হিন্দুরা লিখে,

এই বিষয় টা দেখে খুব খারাপ ও কুরুচিকর মনে হচ্ছে, এটা তাদের চোখেই খারাপ ও কুরুচিকর মনে হবে যাদের দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই। কারণ আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দৃষ্টিতে এর ব্যাখা টাই সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে। আর পুরাণে অধিকাংশ বিষয় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়। মৎস্য পুরাণ ও ভগবত পুরাণ উভয় স্থানে মনু ও ঋষিসমূহ এর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।
মৎস্য পুরাণের ক্ষেত্রে ভগবান মৎস্য তার উত্তরে বলেছেন – “এই সৃষ্টি রজগুণ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে” যার জন্য স্বয়ং ব্রহ্মা মানে এখানে পৌরানিক ব্রহ্মা রজগুণের প্রতিক, এখানে ব্রহ্মা কোনো ভগবান বা ঈশ্বর নয় 
ব্রহ্মা হল সর্বগুনেশ্বর”, তাই এখনে এই ঘটনায় ব্রহ্মা হল গুণবাচক রজগুণ, আর এই রজগুণের জন্য মানুষের মনে মোহ,কাম ও লোভের উৎপন্ন হয়।
যা এখানে হয়েছে “শতরূপার রূপ দেখে ব্রহ্মা কামার্ত হয়ে পড়লেন”। এখানে শতরূপা হল “সাকার শতসৌন্দর্যের” প্রতিক। আর এটা স্বাভাবিক যে কোনো শতসৌন্দর্যময় জিনিসে প্রতি মানুষের রজগুনের দরুন সেই তার দিকে আকৃষ্ট হবেই। এখানে মানুষের এই রজগুন কে এই ঘটনাতে ব্রহ্মা বলে তুলনা করা হয়েছে এবং শতরূপা হল “সাকার শতসৌন্দর্যময়
পুরুষ মানুষের স্বিয় স্বভাব(ব্যাতিক্রম-যোগীপুরুষ ছাড়া)কোনো সেক্সি,হট,রূপসী মেয়েকে দেখলে পুরুষ মানুষের নিজ রজগুনের দরুন সেই মেয়ে কে দেখে কামগ্রস্থ হয়ে পড়ে এবং তার রূপ কে বিভর ভাবে দেখতে থাকে, আর ভাবে - ইস! যদি এটা আমার গার্লফ্রেন্ড বা বৌ হতো!
মৎস্য পুরাণের ঘটনাটা ঠিক তাই, ব্রহ্মা হল এখানে মানুষের মনের সেই রজগুন ।


আমার জবাবঃ

এভাবে তো চটির মধ্যেও আধ্যাত্তিক বা শিক্ষনীয় জ্ঞান খোজা যেতে পারে। ধরে নিই, কলি নামক চৌদ্ধ বছরের বালিকা ৫০ বছরের এক ব্যাক্তির সাথে সেক্স করল। অতঃপর স্থানে স্থানে সেই কামলীলা ও কামকেলীর বর্ননা। অতঃপরের কাহিনি মেয়ে গর্ভবতী, মেয়ের বাবা মা মেয়েকে দোষারপ করল ও মেয়ে আত্তহত্যা করল।
এখন এই কাহিনিতেও তো শিক্ষনীয় আছে যে এভাবে অবাধ সেক্স করা উচিত নয়। কিন্তু এই শিক্ষা দিয়ে কি এখানে কামকেলির বর্ননা পবিত্র হয়ে যাবে ? বা এই চটি সাহিত্য আধ্যাত্তিক হয়ে যাবে ?
মোটেই না।
অবাধা যৌনতা খারাপ এটা বুঝাতে কি বাপ মেয়ের ইনচেষ্টের কাহিনি আনতে হয় ? এটা সত্যিই অবাক করা বিষয়। প্রাচীন মুনিরিষিদের গাজার প্রকোপে বিভিন্ন দার্শনিক খেয়াল আসত, যেহেতু তাদের মনে থাকত অবমিত কাম তো স্বাভাবিক সেই দার্শনিক ব্যাখাকেও তারা কামলীলা ছাড়া ব্যাখ্যা করতে পারত না।
আর হিন্দুদের মতে এখানে ব্রক্ষা মানে নাকি ব্রক্ষা না বরং সাধারন ব্যাক্তি। বা স্বাভাবিক মানুষের চরিত্র। উল্লেখ্য পুরাণ অনুসারেও কিন্তু ব্রক্ষা ঈশ্বর নয় বরং একজন দেব সত্তা যিনি মহাজগতের সকল জীবের প্রধান। ঋগবেদ পুরুষসুক্ত অনুসারে তার দেহ থেকেই সকল জীব ও মহাজগতের সৃষ্টি। পুরাণ অনুসারে মহাবিশ্ব সৃষ্টি তার অন্ডকোষ হতে তাই এর আরেক নাম ব্রক্ষান্ড। বিভিন্ন জায়গায় ব্রক্ষার অবস্থানও বিভিন্ন বলা হয়েছে। আসুন দেখি স্বামী প্রভুপাদ এই মন্ত্রে ব্রক্ষার ব্যাপারে কি বলেছেন,
The post of Brahmā is the supermost post in the universe, and it appears that there are many Brahmās and many universes besides the one in which we are situated
http://www.vedabase.com/en/sb/3/12/30
তাহলে এত সন্মানীয় একজন সত্তাকে নিয়ে ইনচেষ্ট রচনা করে কেন মানুষকে বুঝাতে হবে যে অবাধ যৌনতা উচিত নয় ? এতে কি মানুষকে বুজানো হবে না বরং উতসাহ দেয়া হবে ?
বরং তখন তো উলটো হবে, যে, যেহেতু এত সন্মানিত একজন করেছে তাহলে আমরা করতে বাধা কোথায় ?
তাই ইনচেষ্ট এর মাধ্যমে নৈতিকতা শিক্ষা এটা সম্ভবত একমাত্র হিন্দু ধর্মেই পাওয়া যায়। 

শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭

কাবাশরীফ নিয়ে হিন্দুদের মিথ্যাচারের জবাবঃ

অনলাইন এবং রিয়াল লাইফেরও কিছু হিন্দুরা একটা কথা প্রায়ই মুসলিমদের মুখের উপর বলে, যে কাবা শরীফ নাকি ছিল শিব মন্দির। কিছু কিছু মুর্খ হিন্দু আবার এক ধাপ এগিয়ে বলে ওটা নাকি এখনো শিব মন্দিরই আছে, মুসলিমরা লুকিয়ে লুকিয়ে নাকি সেখানে শীবের পুজা করে। প্রকৃত পক্ষে এদের সমালোচনা করার ভাষা আমার জানা নেই। এরা নিজেরা নির্লজ্জতার মাথা খেয়ে শীব লিংগ পুজা করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আবার সেই লজ্জা ঢাকতে মুসলিমদের কাবাকে শীব লিংগ এর সাথে তুলনা করে। অনলাইন থেকে এলোপাথারি কিছু ছবি এনে কপিপেষ্ট করে এরা মিথ্যাচার করে। এদের মিথ্যাচারময় দাবীগুলো এখন তুলে ধরা হবে। এদের মিথ্যাচারের প্রধান বিষয় হচ্ছে হাজরে আসওয়াদ বা কালা পাথরটি। এরা বলতে চায় এটাই নাকি শীবলিংগ। মূলত যার চোখ আছে এবং হালকা বুদ্ধি আছে এমন কোন মানুষ জীবনেও এ কথা বলবে না। নীচে হাজরে আসওয়াদ এবং একটি শীবলিংগের ছবি দেয়া হল, দেখুন তো দূর দূর হতেও কোন মিল আছে কিনা ?

 
এরপর দ্বিতীয় নিকৃষ্ট মিথ্যাচার যেটা করে সেটা হচ্ছে হাজরে আসওয়াদকে যোনীর সাথে তলনা (নাউজুবিল্লাহ)। তারা বলে এটা নাকি দেখতে স্ত্রী যোনীর মত। আসলে হিন্দুরা যে শুধু শীবলিংগের পুজা করে এমনটা নয়, বরং সেই সাথে তারা যোনীর পুজাও করে। শীবলিংগটি যেটার উপরে বসানো থাকে এটি একটি স্ত্রী যোনী। পৌরানিক ভাষ্যমতে এটি হচ্ছে পার্বতীর যোণী, যাক গে সেসব বিষয়ে না যাই। তবে হিন্দুরা সাদৃশ্য দেখিয়ে বলতে চায় যে হাজরে আসওয়াদ হচ্ছে যোণি এবং মুসলিমরা যোনীর পুজা করে। প্রকৃতপক্ষে হাজরে আসওয়াদ পাথরটি কোনভাবেই স্ত্রী যোনীর সাথে মেলে না। গুগলে হাজরে আসওয়াদ লিখে সার্চ দিলে যে ছবিটি আসে সেটি হচ্ছে পাথরটির একটি দিক মাত্র। উপরে যে ছবিটি দিয়েছি সেটাই দেখুন, মূলত পাথরটির চারপাশে স্টিলের পাত বসানো, যাতে এটা ক্ষয়ে না যায়। মূল পাথরটি ভিতরে। হাজরে আসওয়াদ এর মূল টুকরো পাথরটির আকার এবার দেখুন নীচের ছবিতে, ছবিটি উইকিপিডিয়া হতে নেয়া, নিজেরাই যাচাই করুন এটা কোনভাবে স্ত্রীযোনীর সাথে মিলে কিনা,

উইকিপিডিয়া লিংক https://en.wikipedia.org/wiki/Black_Stone

একিসাথে উইকিপিডিয়াটি ভালো করে পড়ুন তো, কোথাও কোন প্রমান পান কিনা যে হাজরে আসওয়াদ শিবলিংগ বা কাবা শরীফ কোনকালে শীব মন্দির ছিল? আর হিন্দুদের ওপেন চ্যালেঞ্জ, কেউ এমন কোন ঐতিহাসিক প্রমান দিতে পারবে যে কাবা শীব মন্দির ছিল ? ওপেন চ্যালেঞ্জ। কাবায় তো দূরে থাক, সারা সৌদি আরবে কোথাও জীবনে শীব মন্দির পাওয়া গেছে কিনা পারলে কেউ প্রমান দেখাক।


এরপর মুসলিমরা কাবার পুজা করে এই মর্মে হিন্দুরা বেশ কিছু যুক্তি দেয়, সেগুলোর যৌক্তিকতা বিচার করা হল। হিন্দুদের যুক্তিঃ মুসলিমরা কাবার দিকে ফিরে নামাজ পড়ে, আবার হজের সময় তার চারদিকে তাওয়াফ করে, এগুলো কি মুর্তি পূজা নয়? যৌক্তিকতা খন্ডনঃ কাবা আমাদের কেবলা। আর কেবলা অর্থই হচ্ছে দিক নির্দেশ। অর্থাৎ কেবলা আমাদের দিক নির্দেশ মাত্র। এর দিকে ফিরে বিশ্বের সব মুসলমানকে নামাজ পড়ার আদেশ দেয়া হয়েছে, যাতে সবার মধ্যে একতা থাকে। যদি দিক নির্দেশ না থাকে, তবে দেখা যাবে একজন নামাজ পড়বে দক্ষনে একজন উত্তরে, এভাবে গন্ডগোল লেগে যাবে। এজন্যই ইউনিটির জন্য কাবাকে কিবলা বা দিক নির্দেশ ধরা হয়েছে। আর কাবার দিকে ফিরে নামাজ কখনোই মুর্তি পুজার সাথে তুলনীয় হতে পারে না। কারন সুদুর সৌদি আরবে অবস্থিত কাবার পুজা মানুষ পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে বসে করছে, এটা চিন্তা করতে গেলেও হাস্যকর মনে হয়। ধরুন কখনোকি এমন দেখেছেন কোণ হিন্দুকে, মুর্তি রয়েছে গৌহাটি, আর সে কেরালায় বসে প্রনাম দিচ্ছে ? দেখেন নি, তাই না ? তাহলে নামাজকে কিভাবে কাবার পুজা বলা যায় ? এরপর তাওয়াফের ব্যাপারে বলছি, মুসলিমরা তাওয়াফ করে আল্লাহর একত্ববাদ প্রদর্শনের জন্য। তারা কখনোই তাওয়াফ দ্বারা কাবার পুজা করে না। মুসলিমরা এমনকি কাবার মধ্যে ঢুকেও নামাজ আদায় করে। আবার প্রাক ইসলামী যুগে কাবার উপর দাড়িয়েও আজান দেয়া হত। তাহলে চিন্তা করুন যার পুজা করছে তাকে কি কেউ নিজের পায়ের নিচে রাখে ? যদি মুসলিমরা কাবার পুজা করত তবে কাবার উপর পা দিয়ে উঠে দাড়াতো ? হিন্দুরা কি পারবে তাদের মুর্তির মাথায় পা দিয়ে দাড়াতে? তাই হিন্দুদের এসব কোন যুক্তিই ধোপে টিকে না। হিন্দুদের যুক্তিঃ মুসলিমরা হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেয়, আর এটিও মুর্তি পুজার সদৃশ। যৌক্তিকতা খন্ডনঃ ইসলাম মতে কাবার পাথরটি দিক নির্দেশনের জন্য আল্লাহ আদম আঃ কে প্রেরন করেছিলেন স্বর্গ হতে। অর্থাৎ পাথরটি ইহজাগতিক কোন পাথর নয়। আর মিরাকলের বিষয় হচ্ছে, বিজ্ঞানীরাও গবেষনা করে দেখেছেন যে কাবার এই পাথরটি আসলে পৃথিবির কোন পাথর নয়, বরং এটি উল্কার মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা।আর্কিওলজিষ্ট Paul Partsch গবেষনা করে এমনোটাই ব্যাখা দিয়েছেন। বিস্তারিত জানতে উইকিপিডিয়া হতে এর Scientific origins অংশটি পড়ুন, https://en.wikipedia.org/wiki/Black_Stone । তাই মুলত মুসলিমদের এই কালো পাথরটির চুমু দেয়াটা আর কিছুই নয়, বরং স্বর্গীয় একটি পদার্থকে স্পর্শ করার মাত্র। মুসলিমরা কখনোই এটিকে পুজা করে না। আর চুমু দেয়া মানেই কি পুজা? চুমু দেয়া কখনোই প্রতিমা পুজা হতে পারে? কখনো কি দেখেছেন কোন হিন্দুদের মন্দিরে গিয়ে দেবীদের চুমাচুমি শুরু করতে ? তাহলে এধরনের বক্তব্য তারা কিভাবে দেয়? মানুষ তো ভালোবেসে শিশুকেও চুমু দেয়, তারমানে কি শিশুটির পুজা করে? হিন্দুদের যুক্তিঃ হজ্জের সময় মুসলিমরা সবাই সাদা কাপড় পড়ে এটাও প্যাগান সংস্কৃতির সাথে মিলে। যৌক্তিকতা খন্ডনঃ আমি আসলে জানি না, সাদা কাপড় পড়া কোথাকার প্যাগান সংস্কৃতি তবে বলি, হজ্জ্বের সময় সাদা কাপড় পড়া হয় যাতে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ না থাকে সেখানে। মানুষ অপর একজন মানুষকে আলাদা করে ফেলে তার পোশাক আসাক দেখে। পোশাক দেখেই আমরা বলতে পারি কে গরীব কে ধনি, কে আফ্রিকান কে ইউরোপিয়ান। কিন্ত মানুষে মানুষে এই ভেদাভেদ যাতে না থাকে এজন্যই হজ্জের সময় সবাই সাদা কাপড় পড়ে। কোন প্যাগান সংস্কৃতিতে মানব সমতার এরকম দর্শন আছে কিনা আমার জানা নেই। হিন্দুদের যুক্তিঃ মক্কায় মুসলিমরা শয়তানকে পাথর মারে প্রতীক কল্পনা করে। আর এটাও মুর্তি পুজা সদৃশ। যৌক্তিকতা খন্ডনঃ ইসলামে একমাত্র আল্লাহ তালার সাথে কোন প্রকার শরীক করতে নিষেধ করা আছে এবং তার মুর্তি, প্রতীক বা কোন কিছুর সহিত তুলনা করতে নিষেধ করা আছে। কিন্তু এই নিয়ম শয়তানের জন্য নয়। ইসলাম প্রতীকি কর্মে অবিশ্বাসী নয় বরং শুধু সৃষ্টার প্রতীক তৈরিতে অবিশ্বাসী। আর একিসাথে পুজা আর পাথর মারা এক কিভাবে হল ? এটি তো সম্পুর্ন বিপরীত দুটি বিষয় ? তাই মক্কায় শয়তানকে পাথর মারা কোনভাবেই মুর্তি পুজার সাথে মেলে না। পরিশেষে বলব যারা শুধু এই জাতীয় যুক্তি প্রদান করে তারা আসলে কখনো সত্য জানার চেষ্টা করেনা বোঝার চেষ্টাও করে না। তারা নিজেরাই নিজেদের গোমরাহী করে। সত্য তাদের ধরাছোয়ার অনেক বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে এবং নিজেরা অজ্ঞতার অন্ধাকারে নিমজ্জিত হয়।

মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭

অশ্বমেধ যজ্ঞ শঙ্কা সমাধান, নাকি শঙ্কা বৃদ্ধি ?

উগ্রবাদি হিন্দু ওয়েবসাইট “অগ্নিবীর” আমার লেখা নোট অশ্বমেধ যজ্ঞ কে রিফিউট করার হাস্যকর চেষ্টা করেছে। নোটের শুরুতেই সনাতনী হিন্দু অর্থাৎ যারা আর্য সমাজের না তাদের প্রতি অগ্নিবীরের খোটাটা নজরে আসল। উগ্রবাদীর বক্তব্য ছিল আমার পোষ্ট এর জবাব অন্য সনাতনীরা কেন দিচ্ছে না ? মূলত সনাতনী অন্য ভাইয়েরা খুব ভাল করেই শাস্ত্রের জ্ঞান রাখে, তাই আমি যখন পয়েন্ট বাই পয়েন্ট শাস্ত্র থেকে রেফারেন্স দিয়েছি তারা এটা মেনে নিয়েছে। কারন এরা অগ্নিবীরর মত শাস্ত্রবিমুখ নয়। আর অশ্বমেধযজ্ঞ নিয়ে ফানাটিক সাইট অগ্নিবীরের লোকেরা যে পুর্বের পোষ্টে তুমুল মিথ্যাচার করেছে তা আমি পুর্বের নোটে প্রমান করেছি। যাক গে উগ্রবাদি মিথ্যাবাদীর আমাকে রিফিউট করা নোটের পয়েন্ট গুলো পর্যবেক্ষন করা যাক।

উগ্রবাদি অগ্নিবীর লেখে,
মূর্খ জিহাদি লিখেছে, “তিনি মুলত শাস্ত্রীয় বচনের বিরুদ্ধে গিয়েই তিনি বেদের অনুবাদ হতে অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছেন।” হাহাহা, মহর্ষি নাকি বেদের অনুবাদ থেকেই অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছে। এটা কি করে সম্ভব? ঋগবেদ ১/১৬২-১৬৩ এবং যজুর্বেদ ২২-২৫তম অধ্যায় অশ্বমেধ প্রকরণ নামে পরিচিত। মহর্ষি অশ্বমেধ প্রকরণ তো দূরে থাক একটি মন্ত্রেরও অর্থ বাদ দেন নি। )
আমার জবাবঃ
কথার একটি সামান্য ভুলকে এদের তিলকে তাল বানানোর কোন জুড়ি নেই। আমি বলেছিলাম “তিনি মুলত শাস্ত্রীয় বচনের বিরুদ্ধে গিয়েই তিনি বেদের অনুবাদ হতে অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছেন।” এখানে অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছেন বলতে বুঝিয়েছি সেই রানীকে ঘোড়ার সাথে শয়ন , ঘোড়া হত্যা, ও তারপর ঘোড়ার লিংগ মর্দনকে। এটি না বোঝার কিছু নেই। কারন প্রথম লাইনেই আমি লিখেছ, “স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি কোন শাস্ত্রীয় বচনের দ্বারা কারো অনুবাদকে বাদ দেয় নি।” তাই এখানে আমার মুল বক্তব্য না বোঝার কিছু নেই।
উগ্রবাদির লেখাঃ
বরং তিনি (স্বামী দয়ানন্দ) অশ্বমেধ প্রকরণের যথার্থ আধ্যাত্মিক অনুবাদ করেছেন যার প্রশংসায় পঞ্চমুখ গায়ত্রী পরিবারের পণ্ডিত রাম শর্মা, পণ্ডিত ভগবতী শর্মা, অরবিন্দ আশ্রম এবং স্বয়ং ঋষি অরবিন্দ। (দ্রষ্টব্য: যজুর্বেদ হিন্দি অনুবাদ, ভূমিকা পৃষ্ঠা ৬-১৩, গায়ত্রী পরিবার এবং ঋষি অরবিন্দ লিখিত “ Dayananda and Vedas”
আমার জবাবঃ
মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে অগ্নিবীর যাদের নাম বলল আমি যদি তাদের বেদ অনুবাদ অগ্নিবীরকে এনে দেই, অগ্নিবির কি তা মানবে ? যেমন পন্ডিত রাম শর্মা যিনি গায়েত্রী পরিবারের তার করা বেদ এর অনুবাদে কিন্ত স্পষ্টভাবে পশু বলির কথা আছে ? এখন ফানাটিক অগ্নিবার কি তা মানবে ?
আর অগ্নিবীরের কাছে প্রশ্ন রাম শর্মা বা অরবিন্দ বড় বৈদিক পন্ডিত নাকি স্বামী বিবেকানন্দ ? যে ম্যাক্স মুলার ও গ্রিফিন্থএর অনুবাদকে অগ্নিবীর তুচ্ছতাচ্ছুল্য করে আসুন দেখি তাদের অনুবাদ প্রসংগে স্বামী বিবেকানন্দ কি বলেছেন,
প্রথমেই আচার্য সায়ন যার অনুবাদও ফ্যানাটিক অগ্নিবীর মানে না তার প্রসংগে স্বামীজি কি বলেছেন, তা দেখি,
Sometimes while explaining the arguments of Sayana to establish the eternity of the Vedas, Swamiji was praising very highly the commentator’s wonderful ingenuity; sometimes again while arguing out the deeper significance of the doctrine, he was putting forward a difference in view and indulging in an innocent squib at Sayana.
ম্যাক্স মুলার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের বক্তব্যঃ
“do you know, my impression is that it is Sayana who is born again as Max Müller to revive his own commentary on the Vedas? “
তিনি আরো বলেন,
after I had seen Max Müller. Even here in this country, you don’t find a scholar so persevering, and so firmly grounded in the Vedas and the Vedanta.
[ Complete work of Swami Vivekananda, vol 6]

সরাসরি পড়ুন,
http://www.ramakrishnavivekananda.info/vivekananda/volume_6/conversations_and_dialogues/ix_sharat_chakravarty.htm
ম্যাক্স মুলার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের এরকম বক্তব্যের পরো কিভাবে অনলাইন স্বামীজী অগ্নিবীর ম্যাক্স মুলারকে গালি দেয় ? এইসব ছালহীন অনলাইন উগ্র হিন্দুরা কি বেদ স্বামী বিবেকানন্দের থেকেও বেশী বুঝে ?
এরপর অগ্নিবীর “অধ্বর” শব্দের অর্থ চন্দ্রশেখর উপাধ্যায় নামক একজন লেখকের বই বৈদিক শব্দগ্রন্থ থেকে দেখানোর চেষ্টা করল যা হাস্যকর ছাড়া আরকি ? একটি শব্দের মুলত অনেক অর্থ থাকতে পারে। এক্ষত্রে সঠিক অর্থটি বাছাই করা হবে অবশ্যই প্রাসংগিক শাস্ত্র হতে। আর আমি যযুরবেদের প্রাসংগিক শাস্ত্র ও শাখা হচ্ছে শতপথ ব্রাক্ষন যাকে বৈদিক যজ্ঞের ব্যাখা বলা হয়, সেখান থেকে অধ্বর এর অর্থ দেখালাম তবুও ফানাটিকরা মানছে না। এদেরকে আর কি বলা যায় ? শতপথ ব্রাক্ষনের ১/৪/১/৪০ এ, এখানে বলা আছে, যজ্ঞের সময় যজ্ঞকারী ব্যাক্তি ক্ষতিসাধিত হতে পারে না। এজন্যই এর নাম অধ্বর, এখানে পশু হত্যা হবে না এই সেন্সে অধ্বর এমন কোন প্রকারের কথা নাই কারন বেদ খুব স্পষ্টভাবে যজ্ঞে পশু হত্যার বিধান দিয়েছে। যা শুধু আর্য সমাজীরা ছাড়া সকল স্কলাররাই মানে। যেমন অগ্নিবীর ফ্যানাটিক উপরে যে চারজন বেদ স্কলারদের নাম বল তাদের থেকেই একটা প্রমান দিচ্ছি, যেমন গায়েত্রী পরিবারর শ্রীরাম শর্মা , দেখুন তিনি ঋগ্বেদ ১০/২৭/১৭ এ কি অনুবাদ করেছেন,
Sri ram sharma
“বুড়ো নে বলশালী মেষকো পরিপাক কিয়া”
এখানে मेष (মেষ)=ভেড়া
पचत(পাচত)= রান্না
দেখুন গায়েত্রী পরিবারের অনুবাদ এবং বেদের মুল সংস্কৃততেও একেবারে স্পষ্ট আছে। এরপরো অগ্নিবীর নামধারীরা এরকম মিথ্যাচার করে কিভাবে যে যজ্ঞে পশু বলি নাই ?
এরপর অগ্নিবীর জোকার যা করল তা হচ্ছে সবচেয়ে হাস্যকর। সে মহাভারত দিয়ে প্রমান দিতে চাইল যে যজ্ঞে পশু বলি নাকি মানা। চিন্তা করুন যেখানে আমি মূল শাস্ত্র ধরে ধরে প্রমান দিচ্ছি সেখানে সে প্রমান দিচ্ছে মহাভারত বা উপন্যাস, গাথা থেকে ? আবার রেফারেন্স দেয়ার পরে শেষে লিখল,
“তাই এটা সহজেই অনুমান করা যায় যেসব গ্রন্থে যজ্ঞে পশুবলির আয়োজন রয়েছে সে অংশ প্রক্ষিপ্ত বা বিকৃত”
তারমানে কি ? অগ্নিবীরের কাছে প্রধান গ্রন্থ মহাভারত, যে সে এর আধারে সব গ্রন্থকে প্রক্ষিপ্ত বলল ? তাহলে উপরে যে বেদ থেকে যে পশু বলির রেফারেন্স দিলাম তারমানে বেদও প্রক্ষিপ্ত ? :O 
যতদুর জানি আর্য সমাজীরা মহাভারত এর মত রুপকথা মানে না। তাহলে অগ্নিবীর এটা থেকে কেন দিল রেফারেন্স ? এটা পিক এন্ড চুজের কি সর্বোচ্চ সীমা হয়ে গেল না ? এখন যদি আমি এই মহাভারত থেকেই প্রমান দেই যে যজ্ঞে পশু বলির কথাও আছে, তাহলে এই ফ্যানাটিক কি করবে ? যেমন
মহাভারত খন্ড ৩, বনপর্ব, নীচে কিশোরী মোহোন গাংগুলীর অনুবাদ
mahavarat 3
আরো দেখুন গরু উতসর্গের কথাও আছে একি বন পর্বে,
mahavarata khnda 3 bana parba
আর যে অশ্বমেধযজ্ঞ নিয়ে কথা হচ্ছে, অগ্নিবীর ফ্যানাটিক কি জানে না যে মহাভারতে এই অশ্বমেধ যজ্ঞের কথাও আছে যেখানে ঘোড়াকে কেটে কুটে খাওয়ার কথাও আছে ? মহাভারত অশ্বমেধ পর্ব, সেকশন ৮৯, অনুবাদ কিশোরী মোহন গাংগুলী
Aswamedha
অগ্নিবীর নামক উগ্র হিন্দুরা যে মিথ্যাচারের বেসাতী খুলেছে অনলাইনে হিন্দুদের ধোকা দিতে, এ ব্যাপারে কি কারো কোন সন্দেহ আছে ?
এরপর অগ্নিবীর আমার দেয়া বেদের সংস্কৃত মুল অংশকে রিফিউট করার চেষ্টা করল, আসুন দেখি সে কি করল।
সে এখানে রেতোধা কে লিখল পরাক্রমশালী এবং রেতোকে লিখল পরাক্রম।
আমি মুল সংস্কৃত ডিকশানারী থেকে স্ক্রীনশট দিচ্ছি। রেতো মানে কি ?
Dictionary
[The Student’s English-Sanskrit Dictionary, page 384]
অর্থাৎ রেতো মানে হচ্ছে সিমেন বা বীর্য, রেতোধা মানে হচ্ছে গর্ভাধারন আর দধাতু মানে ধারন করা। অর্থাৎ এই মন্ত্রে খুব স্পষ্টভাবে বলা বীর্য ধারনপুর্বক গর্ভধারন এর কথা। কার বীর্য ? ঘোড়ার বীর্য । এরপুর্বে লাইনেই আছে বৃষ বাজী। এখানে অগ্নিবীর বৃষা কে বলবান অনুবাদ করলেও বাজীকে ঘোড়া অনুবাদ না করে , করেছে বীরপুরুষ। অথচ বাজী অর্থ যে ঘোড়া এ কথা কে না জানে ? ক্লাস ফাইভের ব্যাকারন বইটা চেক করলেও পাওয়া যাবে।
এরপর অগ্নিবীর ইনিয়ে বিনিয়ে বলল বৈদিক শব্দ বোঝা কত কঠিন তা । কিন্তু সে কোন বৈদিক শাস্ত্র হতে রেত এর অর্থের রেফারেন্স দেখালো না।
আসুন দেখি তৈতরীয় সংহিতা বা কৃষ্ণা যযুরবেদ এ কি আছে,
(উল্লেখ্য কৃষ্ণা যযুরবেদ হচ্ছে যযুরবেদ এরই আরেক অংশ যেটা আর্য সমাজীরা মানে না। আবার দক্ষিন ভারতের ব্রাক্ষনরা যযুরবেদ হিসেবে এটাকেই মানে। এখানে বেদ এর অথেনটিসিটি নিয়ে খোদ হিন্দুদের মধ্যেই বিভিন্ন মত প্রতীয়মান)
কৃষ্ণা যযুরবেদ ৭/৪/১৯ এ আছে,আমি মূল সংস্কৃত দিচ্ছি ও নীচে স্ক্রীনশট
সংস্কৃত বিশেষজ্ঞরাই যাচাই করুক,
krishna yajurveda
এবার উগ্রবাদি লিখল,
গোবধ যেমন বেদে নিষিদ্ধ তেমনি ঘোড়া হত্যা করাও বেদে নিষিদ্ধ। অথর্ববেদের ৮/৩/১৫ তে বলা আছে,”
oooooooooooooo
আমার জবাবঃ
এই ফ্যানাটিক বোধহয় জীবনেও নিজের ধর্মগ্রন্থ ঠিকমত পড়ে নাই। অথবা পড়েও মিথ্যাচার করছে। সে যে অথর্ববেদের ৮/৩/১৫ এর রেফারেন্স দিল যে এখানে ঘোড়ার মাংস ও গরুর মাংস খাওয়া নিশেধ সে কি এই সুক্তের কনটেক্সট আদৌ পড়েছে ? এই শুক্তে বহিঃশত্রু হতে দেশ আক্রমনের প্রেক্ষিতে অগ্নির কাছ প্রার্থনা করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে মন্ত্রগুলা পড়লেই তা দেখা যায়, যেমন ৭,৮,৯,১০ ও ১৪ নাম্বার মন্ত্রগুলা দেখলেই তা পরিস্কার হয়। ফ্যানাটিক যে ১৫ নাম্বার মন্ত্র দিল, ঠিক সেখানেই খেয়াল করুন স্পষ্টভাবে গরুর দুধ গ্রহনকারীর কথাও আছে এবং তাকেও একি শাস্তি দেয়ার কথা আছে। তার মানে কি গরুর দুধ খাওয়াও বেদের নিষেধ ? এটি আরো স্পষ্ট আছে ১৭ নাম্বার মন্ত্রে, এখানে বলা গরুর দুধ যে খায় তার বুকে বর্শা মারার কথা।
ppppppppppppppp
pppppppppp
এখন এই মন্ত্রগুলোর অর্থ সার্বজনীনভাবে নিলে ফানাটিক কি বলবে যে বেদ অনুসারে দুধ খাওয়াও মানা ? তাহলে গরুকে মায়ের আসনে বসায় তারা যে  যুক্তিত্‌  যে , শিশু গরুর দুধ খায় এজন্য গরু মা এর মত, সেই যুক্তিই তো এখানেই ভুপাতিত হয়ে যায়।কারন সেক্ষেত্রে তো শিশু তো দুধই খেতে পারবে না এবং প্রত্যেক শিশু ও তাদের বাবা মা বেদ অনুসারে খারাপ দুশ্চরিত্র ও হত্যার যোগ্য বলে গন্য হবে। এখন বেদ সম্পর্কে অজ্ঞ এসব ফানাটিক হিন্দুরা কি বলবে ?
উগ্রবাদি আবার লিখল, যেখানে আমি বেদ থেকে পুরান মানার কথা বলেছি,
“ব্রাহ্মণ গ্রন্থেরই অপর নাম ইতিহাস, পুরাণ, কল্প, গাথা ও নারাশংসী।” অর্থাৎ বেদে উল্লিখিত পুরাণ হচ্ছে ব্রাক্ষণ গ্রন্থ।
এখন তাহলে সেই বেদের প্রেসক্রাইব করা গ্রন্থই অর্থাৎ ব্রাক্ষন থেকেই যখন আমি রেফারেন্স দিলাম, সে লিখল,
যেখানে পশুহত্যাই যজ্ঞের মূলনীতি বিরুদ্ধ সেখানে শতপথের এই বক্তব্যকে প্রক্ষীপ্ত হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। 
চিন্তা করুন তাহলে সে এবার খোদ বেদের প্রেস্ক্রাইব করা গ্রন্থকেই মানতে অস্বীকার করছে। আর অজস্র রেফারেন্স দিয়েই আমি দেখিয়েছি যে যজ্ঞে বেদ অনুসারে পশূ হত্যার বিধান আছে। উপরে আচার্য শ্রী রাম শর্মার বেদ অনুবাদ থেকেও দেখিয়েছি। এরপরো এসব ফ্যানাটিকরা মানবে না।
এরপর ফ্যানাটিক লিখল,
তারপরেও হরিবংশ যে প্রচলিত ১৮ পুরাণ, ১৮ উপ পুরাণের অন্তর্গত নয় তা জিহাদীর গুরু মুসাফিক তাকে জানায় নি।
অগ্নিবীরকে জিজ্ঞেস করা হল আমার পুরা নোটের কোথায় আমি লিখেছি হরিবংশ পুরান ১৮ পুরানের অন্তর্গত ? সে একে উপপুরাণ বলে এর গুরুত্ত হ্রাস করার চেষ্টা করছে। অথচ উপপুরানো হিন্দু ধর্মালম্বিদের কাছে সমানই গুরুত্তপুর্ন। যেমন অন্তিম অবতারের বর্ননা দেয়া কল্কি পুরান হচ্ছে একটি উপপুরান। ইস্কনী, বৈষ্ণবীদের কাছে প্রভুত সমাদৃত নৃসংহপুরানও হচ্ছে একটি উপপুরাণ।
এরপর রামায়ন থেকে যেখানে অশ্বমেধ যজ্ঞের বর্ননা দিলাম সেখানে লিখল, যে সকল রামায়ন গবেষকই এই মত দিয়েছেন বাল কান্ড ও উত্তর কান্ড রামায়নে প্রক্ষিপ্ত। অথচ সে এখন রামায়ন গবেষকেরও হাওয়ালা দিল না। এই উগ্রবীরদের কাছে নিজেদের মতের বিরুদ্ধে শাস্ত্রের কোন কথা গেলেই তা প্রক্ষিপ্ত। এখন উপরে তো মহাভারত থেকেও দিলাম, এখন সেটাকেও এখন নিক্ষিপ্ত করবে।
আর অগ্নিবীরকে যদি আমি এবার ৬ বেদাংগের একটি হতে অশ্বমেধ যজ্ঞের বর্ননা দেই তাহলে এই ফ্যানাটিক কি করবে ?
Apastamba Srauta Sutra যেটি ৬ বেদাংগের একটি “কল্প” এর অংশ, সেখানেও অশ্বমেধ এর এরকম বর্ননা আছে,
২০/১৭/১২-১৮
the Chief Queen recites some Slokas (mentioned in Yajurved) and then all the wives of the king circumambulates the horse, fan it, tie their hairs on the right side of their head. Ramayana tells us that queen Kaushalya the mother of Hindu god Ram had spent a night with the horse.

সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

হিন্দু ধর্মে শিশু বিবাহ

ফেসবুকিয় দাদারা নবিজির বিবাহ নিয়ে অত্যন্ত বিকৃত প্রপাগন্ডা ছড়িয়ে বেরায়। তারা হরহামেশাই আয়শা রাঃ এর বিয়ে নিয়ে মুসলিমদের খোটা দেয়। তাই আসুন দেখা যাক, তাদের অবতার, ভগবান ও দেবতারা কি করেছেন, শ্রী রাম বিয়ে করেন মাত্র ৬ বছর বয়স্ক সীতাকে। হ্যা ঠিকই শুনেছেন। রাম হিঁদুদের কারো কাছে ভগবান, কারো কাছে মহাপুরুষ। আর সীতা হচ্ছে হিঁদুদের নিকট সবথেকে আদর্শ নারী চরিত্র। কিন্তু হিন্দুরা অনেকেই জানে না কিংবা যারা জানে তারা জানতে দেয় না যে সীতার বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর যখন রাম তাকে বিবাহ করে। ৬ বছর বয়স থেকেই সে রামের সাথে সংসার শুরু করে রাজা দশরথের প্রাসাদে। রেফারেন্স, বাল্মিকি রামায়ন, অরন্য খন্ড, ৩.৪৭.৩-১০, বলা আছে, সীতার বয়স ছিল ১৮ বছর যখন সে ভগবান রামের সহিত বনবাসে গমন করে। বনবাসের পুর্বে তিনি স্বামী রাম সহিত ১২ বছর কাটিয়েছেন রাজা দশরথের প্রাসাদে। এখানে যদি আমরা সিম্পল অংক করি, তবে দেখতে পাব বিবাহের সময় সীতার বয়স, ১৮-১২= ৬ বছর। নীচের লিংক থেকে বিস্তারিত পড়ে ও অংক কষে নিজেরাই দেখুন। http://www.valmikiramayan.net/utf8/... রামের সাথে বিয়ের সময় সীতার বয়স ৬ বছর ছিল এটি স্পষ্টভাবে পুরানেও উল্লখে আছে। রেফারেন্স, স্কন্দ পুরাণ ৩.২.৩০.৮-৯, বলা আছে, রাম বিয়ে করেন রাজা মিথিলার ৬ বছর বয়সী সুন্দরী কন্যা, সীতাকে। এবার হিন্দু দাদারা রামের ব্যপারে কি বলবে ? (নীচে স্ক্রীনশট)



Skanda Purana, Translated By: Sri Desiraju Hanumantha Rao

কৃষ্ণ বিয়ে করেন ৮ বছর বয়স্ক রুক্মনীকে। হ্যা ঠিকই শুনেছেন। হিঁদুদের সর্বাধিক জনপ্রিয় অবতার ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, যখন রুকমনীকে বিয়ে করেন তখন রুকমনীর বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। রেফারেন্স, স্কন্দ পুরাণ, ৫.৩.১৪২.৮-৭৯,








Screenshot 1







Screenshot 2
আর সেই শিশু রুকমনীর সাথেই শ্রী কৃষ্ণের যৌনাচার, রেফারেন্স, ব্রাক্ষ বৈবর্ত পুরান, কৃষ্ণ জন্ম খন্ড, ১১২,১-১০, "কৃষ্ণ তাহার স্ত্রী রুকমনীর পানে বিমুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছেন, যে কিনা এখনো পরিপুর্নভাবে বেড়ে ওঠে নি এবং যার বয়োসন্ধি শুরু হয়েছে মাত্র এবং যৌনতা সম্বন্ধে এখনো যার কোন ধারনাই গড়ে ওঠে নি । এমন মুহুর্তে কৃষ্ণ তার সহিত যৌনক্রিড়া শুরু করে দিল এবং রুকমনী জ্ঞান হারিয়ে ফেলল " নীচে স্ক্রীনশট








Brahma Vaivarta Purana, Translated by: T. R Rajendra Nath Sen
শিব বিয়ে করে ৮ বছর বয়স্ক পার্বতীকে। হ্যা, অবাক হলেও এটাই সত্য, শিব পার্বতীকে অতি অল্প বয়সেই বিবাহ করে হিমাচলে নিয়ে এসে সংসার শুরু করে। পার্বতীর বয়স ছিল তখন ৮ বছর। রেফারেন্স, শিবপুরাণ, রুদ্রসংহিতা, পার্বতীখন্ড, ৩.১১.১-২,

Shiva Purana, Translated by: J. L. Shastri

এখানে Himavat হচ্ছে পার্বতীর আরেক নাম। হিন্দু দাদাদের কি কিছু বলার আছে তাদের প্রধান প্রধান অবতারদের শিশু বিবাহ নিয়ে ? নোটটির দ্বিতীয় পর্ব ও বিস্তারিত আরো রেফারেন্স http://sottosomagoto.blogspot.com/2017/04/blog-post.html

মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭

জাকির নায়েক এর সাথে ডিবেট নিয়ে হিন্দুদের মিথ্যাচারঃ



ফেসবুকে হিন্দুদের নিকট থেকে সবচেয়ে বেশী বিদ্বেষ পাওয়া জীবিত ব্যাক্তি হয়ত জাকির নায়ক।তারা জাকির নায়েককে নিয়ে বহু মিথ্যাচার করে। তাদের করা মিথ্যাচারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মহেন্দ্রপাল নামের একজন অখ্যাত ব্যাক্তির নাম জাকির নায়েকের নামের সাথে জুড়ে দেয়া। ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখা যায় Guru of zakir naik defeated by pandit mahendra pal arya নামে। তারা বলে আর্য সমাজী মহেন্দ্রপাল নাকি  জাকির নায়েককে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে এবং জাকির নায়েক তার ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়। আসুন দেখা যাক তাদের মিথ্যাচারের পোষ্টমর্টেম।

প্রথম মিথ্যাচার 
মহেন্দ্রপাল জাকির নায়েককে চ্যালেঞ্জ করেছে আর জাকির নায়েক নাকি তার ভয়ে পালিয়ে বেড়ান।

জবাবঃ
হিন্দুরা যতগুলো মিথ্যাচার করে তার মধ্যে এটা তার মধ্যে সবথেকে নিকৃষ্ট।
প্রথমে দেখা যাক মহেন্দ্র পাল কে? মহেন্দ্রপালের নিজ ভাষ্যমতে উনি ছিলেন একজন ওহাবী মৌলভী, তিরিশ বছর আগে ইসলাম ছেড়ে আরিয়া সমাজে যোগ দেন অথচ ইসলামে ওহাবীবাদের কোন স্থান নেই। তাই উনি কখনই একজন সত্যিকারের মুসলিম ছিলেন না কোনকালে।আর একজন প্রাক্তন ওহাবী মৌলভী হবার সুবাদে সে কোরান তেলাওয়াত করে নিজেকে জ্ঞানী বানানোর চেষ্টা করে।

এবার আসি আসল ব্যাপারে। হিন্দুরা যা প্রচার করে আসল ঘটনা সম্পুর্ন উলটো।
মূলত জাকির নায়েকই ২০০৪ সালে মহারাষ্ট্রে একটি প্রগ্রামে মহেন্দ্রপাল সহ আর্য সমাজের প্রধান স্কলারদের পাবলিক ডিবেটের আমন্ত্রন জানায়। কিন্তু এই মহেন্দ্রপাল তখন ভয় পেয়ে জাকির নায়েকের সামনে যায় নি।জাকির নায়কের সামনে না গিয়ে সে চোরের মত ইমেইলে তাকে প্রশ্ন করেছে। কি হাস্যকর।
শুনুন তার নিজের মুখেই,


ভিডিওটি দেখতে সমস্যা হলে ইউটিউব লিংক এ এখানে দেখুন https://www.youtube.com


মূল ভিডিও লিংকঃ https://www.youtube.com/watch?v=tYor776Iqug


আর কেনই বা সে যাবে ? জাকির নায়েকের সাথে তর্ক করার মত জ্ঞান কি তার আছে ?  সেটা সে নিজেও জানে।
মুলত জাকির নায়কের সামনে দাড়ানোর সাহস কোন হিন্দু খ্রিষ্টান বা অন্যান্য ধর্মের স্কলারদের নেই, সেটা মহেন্দ্রপালই আবার প্রমান করল।    
বর্তমান সময় হচ্ছে এরকম যে নিজের নাম যদি বিখ্যাত ব্যাক্তিদের নামের সাথে জুড়ে দেয়া যায়, তবে সেও বিখ্যাত হয়ে যায়।আর এই অখ্যাত মহেন্দ্র পাল ফেমাস হবার আশায় সেটাই করছে। সারাদিন জাকির নায়েক জাকির নায়েক করছে, কিন্তু জাকির নায়েক সরাসরি চ্যালেঞ্জ দিলে তার সামনে যেতে ভয় পাচ্ছে, আবার উলটো প্রচার করছে জাকির নায়েক নাকি তার সামনে আসছে না। হিন্দুদের চরম দ্বিমুখী মিথ্যাচার।


দ্বিতীয় মিথ্যাচারঃমহেন্দ্রপাল নাকি জাকির নায়েকের গুরু মুহাম্মদ তারিককে ডিবেটে হারিয়েছেন।

জবাবঃ

যারা জাকির নায়েক কে চেনে এবং তার জীবনি পড়েছে তারা এ খবর শুনে হাসতে হাসতে অক্কা পাবে , কারন জাকির নায়েকের গুরু হচ্ছেন প্রাক্তন শেখ আহমেদ দিদাত যা জাকির নায়েক তার বহু বক্ততায় স্বীকার করেছেন। কিন্তু এই গুরুর নাম তারা কোথায় পেল? এরকম কোন রেফারেন্স পাওয়া যায় না মহেন্দ্র পালের সাথে তর্ক করা এই মুহাম্মদ তারিক জাকির নায়েকের গুরু। এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর হতে পারে না।এই মুহাম্মদ তারিক হচ্ছেন ভারতের একটি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং IRF এর একজন সদস্য মাত্র। তিনি জীবনেও জাকির নায়েকের গুরু নন। আর যদি তর্কের খাতিরে মেনেও নেই যে তিনি জাকির নায়েকের গুরু তবে ইতিহাসে এটা প্রথম হবে যে , কেউ একজন গুরুকে হারিয়ে এখন তার চ্যালাকে চ্যালেন্জ করছে।মুলত এগুলো হাস্যকর কথা । আর হ্যা উক্ত ডিবেটে জাকির নায়েক তো ভাল, IRF এর ও কোন সংযোগ ছিল না। কারন উক্ত ডিবেট কখনই IRF এর পক্ষ থেকে হয় নি, বরং তারিক তার ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে উক্ত ডিবেটে অংশ নিয়েছিলেন।

তৃতীয় মিথ্যাচারঃ
ডিবেটে নাকি আব্দুল্লাহ তারিক পন্ডিতজীর কাছে হেরেছেন। 

জবাবঃ 
এবার ভিডিওটার প্রসংগে যাই, আপনারা কি কেউ সেই ভিডিওটা পুরো দেখেছেন। মূলত উক্ত ডিবেটে মোহাম্মদ তারিক মোটেই হারেন নি বরং অত্যন্ত সফলভাবে জিতেছিলেন।আর পন্ডিত মহেন্দ্র পাল অত্যন্ত অসহিষ্ণু মনোভাবের পরিচয় দিয়েছিলেন ।
তারিক পন্ডিতজীর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন ।
ডিবেটের বিষয় ছিল ইসলাম শান্তির ধর্ম কিন। কিন্তু মুহাম্মদ তারিক তার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পর পন্ডিতজী তাকে আর আটকাতে না পেরে টপিকের বাইরে সম্পুর্ন ভিন্ন বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন।তিনি আল্লাহর আরশ, মরিয়মের গর্ভে ঈশা আঃ এর জন্ম ইত্যাদি নিয়ে কথা শুরু করে।অতঃপর মডারেটর তাকে ওয়ার্নিং দেয় ।এরপর মুহাম্মদ তারেক বেদের কতিপয় ভয়াবহ সহিংশ্র শ্লোক পন্ডিতজীর সামনে তুলে ধরলে পন্ডিতজী বলেন ওখানে দুষ্টের দমনের কথা বলা আছে। অতঃপর তারিক পাল্টা রেফারেন্স দেন যে ওখানে মুলত যারা বেদকে অস্বীকার করে তাদের নিঃশংসভাবে হত্যার কথা বলা আছে। অতঃপর পন্ডিতজি এই বিষয়ে তেমন কিছু না বললে মডারেটরই এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন। ডিবেটের এক পর্যায়ে তারিক মহেন্দ্র পালের নির্বুদ্ধিতায় হেসে ফেলেন এবং তাকে তার একটি প্রশ্নের একটি চরম উত্তর দেন । ফলে তারিকের পক্ষে হাত তালি শুরু হয় কিন্তু তারিক সাথে সাথে হাত উঠিয়ে তাদেরকে থামিয়ে দেন। এবং অত্যন্ত শান্তভাবে নিজের বক্তব্যকে তুলে ধরতে থাকেন ।
মহেন্দ্রপালের ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটা নিজেরাই পুরোটা দেখুন,
 https://www.youtube.com/watch?v=_246Zd5xeHE

আর মহেন্দ্রপালের ইসলামের ব্যাপারে করা প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে বলি, এগুলোর জবাব বহু আগেই মুসলিমরা অনলাইনে দিয়ে রেখেছে।  সবগুলোর জবাব এখানে,
https://www.youtube.com/watch?v=wp7pRCzgTVM

মহেন্দ্রপালের ইসলাম নিয়ে ধোকাবাজি দেখুন, https://www.youtube.com/watch?v=psl4hTaHozc

সাধারন একটা মুসলিম ছেলে মহেন্দ্রপালকে সরাসরি ফোনে চ্যালেঞ্জ দিলেও দেখুন সে কিভাবে পালাচ্ছে, https://www.youtube.com/watch?v=balqh1rsiZg&list=PLlrPMRXOcCBCM9UdkytPsdjAcr_AT4fbK

যাই হোক, পরিশেষে বলব ইসলাম বিদ্বেষীদের মিথ্যাচার থেকে সচেতন থাকুন।

শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭

হিন্দু ধর্মে স্বর্গবাসীর জন্য হুর ও কুমারী নারী


হিন্দুরা কথায় কথায় মুসলিমদের বেহেশতে হুর নিয়ে খোটা দেয়, বলে মুসলিমরা তো বেহেশতে ৭২ টা  হুর পাবে। যদিও কোরানে কোথাও বলা নেই ৭২ হুর দেয়া হবে। শুধু বলা আছে, হুর দেয়া হবে, হুর মানে সংগী, আর মানুষ সংগী ছাড়া থাকতে পারে না। একিসাথে হুর শব্দটা স্ত্রী লিংগ ও পুলিংগ উভয়ই বুঝায়। তাই স্বর্গবাসীর একাকিত্ব দূর করতে সেখানে থাকবে তাদের জন্য সংগী।
কিন্তু সনাতনী হিন্দুরা এই বিষয়টি নিয়ে মুসলিমদের সবচেয়ে খোটা দেয়, অথচ এইসব দাদারা জানে না যে তাদের ধর্মগ্রন্থে ১টা, ২টা কিংবা ৭২ টা না, বরং স্বর্গে সহস্র বা হাজার হুর, অপ্সরী ও কুমারী নারী দেয়ার কথা বলা আছে।

অথর্ববেদ ৪/৩৪/২, বলা আছে, 

"নাইশাম শিশ্নামং প্রা দাহাতি যাতাভেদাহ,
স্বর্গলোকে বহু স্ত্রীনামেশাম"
অর্থঃ অগ্নি (যাহারা ধার্মিক) তাহাদের 
লিংগ (শিশ্না) পোড়াবে না এবং স্বর্গে তাহারা পাবে বহু স্ত্রী।

নীচে আর্য সমাজের আচার্য্য বিদ্যানাথ শাস্ত্রীর অনুবাদ, 



যদিও বিদ্যানাথ শাস্ত্রী অনুবাদে লিখেছে One for each one as his wife কিন্ত মুল সংস্কৃততে এরকম কোন কিছুই নেই। তিনি হিন্দু ধর্মে একক বিবাহ প্রতিষ্টায় বাড়তি কথা যুক্ত করেছেন, স্বর্গালোকে বহুস্ত্রীনামেশং এর পরে আর কোন শব্দ নেই যা ঐ অর্থ নির্দেশ করে।
অন্য একটি অনুবাদ প্রদান করলেই ব্যাপারটা পরিস্কার হয়ে যাবে,
গায়ত্রী পরিবারের প্রতিষ্টাতা আচার্য শ্রীরাম শর্মা এর অনুবাদ লেখেন,
"অগ্নি উসকি উৎপাদক অংগকো নষ্ট নেহি করতা, স্বর্গমে উসকি বহুতছি স্ত্রী হ্যায়"
অর্থাৎ অগ্নি তাহার উৎপাদক অংগকে নষ্ট  করে না এবং স্বর্গে তাহার বহু স্ত্রী থাকে। 




মহাভারত শান্তিপর্বে বলা আছে, ১২/৯৮
"স্বর্গে হাজারো অপ্সরী তীব্রবেগে ছুটে যাবে, যুদ্ধে নিহত বীরের আত্নাকে আনার জন্য"
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি


মহাভারত, অনুশাসন পর্ব, ১৩/৭৩ এ বল আছে,
গোসম্পদের সেবার মাধ্যমে মানুষ স্বর্গে গমনের পর এক হাজার স্বর্গীয় কুমারী নারী পাবে, যাদের থাকবে আকর্ষনীয় কটিদেশ এবং থাকবে সুন্দর পোষাক ও গহনায় সুসজ্জিত।
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি

মহাভারত বনপর্ব, ৩/৪২ এ বলা আছে,
ব্রাক্ষন, ক্ষত্রিয় বৈশ্য, স্বর্গে গেলে তাদের সকল দুশ্চিন্তা দূর হবে এবং তারা স্বর্গবাসীর সহিত ক্রীড়া করবে।
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি




মহাভারত, অনুশাসন পর্ব,  ১৩/১০৬ এ বলা আছে,
যারা রোগে শোকে অবিচল, যজ্ঞে  আত্ননিয়োগের গুনাবলি অর্জন করে প্রতি পদে , তাহাদের জন্য  স্বর্গে শত অপ্সরা অসাধারন গুনাবলির সহিত অপেক্ষারত, তাহাদের সহিত ক্রিড়া করার জন্য।
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি


ব্রাক্ষ বৈবর্ত পুরাণ, কৃষ্ণজন্ম খন্ড, অধ্যায় ৫৯, শ্লোক ৭৭-১০৩ এ বলা আছে,
"উত্তম চরিত্রের লোক পবিত্র কর্ম সম্পাদন করিয়া স্বর্গে গমন করে, এবং সেখানে স্বর্গের কুমারী নারীদের সহিত দীর্ঘ সময় ব্যাপী স্বর্গীয় সুখ লাভ করে।"
অনুবাদঃ রাজেন্দ্রনাথ সেন। 




হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হতে এরকম আরো বহু রেফারেন্স প্রদান করা যাবে।










সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

রাম, কৃষ্ণ ও শীব ঠাকুরের কন্যাশীশু বিবাহ এবং হিন্দুদের মিথ্যাচার



আসলে আমার স্পষ্ট রেফারেন্স পুর্বক কিছু নোট যেগুলো অনলাইন উগ্র হিন্দুদের পর্দাফাস করে দেয়, সেগুলোকে খন্ডানোর প্রয়াসে অনলাইন হিন্দুরা ফেসবুকের কিছু কুটিল কিন্তু মুর্খ ও মিথ্যুক হিন্দুদের শরনাপন্ন হয় এবং তারা কোনরকম কিছু একটা জবাবমুলক নোট বা লেখা লিখে দেয়, আর অন্ধ হিন্দুরা সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। যদিও এসব লেখক হিন্দুরাও নীচু জাতের হয়ে থাকে এবং এদের শাস্ত্রীয় জ্ঞান নাই বললেই চলে।এরা এসব হাবিজাবি লিখে উগ্র হিন্দুদের কাছে বাহ বা পায়।কারন ফেসবুকের অন্ধ হিন্দুদের  ইটের টুকরা ধরিয়ে যদি বলা হয় এটা হীরা, ওটা ওরা চোখ বুঝে বিশ্বাস করে নেয়।  হিন্দুদের ইট দেখানো তেমনি এক কুটিল এবং মিথ্যুক হিন্দু হচ্ছে সমীর কুমার মন্ডোল। এই ব্যাটা এক বছর আগেও আমার সাথে ডিবেটে না পেরে আমাকে ব্লক দিয়েছিল। ব্যাটা এখনো আমাকে ব্লক দিয়ে রেখেছে ভয়ে। এ অনলাইন হিন্দুদের বাহবা পেতে এসব হাবিজাবি জবাবমুলক পোষ্ট লিখে থাকে। এর এইসব নোট নিয়ে অবশ্য সাধারন হিন্দুদের তেমন ফালাফাল করতে দেখা যায় না। তবে বিভিন্ন ফেক আইডী, যেমন গর্বিত হিন্দু, আর্য হিন্দু ইত্যাদি নামধারী আইডি, যেগুলো চালায় আসলে দাস শ্রেনীর স্কুল পড়ুয়া হিন্দু ছেলেপেলে,  তারাই এইসব নিয়ে কিছুটা ফাল পাড়ে।
ঠিক তেমনি কিছুদিন আগে স্পষ্ট রেফারেন্স পুর্বক হিন্দু ধর্মে শিশুবিবাহ নিয়ে একটা নোট লিখেছিলাম,
নোট লিংক হিন্দু ধর্মে শীশু বিবাহ
 সমীর নামক ভন্ড সেটা খন্ডানোর নাটক করেছে, আসুন দেখি তার মিথ্যাচার,
সে লেখে,
কতিপয় ফেসবুকিও মৌলবাদী মুসলমানরা নবী মুহাম্মাদ ও তার স্ত্রী আয়েশা বয়সের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকার জন্য, খুব লজ্জা বোধ করে! সম্ভবত নবী তখন প্রায় বুড়ো হওয়ার কাছাকাছি ৫৪ বছর এবং তার স্ত্রী আয়েশা ৬ বছরের শিশু যখন তাদের বিবাহ হয় এবং শারিরীক সম্পর্ক গড়ে ৯ vs ৫৪ বছর বয়সে। ( তথ্যসুত্র → Aisha the Child Wife of Muhammad)তবে কিছু কিছু ইসলামি আলেমরা এই বয়স নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে। তার সত্বেও মুসলিম প্রধান দেশ যেমন - সৌদি আরব, ইরাক, ইরান প্রভৃতি দেশে বহু আলেমরা এই নবীর সিদ্ধান্ত কে সহী হিসাবে মানে, এমন কি সেখানে অনেক মুসলমান আছে যারা নবীর এই পদাঙ্ক অনুসরণ করে।

আমার জবাবঃ
কোন কোণ মুসলিম রাসুলুল্লাহর সাথে আয়শা রাঃ এর বিয়ে নিয়ে লজ্জা বোধ করে সেটা আগে এই মুর্খ দেখাক। এই মুর্খ এরপর তথ্যসুত্র প্রদান করেছে Faithfreedom নামক ইসলাম বিদ্বেষী সাইট থেকে। এদের কাছে আসলে ইসলাম বিষয়ক তথ্য মানেই ইসলাম বিদ্বেষী সাইট। তা সেই সাইটের লেখাও তো ওর কথার সাথে মিলছে না। এই মিথ্যুক চন্ডাল লিখে, আয়শা রাঃ এর বিয়ে হয় ৬ বছর বয়সে আর শারিরীক সম্পর্ক হয় ৯ বছর বয়সে। কিন্তু উক্ত ইসলাম বিদ্বেষী যে সাইট রয়েছে সেখানেও ৯ বছরে শারীরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ নেই। বলা হয়েছে ৬ বছরে বিবাহ ও ৯ বছরে সে রাসুলুল্লাহর ঘরে আসেন। ঘরে আসা বলতেই ও সেক্স বুঝিয়ে ফেলেছে।
এই বয়স নিয়ে বিবাদে জড়ানো অস্বাভাবিক নয়, কারন সীরাত ও ঐতিহাসিক গ্রন্থ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে আয়শা রাঃ এর বিবাহ যখন হয় তখন তার বয়স ১৮ বছর এর কম ছিল না। যাক গে সেসব আলোচনা না করি।আর রাসুলুল্লাহর সাথে মা আয়শা রাঃ এর বিবাহ নিয়ে বিদ্বেষীদের মিথ্যাচারের জবাব জানতে এটা পড়ুন, রাসূল (সাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) কে নিয়ে যত মিথ্যাচার

মুর্খটা আবার লিখে, 
তবে এইসব নিয়ে মমিনরা মাথা ঘামাক গা, সে দেখে আমার দরকার নাই। কিন্তু ওইসব আবাল গণ্ডমূর্খরা - যারা সনাতন দর্শন, শাস্ত্র সম্পর্কে পরিচিত নই, কোনো পুরাণ গোটা পড়েও না, কোথাই কোন পুরাণের এক দুই লাইন নিয়ে টানাটানি করে হিন্দু গ্রন্থের পশ্চাৎ দেশের ফাঁকে ওদের নবীর মুখ গুঁজতে আসে কেনো ? যেখানে রাম ও কৃষ্ণের বিবাহ বয়স নিয়ে প্রামান্য গ্রন্থ বাল্মিকি রামায়ণ ও কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস মহাভারতে স্পস্ট করে কিছু বলা নাই, আছে শুধু অনুমান যোগ্য কিছু প্রমাণ। কিন্তু এরপরে আগত বিভিন্ন পুরাণে কিছু বর্ণনা আছে, এইক্ষেত্রে দেখা যায় পুরাণের বর্ণিত কিছু অংশ আবার প্রামান্য গ্রন্থ গুলির সাথে মেলে না বা এক এক পুরাণে এক এক রকম বর্ণনা। স্পস্টত পুরাণের এইসব অংশ গুলো হতে পারে নতুন ভাবে সংযোজিত। এইক্ষেত্রে কোন পুরাণ কতটা প্রাচীন এবং তার সাথে অন্য পুরাণের সামঞ্জস্যতা কতটুকু তার বিচার করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরসঙ্গে পুরাণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য এটি একটি মিশ্রপ্রকৃতির গ্রন্থ - এতে দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, কলা, প্রায়োগিক বিদ্যা, আধ্যাত্মবিদ্যা, রীতিনীতি প্রভৃতির সংমিশ্রণ। পুরাণের এই বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে - রবীন্দ্রনাথ, অরবিন্দ ঘোষ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্বামী বিবেকানন্দ সহ অনেকেই কম বেশি সহমত ছিলেন।

আমার জবাবঃ
পুরানের দু এক লাইন নিয়ে টানাটানি তখনই হবে যখন পুরানে সেরকম কথা থাকবে। আমার প্রশ্ন ওদের পুরানে সেসব থাকে কেন তবে ? হিন্দু ধর্ম গ্রন্থের পশ্চাতদেশ আছে জেনে ভালো লাগল, কিন্তু এই পশ্চাতদেশে তো ওদের ঠাকুরেরা দণ্ড ঢুকিয়ে বসে থাকে, ওদের আর জানার সুযোগ কোথায় ? আর বাল্মিকি রামায়ন ও কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস এর মহাভারত কে এই এক চোখা এখন প্রামান্য দাবি করল, কিন্তু যখন এই দুটি থেকেও রেফারেন্স প্রদান করা হয় তখন ওরা হেগে মুতে দিয়ে পেছায়। মূলত হিন্দুরা পিছানোতে ওস্তাদ। যাইহোক, রামায়ন ও মহাভারত ভিত্তিক কিছু নোটও লেখা হবে, দেখি ওরা কই যায়। যেহেতু ওর দাবী মতে এদুটো প্রমান্য গ্রন্থ। তাই আসুন দেখি মহাভারত বাল্যবিবাহ সম্পর্কে কি বলে,
মহাভারত, অনুশাসন পর্ব ১৩/৪৪, শ্লোক নং ১৩,
तरिंशद्वर्षॊ दशवर्षां भार्यां विन्देत नग्निकाम एकविंशतिवर्षॊ वा सप्त वर्षाम अवाप्नुयात
"ত্রিংদাদর্শী দশাবর্ষী ভার্যা বিন্দেত নগ্নিকাম,
একবিংশতিবর্ষী বা সপ্ত বর্ষাম অবাপ্নুয়াত।"
অর্থঃ ত্রিশ বছরের পুরুষের উচিত, দশ বছরের কন্যা বিবাহ করা, যাকে বলে নগ্নিকাম।
এবং একুশ বছরের পুরুষের উচিত, সাত বছরের কন্যা বিবাহ করা।
অনুবাদঃ কিশোরি মোহন গাংগুলি।
নীচে স্ক্রীনশট

এখন মুর্খটা কি বলবে ? মহাভারতেই তো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে শিশু বিয়ের অনুমোদন।
আর পুরানে যদি পরস্পর বিরোধি কথা থাকে, তো হিন্দুরা পুরান মানে কেন ? বৈষ্ণবীদের মূল ধর্মটাই ব্রাক্ষবৈবর্তপুরান নির্ভর। ইস্কনীরা ভগবত পুরানকেই তাদের দ্বিতীয় মূল গ্রন্থ মানে গীতার পরে। তা পুরানে যদি এত অসংগতি থাকে তবে এই মুর্খ পুরান নিষিদ্ধ ঘোষনা করে দাবি দাওয়া পেশ করছে না কেন হিন্দু পন্ডিতদের কাছে ? তারা নিয়মিত পুরাণ মেনেই নিজেদের ধর্ম পালন করছে, কিন্তু সেই পুরান থেকে রেফারেন্স দিলেই আবার মুর্খরা কান্নাকাটি শুরু করে। কি দ্বিমুখিতা।

এরপরে লেখে,
বাস্তবে বাল্মিকি রামায়ণ অনুসারে মাতা সীতার বয়স ছিলো আনুমানিক ৯ বছর এবং শ্রীরামের বয়স ছিলো আনুমানিক ১৬ বছর যখন তাদের বিবাহ হয় এবং মাতা সীতার বয়স যখন আনুমানিক ৩২ এবং শ্রীরামের বয়স যখন আনুমানিক ৩৯ বছর তখন তারা মিলিত হন। নিচে তার সম্পূর্ণ হিসাব প্রমাণ সহ।
বাল্মিকি রামায়ণ - ৩:৪৭:১০ শ্রীরাম ও মাতা সীতার বনবাসের পূর্বে তাদের বয়স ছিলো যথাক্রমে ২৫ বছর ও ১৮ বছর। অতয়েব শ্রীরামের থেকে মাতা সীতার বয়সের অন্তর (২৫-১৮) = ৭ বছর।
বাল্মিকি রামায়ণ - ১:২০:২ এখানে শ্রীরামের বয়স উল্লেখ আছে আনুমানিক ১৬ বছর যখন সে রাক্ষস বধের উদ্দেশ্যে ঋষি বিশ্বামিত্রের সঙ্গে বনে গমন করেন। রামায়ণ অনুসারে তিনি রাক্ষস বধের পরে মিথিলা গমন করেন মাতা সীতার সাথে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে। সুতরাং বিবাহের সময় শ্রীরামের বয়স ছিলো আনুমানিক ১৬ বছর এবং মাতা সীতার বয়স আনুমানিক (১৬-৭) = ৯ বছর।
শ্রীরাম ও মাতা সীতার বনগমনের পূর্বে বয়স ছিলো যথাক্রমে ২৫ বছর ও ১৮ বছর, এরপর ১৪ বছরের বনবাস অর্থ্যাৎ বয়স দাঁড়াবে গিয়ে (২৫+১৪) = ৩৯ বছর ও (১৮+১৪) = ৩২ বছর। এরপরে ১৪ বছরের বনবাস পূর্ণ করে শ্রীরাম মাতা সীতাকে সঙ্গে করে নিয়ে অযোধ্যা ফিরে আসেন এবং আনুমানিক এর আরো ১ বছর পরে লব ও কূশের জন্ম হয়, সুতরাং কমপক্ষে মাতা সীতার ৩২ বছরের আগে শ্রীরাম তার সাথে মিলিত হন নাই। অতয়েব বাল্যবিবাহ হলেও মিলন হয় সম্পূর্ণ প্রাপ্ত বয়সের চেয়েও বেশি সময়েরও পরে। ★ এখানে কুৎসাকারীরা আরো একটি রেফারেন্স টানে :- স্কন্দ পুরাণ ৩.২.৩০.৮-৯ থেকে। এখানে বলা হয়েছে বিবাহের সময়ে মাতা সীতার বয়স ছিলো ৬ বছর! উক্ত অংশটি যে নতুন ভাবে স্কন্দ পুরাণে সংযোজিত এক ভ্রান্ত মন্তব্য তার প্রমাণ এই প্রাচীন বাল্মিকি রামায়ণই দিয়ে দিচ্ছে।


আমার জবাবঃ
এই মিথ্যুক অপপ্রচারকারীর মতে রাম এর সাথে সীতার বিয়ে হয় তখন সীতার বয়স ছিল ৯ বছর। যাক গে, ধরে নিই ৯ বছর ছিল সীতার বয়স যখন রামের সাথে তার বিয়ে হয়। এখন ৬ আর ৯ এর মধ্যে পার্থক্যটা কি রইল ?
তবে যাই হোক, সীতার বয়স বিয়ের সময় ৯ বছর ছিল এবং ৬ বছর ছিল না এ ব্যাপারে কিন্তু ও কোন প্রমান দেখাতে পারল না।
ও লিখল,  বাল্মিকি রামায়ণ - ১:২০:২ এখানে শ্রীরামের বয়স উল্লেখ আছে আনুমানিক ১৬ বছর যখন সে রাক্ষস বধের উদ্দেশ্যে ঋষি বিশ্বামিত্রের সঙ্গে বনে গমন করেন। রামায়ণ অনুসারে তিনি রাক্ষস বধের পরে মিথিলা গমন করেন মাতা সীতার সাথে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে। বুঝলাম যে বাল্মিকি রামায়ন-১ঃ২০ঃ২ অনুসারে ১৬ বছর বয়সে রাম রাক্ষস বধের উদ্দেশ্যে গমন করে, যখন সীতার বয়স ছিল ৯ বছর। কিন্তু এরপরে যে মিথ্যুকটা লিখল রাক্ষস বধের পর সে সীতাকে বিয়ে করে, এটার রেফারেন্স কই ? ও কি পুরো রামায়ন থেকে একটা রেফারেন্সও দেখাতে পারবে যে রাক্ষস বধের পর রাম সীতাকে বিয়ে করে ? মিথ্যুকটা এখানে এলোমেলো রেফারেন্স দিয়ে অনলাইন হিন্দুদের একটু চোখের আরাম দিল মাত্র।
আমার দেয়া রামায়নের রেফারেন্স নিয়েও মিথ্যুকটা মিথ্যাচার করে লেখে,
স্কন্দপুরাণ ছাড়াও এখানে কুৎসাকারীরা বাল্মিকি রামায়নের অরণ্য খন্ড, ৪৭ অধ্যায়ের ৪ নং শ্লোক দেখিয়ে এক মূর্খামো অঙ্ক কষে মাতা সীতার বয়স ওদের নবীর স্ত্রী আয়েশার বিবাহের বয়সের সমান দেখাতে চাই। বাস্তবে এই ১২ বছর টি "ইশ্বাকূণাম" ইশ্বাকু রাজবংশের অর্থ্যাৎ শ্রী রামের পিতার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে।
মুলত অনলাইনের হিন্দুদের শাস্ত্র সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকার কারনে এবং জীবনেও এরা ধর্মগ্রন্থকে চোখের সামনে না দেখার কারনে এই বাটপার মিথ্যাচার করার সুযোগ পেল। ও বলল, এখানে নাকি রামের বাবার কথা বলা হয়েছে। নীচে স্ক্রীনশট দিলাম, নিজেরাই দেখুন এখানে কার সম্পর্কে বলা হয়েছে, রাম ও সীতার সম্পর্কে, রামের বাবার সম্পর্কে নয়।

অর্থাৎ ১২ বছর পর্যন্ত সে ঈশ্বকুশ(রামের বাবা) এর প্রাসাদে অর্থাৎ শশুরবাড়িতে রয়েছে।
আর সে রামের সাথে বনবাসে গিয়েছে তখন তার বয়স ছিল ১৮,
এবার নিজেই হিসেব করুন ১৮-১২= ৬ বছর। অর্থাৎ সীতার বিয়ের সময় বয়স ছিল ৬ বছর।
আর এই স্পষ্ট রেফারেন্সই দেখি আমরা স্কন্দ পুরানে, যেটার রেফারেন্স মেইন নোটটিতে দিয়েছিলাম। যেহেতু এটা হুবহু রামায়নে উল্লখিত সীতার বয়সের হিসাবকেই সাপোর্ট করে তাই, এটা ভুল হবার কোন কারন দেখি না।

এবার এই বরাহশাবক একটা যুক্তি প্রদান করে যে, যেহেতু লব ও কুশের জন্ম হয় তখন সীতার বয়স ছিল ৩২  অতএব রাম এর সাথে সীতার বাল্য বিবাহ হলেও তাদের মিলন ঘটে অনেক পরে অর্থাৎ ৩০ বা ৩১ বছর বয়সে।
যুক্তিটা মোটামুটি ভালোই ছিল। কিন্তু তথ্যবিভ্রাটে যুক্তিটা আর ধোপে টিকবে না।আসলে মুলত হিন্দুরা হিন্দু ধর্ম নিয়ে যত জবাব দেয়ার চেষ্টা করবে, ততই মূলত হিন্দু ধর্মের কুতসিত রুপ সামনে চলে আসবে। আসুন দেখি এখন কি বেরোয়।
রাম সীতার সাথে বনবাস থেকে আসার পরে নয়, বরং বহু আগে থেকেই সেক্স করেছে। প্রমান,
বাল্মিকি রামায়ন, সুন্দর খন্ড, স্বর্গ ৩৯, শ্লোক ৫১, বলা আছে,
"মন্মথ [কাম দেবতার অপরনাম] এর বান দ্বারা  জৈবিকতায় আঘাতপ্রাপ্ত রাম, সুখ হতে বঞ্চিত, যেন একটা হাতি উত্যক্ত হচ্ছে সিংহ দ্বারা"
সরাসরি পড়ুন www.valmikiramayan.net/sundara/sarga39
অর্থাৎ সীতা অপহরনের পর তার অভাবে রাম জৈবিক চাহিদায় দগ্ধ। অর্থাৎ বনবাসে সে সীতার সাথে মিলন করে জৈবিক চাহিদা মিটাতো। তাই তার অভাবে এখন আঘাতপ্রাপ্ত হাতির মত ছটফট করছে।
একিভাবে সীতার অভাবে কামের জালায় দগ্ধ রামের কথা উল্লেখ আছে, বাল্মিকি রামায়ন যুদ্ধখন্ড, স্বর্গ ৫, শ্লোক ৮ ও ৯ এ। সরাসরি পড়ুন www.valmikiramayan.net/yuddha/sarga5
স্ক্রীনশট



তবে শুধু যে বনবাসে বসেই রাম সীতার সাথে সেক্স করেছে এমন নয়, বরং বনবাসের পুর্বেই এবং বিবাহের পর পরই রাম সীতার সাহিত দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করেছে
বাল্মিকি রামায়ন, বালাখন্ড, স্বর্গ ৭৭, শ্লোক ২৯ বলা আছে,
"যখন কামোদ্দিপনার সহিত রাম রাজা জনকের কন্যার (সীতা) সহিত দাম্পত্য অতিবাহিত করছিল, তখন রামকে লাগছিল দেবতাদের দেবতা বিষ্ণূর মত যখন সে তার দেবী লক্ষীর সহিত রত থাকে।"
সরাসরি পড়ূন www.valmikiramayan.net/baala/sarga77
স্ক্রীনশট



অর্থাৎ শিশূ অবস্থায় সীতাকে বিয়ে করে সেই সময়েই রাম দাম্পত্য অতিবাহিত করেছিল।তাই এই মুর্খটা যা দাবি করেছে  তা সবই ভিত্তিহীন।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, বিয়ের এত বছর পরেও রাম ও সীতার কোন সন্তান ছিল না কেন ? উত্তরটা হিন্দুদের জন্য বেশ দুখজনক ও লজ্জাজনকই বটে। সন্তান না হওয়ার কারন হচ্ছে রাম ছিল নপুংসক। সন্তান উতপাদনে অক্ষম।
রেফারেন্স, বাল্মিকি রামায়ন, সুন্দর খন্ড, স্বর্গ ৩৫, শ্লোক ১৮,
এখানে, হনুমান যখন সীতার নিকট আসে, তখন সীতা রামের বর্ননা শুনতে চায় হনুমানের নিকট সন্দেহ দূর করতে যে সে সত্যিই রামের বার্তাবাহক কিনা। হনুমান তখন রামের অনেক বৈশিষ্ট্য বর্ননা করতে করতে ১৮ নাম্বার শ্লোকে বলে,
"রাম চারটি বিষয়ে খাটো ছিল, ঘাড়, পুংজনেন্দ্রিয় শক্তি , পিঠ এবং পা।"
(নীচে স্ক্রীনশট, অনুবাদকঃ কিশোরি মোহন গাংগুলি)


বাল্মিকি রামায়ন হতে সরাসরি পড়ুন www.valmikiramayan.net/sundara/sarga35

অর্থাৎ ভগবান রাম ছিল নপুংসক, আর এ কারনেই সীতার সাথে মিলিত হলেও তাদের কোন সন্তান হয়নি।

এবার তাহলে প্রশ্ন জাগে, লব ও কুশ হল কিভাবে ?
একটি অতি প্রবল সম্ভাবনা জাগে সেটা হচ্ছে, যদিও লব ও কুশ, বৈবাহিক সম্পর্কযুক্ত সুত্রে রামের সন্তান, কিন্তু তাদের আসল পিতা হচ্ছে রাবন। হ্যা মহাভারত ও বাল্মিকি রামায়নের ঘটনা, পটভুমি ও যুক্তি অনুসারে এটাই নির্দেশ করে।
যেমন,
মহাভারত, বনপর্ব, দ্রুপদী হরন বিভাগ,  সেকশন ২৭৭
শকুনরাজ মার্কন্ড, রাবনকে উদ্দেশ্য করে বলছে, তুমি কিভাবে সীতাকে ধর্ষন করবে যেখানে আমি জীবিত রয়েছি। এরপর যুদ্ধ হল মার্কন্ডের সাথে রাবনের। রাবন মার্কন্ডকে হত্যা করল এবং সীতাকে কোলে বসিয়ে উর্ধাকাশে গমন করল।

মার্কন্ড বলল সে বেচে থাকতে রাবন সীতাকে ধর্ষন করতে পারবে না, কিন্তু সে রাবনের হাতে মারা গেল। এরপর রাবন সীতাকে কোলে বসাল এবং উর্ধাকাশে গমন করল। এদ্বারা কি বোঝায় ? শারীরিকভাবে যে সীতার সাথে কিছু হলেও করেছিল।
সীতার নিজের কথায় এই ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট,
বাল্মিকি রামায়ন, যুদ্ধখন্ড, স্বর্গ ১১৬, শ্লোক ৮, সীতা বলছে রামকে,
"O lord! It was not my willfulness, when I came into contact with the person of Ravana. I was helpless.
সরাসরি পড়ূন www.valmikiramayan.net/yuddha/sarga116
অর্থাৎ বোঝা যায় যে রাবন সীতাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন করেছিল।

আর মজার ব্যাপার হচ্ছে সীতা রাবনের নিকট থেকে ফিরে আসার পরই লব ও কুশ এর জন্ম হয়। অথচ রামের সহিত সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরো তার কোন সন্তান জন্ম নেয়নি। আমরা দেখিয়েছি যে বিবাহের পরই সে রামের সাথে দাম্পত্য  জীবন অতিবাহিত করেছে। কিন্তু রাবনের সহিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরই সন্তান হল।এখানে ২ এ ২  যে চার তাই মুলত প্রমান হয়। তবে রামায়নে স্পষ্ট বলা নেই যে লব ও কুশ রাবনেরই সন্তান, কিন্তু ঘটনা প্রচ্ছন্ন ভাবে এটাই নির্দেশ করে। বাল্মিকি ছিলেন রাম এর সমসাময়ীক রাজ কবি। তাই আক্ষরিকভাবে এই কথা রামায়নে লেখা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না, ভয় বা সন্মান যে কারনেই হোক না কেন। কিন্তু রাম জননেন্দিয় শক্তিতে খাটো, এই কথা লিখে তিনি এই ব্যাপারে স্পষ্ট ইংগিত দিয়েছেন।

এরপরে রুকমনীর বিয়ের বিষয়ে লেখে,
শ্রীকৃষ্ণের সাথে রুক্মিণীদেবীর বিবাহ সম্পর্কে প্রাচীন ব্যাস মহাভারতের আদিপর্বেই উল্লেখ আছে, তবে এখানে শুধু তার বিবাহের ব্যাপারে উল্লেখ আছে,উনার বয়সের ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ হয়নি। শ্রীকৃষ্ণ ও রুক্মিণীদেবীর বিবাহ ও বৈবাহিক জীবনের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উল্লেখিত হয়েছে ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে। এখানে সম্পূর্ণ ১০৫ নং, ১০৭ নং ও ১১২ নং অধ্যায় জুড়ে এর বিবরণ আছে। এখানে বিবাহের সময় কালে রুক্মিণীদেবী ও শ্রীকৃষ্ণকে যুবক যুবতী ও বয়ঃসন্ধি অতিক্রমকারী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, নিম্নরূপ - ১০৫ অধ্যায়ে ৪নং শ্লোকে রুক্মিণী দেবী সম্পর্কে বলা হচ্ছে
নবযৌবনাসম্পন্না রত্নাভরনভূষিতা
তপ্তকাঞ্চনবর্নাভা তেজসা জ্বলিতা সতি


আমার জবাবঃএখানে নবযৌবনা দ্বারা ও বলতে চাইলো যে রুকমনী ছিল তখন যুবতী।
মজার বিষয় এখানে নবযৌবনা দ্বারা ও যা প্রমান করতে চাইলো, মুলত শব্দটা দ্বারা তো তার উলটা অর্থই প্রকাশ হয়। নবযৌবনা মানে যার কেবলমাত্র যৌবন এসেছে। আর আমরা জানি একটি মেয়ের শরীরে যৌবন আসে ৮/৯ বছরের মধ্যেই। স্বাভাবিকভাবে একটি মেয়ের মাসিক শুরু হয় সর্বনিম্ন ৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৩ বছর বয়সের মধ্যে
http://kidshealth.org/en/teens/menstruation.html
অর্থাৎ ৮ বছর বয়সে যখন একটি মেয়ের মাসিক শুরু হয় সে তখন নবযৌবনা বলে চিহ্নিত হয়। আর এই মুর্খ নিজেই প্রমান দিল যে রুকমনী ছিল বিয়ের সময় নবযৌবনা অর্থাৎ ৮ থেকে ১৩ এর মধ্যে।যদিও প্রাচীন সময়ে মেয়েদের মাসিক আরো আগেই শুরু হত, উপরে মহাভারত হতেই আমরা রেফারেন্স দেখেছি যে কন্যাকে ৭ বছর বয়সে ।
এরপরে ও যুক্তি দিল রুকমনীকে যেহেতু বিবাহযোগ্য বলা হয়েছে পরবর্তী মন্ত্রে, অতএব রুকমনী শিশু ছিল না। এবার আসুন্ তবে দেখি হিন্দু ধর্মানুসারে কন্যাকে বিবাহযোগ্য গননা করা হয় কত বছর বয়সে, লেখার শুরুতে মহাভারত থেকে দেখিয়েছি কন্যাকে ৭ বছর বয়সে ২১ বছর বয়সের পাত্রের সাথে বিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এবার দেখি মনুসংহিতা কি বলে,
মনুসংহিতা ৯/৯৪
"ত্রিংশদ্বর্ষোদ্বহেত কন্যাং হদ্যাং দ্বাদষবার্ষিকীম
ত্রষ্টোবর্ষোহষ্টবর্ষাং বা ধর্মে সীদতি সত্তরঃ"
অর্থঃ "ত্রিশ বছর বয়স্ক পুরুষ বিবাহ করবে ১২ বছরের কন্যাকে, আর ২৪ বছর বয়স্ক পুরুষ বিবাহ করবে ৮ বছরের কন্যাকে। ইহায়ই বিবাহ বয়স, ইহার অন্যত্র হইলে ধর্ম ষ্ট হয়।"  


আরো দেখি কি বলা,
মনুসংহিতা ৯/৮৮
"উতকৃষ্টায়া ভিরুপায় বরায় সদৃশায় চ,
অপ্রাপ্তামপি তাং তস্মৈ কন্যাং দদ্যাদ যথাবিধি"
অর্থঃ কুলে এবং আচারে উতকৃষ্ট সজাতীয় বর পাইলে কন্যা বিবাহযোগ্য না হইলেও উহাকে সম্প্রদান(বিবাহ) করাবে।
অর্থাৎ বিবাহ যোগ্যা না হলেও মানে ৮ বছরের ছোট হলেও উতকৃষ্ট পাত্র পেলে তাহাকে বিবাহ দিবে।


অর্থাৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি সনাতন শাস্ত্রমতেই কন্যা বিবাহযোগ্য ধরা হয় ৭/৮ বছরেই। তাই রুকমনীও নবযৌবনা প্লাস বিবাহযোগ্য হয়েছিল এটা প্রমান করে সেও ৭ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ছিল বিয়ের সময়।

এরপরে লিখে, 
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে কুৎসাকারীরা এখানে এই অংশের জন্য যেকইটা রেফারেন্সের স্কিনশটের তলাই দাগ মেরেছে সবগুলো বিবাহ প্রস্তাবের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বিবাহের নয়। এবার যদি কোনো যুবক যুবতী প্রাচীন কালে স্বেচ্ছাই বৈধ্যভাবে বিবাহ করে মিলিত হন তবে আশা করছি কোনো সুস্থ মস্তিস্কের মানুষ,নবীর মতো pedophile এর উপাধী দেবে না। 
আমার জবাবঃআমি যেকয়টাতে দাগ মেরেছি তার একটিতে বেশ স্পষ্টভাবেই বিয়ে এবং বিয়ে পরবর্তী সেক্স এর কথা পর্যন্ত আছে, কিন্তু এই মিথ্যুক সেই অংশটা এড়িয়ে গেল। নীচে আবারো স্ক্রীনশটটা দিচ্ছি,
ব্রাক্ষ বৈবর্তপুরান, কৃষ্ণজন্মখন্ড, অধ্যায় ১১২, শ্লোক ১-১০ স্পষ্ট বলা আছে,
রুকমনী পরিপুর্নভাবে তখনো বেড়ে ওঠেনি, এমন্ সময় কৃষ্ণ তার সাথে সেক্স করল এবং রুক্মনী জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।

এখন কি তবে মিথ্যুকটা বলবে যে, বিবাহ প্রস্তাবের সময়ই কৃষ্ণ রুক্মনীর সাথে সেক্স করেছে ? একিসাথে আমরা স্পষ্টভাবে দেখলাম যে রুক্মনী তখনো বেড়ে ওঠেনি, অর্থাৎ সে শিশু কন্যা ছিল। কারন ৭/৮ বছরে মাসিক শুরুর মধ্যমে নারী যৌবনে পদার্পন করলেও আসলে তার শরীর তখনো বেড়ে ওঠে না। আর রেফারেন্সে স্পষ্ট লেখা যে রুকমনীও তখনো বেড়ে ওঠেনি যা প্রমান করে সে শিশু ছিল।


এবার শীবের ব্যাপার নিয়ে এই জনৈক মিথ্যুক বিশাল  বক্তব্য প্রদান করল। তবে এটা সত্য যে আমার মূল নোটে আসলে শিব পার্বতীকে শিশু অবস্থায় বিয়ে করেছে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কোন রেফারেন্স দেইনি।তবে সমস্যা কি?  এখন দিচ্ছি। তবে  তার আগে ওর কিছু যুক্তি দেখি।
ও লিখল,
প্রথমত, পুরাণের এই অংশে শিব পার্বতীর বিবাহ নয় বরং শিব পার্বতীর প্রথম সাক্ষাৎকারের কথা বলা হয়েছে, কুৎসাকারী যে স্কিনশট তার পোস্টে দিয়েছে তার উপরেই দেখুন লিখা আছে "Siva and Himavat meet together"! শিব পার্বতীর এই দেখা হওয়ার বহু পরে তাদের বিবাহ হয়েছে, এরজন্য প্রথম দেখার ব্যাপারে বলা হচ্ছে ১১ নং অধ্যায়ে এবং বিবাহের ব্যাপারে বলা হচ্ছে ৪৮ নং অধ্যায়ে। দুটি অধ্যায়ের মাঝে - প্রথম দেখা, প্রেমের উৎপত্তি, মাতার তপস্যা, বিবাহ প্রস্তাব, প্রস্তাব খারিজ, আবার দ্বিতীয় প্রস্তাব, পরে হিমালয় ও তার স্ত্রীর বিবাহে সম্বতি, হিমালয়ের সাথে বিভিন্ন দেবতাদের কথাপোকথন........... করে কত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে শেষে তাদের বিবাহ হয়, সুতরাং সময়ের সাপেক্ষে মা পার্বতীর বয়সও বেড়েছে, সুতরাং বিবাহের সময়ে তার বয়স কত ছিলো তা নির্ণয় করা খুব দুঃসাধ্য কর।
দ্বিতীয়ত, আমার এখানে একটি প্রশ্ন! শিব কবেই জন্মালো বা কবেই মৃত্যুবরণ করলো, যে কুৎসাকারীরা তার উপর মনুষ্য স্বভাব আরোপ করতে এসেছে? সাধে কি আগে এইসব মুসলমান কুৎসাকারীদের গণ্ডমূর্খ বলেছি। এরা তো শৈব্য দর্শনের কিছুই জানেও না এমন কি যে পুরাণের প্রসঙ্গ এখানে ওরা তুলেছে সেটাও সম্পূর্ণ পড়েও না!

আমার জবাবঃ
কথার অংশ বিশেষ সঠিক, পুরাণের এই অংশে পার্বতীর বিবাহ নয়, বরং শিব পার্বতীর প্রথম সাক্ষাতকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের সাক্ষাতকারের উদ্দেশ্য ছিল কি, এ ব্যাপারে একটু পরে আসছি।
কিন্তু দ্বিতীয়তে ও লিখল, শিব কবেই জন্মালো বা কবেই মৃত্যুবরণ করলো, যে কুৎসাকারীরা তার উপর মনুষ্য স্বভাব আরোপ করতে এসেছে? আমি আবার কোথায় তার উপর মনুষ্য স্বভাব আরোপ করতে এলাম ? এটা তো আরোপ করেছে ওদের পুরাণ গ্রন্থই। আপনারাই বলুন বিবাহ কি ঐশ্বরিক আরোপ না মনুষ্য আরোপ ? এখন পুরান গ্রন্থই যদি তার বিবাহ কামকেলির বর্ননা থাকে তো সেটা কি আমার দোষ না পুরাণের দোষ ?
পার্বতীর বিবাহের বয়সের রেফারেন্স আরো একটু পরে দিচ্ছি, আগে দেখি ও আরো কি লিখেছে,
এরপরে লিখেছে, 
এখানে কুৎসাকারী যে রেফারেন্স টেনেছে শিবপুরাণ, রুদ্রেসর্গ, পার্বতীখন্ড, ৩.১১.১-২, ঐ একই খন্ডের একই বিভাগে ৪৮ নং অধ্যায়ে, ১৮ থেকে ২৩ নং শ্লোকে - শিবের জাতি, বংশ ও গোত্র সম্বন্ধে বলতে গিয়ে মা পার্বতী বলছেন – “তিনি পরব্রহ্ম, সর্বশ্রেষ্ট, অনাদি, সর্ব্ব্যাপী, তার কোনো গোত্র নাই,পরিবার নাই........ আরো অনেক কিছু।

এখানে সেই শৈব্য দর্শনের কিছু অংশ স্পস্ট বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে শৈব্য দর্শন অনুসারে শিব কে? ও তার স্বরূপ কি? সেটাই উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে সে শিব হোক বা বিষ্ণু বা ব্রহ্মা সেই এক পরব্রহ্মের বিভিন্ন নাম। পুরাণ ছাড়াও উপনিষদেও সেই একই সিদ্ধান্তে শেষে উপনিত হয়। সাংখ্য দর্শনের পুরুষ ও প্রকৃতি, শৈব দর্শনে শিব ও শক্তি নামে আখ্যায়িত হয়েছে এবং বৈষ্ণব দর্শনে গিয়ে লক্ষী নারায়ণ এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনে (চৈতন্য দর্শন) রাধা ও কৃষ্ণ নামে।পুরাণকাররা তাদের এই দর্শন গুলোকে প্রকাশ করেছে এই প্রকৃতির উপাখ্যান, কল্প ও সাহিত্যের মাধ্যমে। অনেকটা মনের ভাব কে যেমন ভাষা, ইশারা ও লিখার মাধ্যমে বোঝানো হয় সেই রকম। এরজন্য আগেই উল্লেখ করেছি পুরাণ বিভিন্ন জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্র বা মিশ্র গ্রন্থ বিশেষ।
আমার জবাবঃখুব ভালো কথা, তাহলে ও স্বীকার করে নিয়েছে যে শীব পরমাত্নার নাম মাত্র। বাস্তবে কেউ নেই। পুরাণকাররা শৈব দর্শন, চৈতন্য দর্শন যেটাই হোক না কেন, এগুলোকে প্রকাশ করেছে প্রকৃতির উপাখ্যান, কল্প সাহিত্যের মাধ্যমে। অনেকটা মনের ভাব যেমন ভাষা ইশারায় প্রকাশ পায় তেমন। এবং পুরাণ নাকি জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্রে।
আমার প্রশ্ন শীব যদি পরমাত্নার নাম হয়, তবে পুরাণকাররা কেন নিরাকার পরমাত্নার পুত্র কন্যা দাম্পত্য জীবন ইত্যাদি কল্পনা করতে গেল ? ধরলাম তার স্বরুপ অনাদি, তবে পুরাণ কাররা কেন মনুষ্য আরোপ করল ? আর সেই আরোপেই মুর্তি বানিয়ে কেন মন্দিরে সেই মুর্তকে পুজা হয় ? তাহলে পুরো ব্যাপারটাই কি সৃষ্টার উপাসনার একটি ভুল পথ নয় ? পুরানকাররা যে শুধু শীবের উপর মানুষ্য রুপ আরোপ করেছে তা নয়, পর্নস্টারের রুপও আরোপ করেছে।
আসুন দেখি, দেবী ভগবত পুরাণ ৪।২০। ৩৬-৩৭
"কামের জ্বালায় দগ্ধ হয়ে শীব ব্রিঘু ঋষির জংগলে গেল। সেখানে যেয়ে সংগম শুরু করল। তার এই অবস্থা দেখে ঋষি বলল, তুমি অত্যান্ত নির্লজ্জ, এরপর ঋষি অভিশাপ দিল আর শীবের লিংগ খসে পড়ল"
অনুবাদঃ স্বামী বিজয়ানন্দ 


এরকম শীবের কামকেলীর আরো রেফারেন্স দেয়া যাবে। এখন প্রশ্ন হল শীব যদি নিরাকার পরমাত্না হয় তাহলে সে কেমনে কামের জালায় দগ্ধ হয়ে বন জংগলে সেক্স করে বেড়ায় ? পুরাণ নাকি দর্শন উপাখ্যান, তা নিরাকার পরমাত্নাকে কামুক পর্নষ্টার বানানো কোন ধরনের সনাতনী দর্শন ? পুরান নাকি জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্র, তা এটা কোন ধরনের জ্ঞানের প্রায়োগিক ক্ষেত্র ইশ্বর সম্বন্ধে ?

এবার আসি পার্বতীকে শিশুকালে বিয়ের প্রসংগে, এই জনৈক মিথ্যুক বলল যে এখানে শীব ও পার্বতীর হিমালয়ে দেখা হয়েছে মাত্র, বিয়ের কথা হয়নি। এবার আসুন দেখি বিয়ের অংশে, শিবের সাথে পার্বতীর বিয়ে ঠিক তখন সেই শিশু বয়সেই হয়।
রেফারেন্স একি স্কন্দ পুরান, খন্ড ১, বিভাগ ১, অধ্যায় ২৩, শ্লোক ৩-৯,
এখানে পুরো ঘটনাই বর্নান হয়েছে শীব ও পার্বতীর বিয়ে নিয়ে।শিব ঋষীদের পাঠায় পার্বতীর পিতার নিকট পার্বতীর সাথে বিবাহ প্রস্তাব নিয়ে। এরপর পার্বতীর পিতা পার্বতীকে কোলে বসিয়ে আদর করে ব্যাখা করছিলেন যে শীব কেন তার জন্য উপযুক্ত পাত্র।এখানে কোলে বসিয়ে আদর করা দ্বারা স্পষ্টই প্রমান হয় যে পার্বতী তখন ছিল শিশু।
নীচে স্ক্রীনশট, আর এবার জনৈক মিথ্যুককে চাপ্টার টাইটেলটাও ভাল করে দেখতে বলা হল, অধ্যায়ের নাম,  শীবের বিয়ে।
অনুবাদকঃ জে এল শাস্ত্রী


পুরাণের এই অধ্যায়ের কমেন্টারিতে গনেশ বাসুধা ঠাকুর লিখেছেন,
এই অধ্যায় টি সেই সময়ের বৈবাহিক প্রথার একটি চিত্র তুলে ধরে, এবং পুরাণের এই অংশই প্রমান করে সেই সময়ে শীশু বিবাহের প্রচলন ছিল।
নীচে স্ক্রীনশট


তাহলে আমরা দেখতে পেলাম শীব পার্বতীকে বিয়ে করেছিল শিশু থাকা অবস্থায়।
অর্থাৎ হিন্দু ধর্মে শীশু বিবাহ বৈধ এবং প্রধান প্রধান অবতারেরাই কন্যাশিশু বিবাহ করেছে এটা স্পষ্ট ।