মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১

যোগব্যায়ামের ভয়াবহতাঃ ভন্ড অগ্নিবীরকে জবাব

দুদিন আগে আমি এবং ব্রাদার রুহুল ভাই যোগ ব্যায়াম যে ক্ষতিকর এই মর্মে  একটি লেখা শেয়ার দিই। অগ্নিবীর নামক এক ভন্ড অনলাইন মিথ্যাবাদী হিন্দু গোষ্ঠী এটার জবাব  দেয়ার চেষ্টা করেছে। আসুন দেখি তারা ভন্ডামি করে কোথাকার পানি কোথায় নিয়েছে। প্রথমেই এরা শুরু করে রুহুল ভাইয়ের প্রতি পার্সনাল এটাক দিয়ে, যে সে অশিক্ষিত, প্রাক্তন মোবাইল মেকানিক ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ রুহুল ভাই University of Kalyani থেকে পড়াশুনা করেছে এটা তার প্রফাইলেই দেয়া রয়েছে। এই মিথ্যাবাদী ভন্ড কি তা পড়তে পারেনি? এই অগ্নিবীরের শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? সেটা পারলে তারা তুলে ধরুক। এদের বৈদিক সাইন্স টাইপের লেখা গুলো পড়লে তো এদের  ইন্টারফেল পাবলিক বলে মনে হয়। আবার এরা রুহুল ভাইকে প্রাক্তন মোবাইল মেকানিক বলে অবজ্ঞা করল, এ দ্বারা প্রমানিত হয় যে এরা যতই নিজেদের ধর্মীয় সাম্যের গান গাক, এদের কাছে নিজেদের জাত প্রথার মত পেশায়ও্ উচুনিচু আছে। মুখে যতই সাম্যতার বুলি ছড়াক অন্তরে ঠিকই অবজ্ঞা করে। 

তারা রিফিউট শুরু করে একটি হাস্যকর ভুল ধরার চেষ্টার মাধ্যমে, যেগাদর্শন এবং ইয়োগাকে আলাদা প্রমান করতে চেয়ে। অথচ  যোগ ব্যায়াম যোগ দর্শনেরই অংশ এটা তাদের দেয়া লিংকগুলোতেই বলা আছে। হঠযোগ যে যোগেরই শাখা এটা তাদের দেয়া উইকিপিডিয়া লিঙ্কেই দেয়া আছে। বিষয়টা অনেকটা এরকম যে, আম্রপলি  এক ধরনের আম। কিন্তু  কেউ যদি বলে আম্রপলি ফল তাহলে সে ভুল বলছে, এই হচ্ছে অগ্নিবীরের লজিক। যোগ দর্শন থেকে যোগ ব্যায়ামকে হাটিয়ে দাও, তাহলে আর যোগ দর্শনে অবশিষ্ট কি থাকে?

এরপর অগ্নিবীর উক্ত টাইমস অফ ইন্ডিয়ার লিংক নিয়ে জবাব দেয়ার চেষ্টা করল। প্রথমে বলতে চাই, উক্ত পোষ্ট যে একটা শেয়ার পোষ্ট ছিল তা পোষ্টের কার্টেসীতেই লেখা ছিল। অর্থাৎ পোষ্টের লেখক না ছিল রুহুল ভাই না ছিলাম আমি। যেহেতু এটা কার্টেসী দেয়া পোষ্ট অতএব পোষ্টের কোন ভুলের দায়ভারও লেখকের। কিন্তু অগ্নিবীর এখানে জবাব দিতে গিয়ে যে ছালছাতুরি করেছে এবং টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টের তথ্য গোপন করেছে তা আগে তুলে ধরা যাক। 

এটা সত্য যে রিপোর্টটিতে নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে ঘটা ৭৬টি কেস নিয়ে প্রথমে আলোচনা করেছে। কিন্তু অগ্নিবীর এই সংখ্যাকে মিথ্যাভাবে তুলে ধরেছে এই বলে যে এটা নাকি সমগ্র নর্থ আমেরিকা এবং ইউরোপের সংখ্যা। শুধু তাই না, তারা এখানে কাল্পনিক ১০ লাখ একটা সংখ্যাও তুলে ধরেছে এই বলে যে ১০ লাখের মধ্যে নাকি এখন পর্যন্ত ৭৬টা রিপোর্ট পাওয়া গেছে, অথচ রিপোর্টটিতে এমন কথা কোথাও নেই। মূলত এটি ছিল জাষ্ট ৭৬ জন যোগব্যায়ামকারী যারা যোগব্যায়াম করে আহত হয়েছে এবং মারা গেছে তাদের নিয়ে একটি স্টাডি যে যোগব্যায়ামে কি ধরনের ভয়াবহ ইনজুরি হতে পারে। এখানে কোথাও বলা হয়নি যে সারা নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে মাত্র এই ৭৬ জনই যোগ ব্যায়াম করতে যেয়ে আহত হয়েছে।
তবে আক্রান্ত হওয়া যোগব্যায়ামকারীদের সংখ্যা কত? তারও একাধিক উপাত্ত রিপোর্টতে দেয়া আছে যা অগ্নিবীর গোপনে এড়িয়ে গেল। যেমন রিপোর্টটিতে বলা আছে, ১১০ জন অষ্টাঙ্গ যোগ চর্চাকারীদের ৬২% এর মাংসপেশী বা মেরুদন্ডে ইনজুরি হয়েছে। এটা যদিও লো স্কেল স্টাডি ছিল কিন্তু পার্সেন্টিজটা কত বড় সেটা সহজেই বোধগম্য। লার্জ স্কেলে পার্সেন্টিজ এ উনিশবিশ বা আঠারো বিশ হতে পারে কিন্তু সংখ্যাটা কত বড় হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। 
অগ্নিবীর খুব গর্বের সাথে “অস্ট্রেলিয়ায় ২৫০০ জন যোগব্যায়ামকারীর ৭৮.৭% জানিয়েছে তাদের কখনো কোন প্রকার ইন্জুরি হয়নি” এই অংশটুকু প্রচার করলেও পরের অংশটুকু ঠিকই গোপন করে  গেছে। তা হলো, সমগ্র নর্থ আমেরিকার প্রধানতম ১৩০০ এর বেশি যোগ ব্যায়ামের গুরু ও থেরাপিষ্টরা জানিয়েছেন, তাদের ভক্তদের মধ্যে যোগ ব্যায়ামের কারনে মেরুদন্ডে, বাহুতে, জয়েন্টে ইনজুরি খুবই কমন বিষয়। এবার শুধু নর্থ আমেরিকার প্রধান ১৩০০ এর বেশি যোগ ব্যায়াম শিক্ষকের কত শত স্টুডেন্ট যোগব্যায়ামের মাধ্যমে ইনজুরি হয়েছে সংখ্যাটা এবার নিজেই হিসেব করুন।
https://timesofindia.indiatimes.com/home/science/Scientific-study-reports-side-effects-of-yoga/articleshow/24763495.cms



অগ্নিবীর যোগব্যায়ামের কিছু উপকারীতা তুলে ধরতে চাইলো চিকিৎসা জার্নাল পাবমেড এর কিছু লিংক দিয়ে যে যোগব্যায়াম করলে এই হয়, সেই হয়। অথচ সেই একই পাবমেট জার্নালে ইয়োগার ক্ষতিকর দিক নিয়েও বহু রিসার্চ পেপার আছে। গুগলে Pubmed Yoga adverse effect লিখে সার্চ করলেই অনেকগুলি রিসার্স পেপার পাওয়া যাবে। এই লেখায় আমি নিজেও একটা সাইটেশন ইউজ করেছি। তবে সবচেয়ে বড় কথা হল আমার বা রুহুল ভাইয়ের শেয়ার করা পোষ্টটিতে আমরা কোথাও কিন্তু দাবি করিনি যে যোগব্যায়ামের কোন উপকার নেই। যে কোন শারীরিক পরিশ্রমেরই উপকার রয়েছে। কিন্তু যখন উপকারের মধ্যে বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা থাকবে তখন সেই উপকার এড়িয়ে চলাই কাম্য।

এরপর অগ্নিবীর গর্বের সাথে তুলে ধরেছে আমেরিকার কিছু ডাক্তারদের দেবতা জ্ঞান করে যে তারা তাদের রোগীদের ইয়োগা প্রেসক্রাইভ করেছে। অথচ হিন্দুদের দেবতাতুল্য এই সাদা চামড়ার বিজ্ঞানীরাই বর্তমানে যোগ ব্যায়ামের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে মানুষকে সাবধান করছে এ থেকে। তারা বলছে যোগ ব্যায়ামকে আগে যতটা ক্ষতিকর ভাবত এটা তার থেকে বেশি ভয়ংকর ক্ষতি সাধন করতে পারে। 
https://www.telegraph.co.uk/news/2017/06/28/yogamore-dangerous-previously-thought-scientists-say/

ব্যথা নিরাময়ে যোগ কার্যকরী এই তত্ত্ব প্রদানকারীদের ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির গবেষকরা সাবধান করেছেন। তারা দেখিয়েছেন যোগ ব্যায়ামে শতকরা ১০ ভাগ মানুষ ব্যাথায় আক্রান্ত হয় যা নিরাময় করা দুঃসাধ্য। এবং ২১% মানুষের উল্টো পূর্বের কোন ব্যাথা থাকলে তা ফিরে আসে। 
https://www.sciencedaily.com/releases/2017/06/170627105433.htm?fbclid=IwAR1KWLb9WMQIs5dWfGHLUeQo5rdMPrz3IdS27gRprdu8KWi2UWJmSqcwlIs#:~:text=Summary%3A,of%20existing%20injuries%2C%20research%20shows

জার্মানীতে যোগ ব্যায়াম চর্চাকারীদের মধ্যে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যোগ ব্যায়াম চর্চাকারীদের মধ্যে ২১.৪% মানুষ ৭০২ রকমের মারাত্নক ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে।
https://bmccomplementmedtherapies.biomedcentral.com/articles/10.1186/s12906-019-2612-7?fbclid=IwAR0ShGF9q3ZVOASI2r7rYBoToqpTvaaWlQ8ZR9uhJt9IvKcB3ENiahXbwLc

ব্রিটেনে যোগব্যায়াম চর্চাকারীদের মধ্যে গবেষণায় দেখা গেছে ভাল ফল থাকার পরও শতকরা ২০% মানুষ ই যোগ ব্যায়াম করতে যেয়ে কখনো না কখনো আহত হয়েছে। 
https://europepmc.org/articles/pmc7044896/bin/bmjopen-2019-031848supp001.pdf


অগ্নিবীর যুক্তি দেয়, তারা লেখে,
যোগব্যায়ামকারীরা নিজ নিজ শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ীই কেবল যোগব্যায়াম করবে, যে ব্যায়মে প্রয়োজন নেই সেটা করবেনা এবং একজন অভিজ্ঞ যোগগুরুর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী করবে। এটাই আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বাভাবিক নিয়ম। আপনি চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ইচ্ছামতো খুশিমতো ওষুধ খেলে সাইড ইফেক্ট হলে দোষ তো আপনার, ওষুধের নয়। যেমন অনেক হাঁড়ক্ষয়ের রোগী, স্পন্ডালাইটিস এর রোগীকে প্রচলিত নামাজ পড়তে নিষিদ্ধ করা হয় এবং বলা হয় পড়লেও কেবল চেয়ারে বসে পড়তে পারবে। এখন যদি সেটা না করে ইসলাম ধর্মের হুবহু বিধি অনুসারে নামাজ পড়তে যায় সে আহত হবে, এবং প্রচুর মানুষ আহত হয়ও। তাহলে রুহুলের যুক্তি অনুসারে নামাজ পড়াও ক্ষতিকর এবং তা বর্জন করা উচিত, তাই নয় কি?

আমার জবাবঃ
উপরে যে নর্থ আমেরিকার ১৩০০ প্রধানতম যোগব্যায়ামের টীচারের সীকারোক্তি দেয়া হল যে তাদের স্টুডেন্টদের মধ্যে যোগব্যায়ামের ফলে মেরুদন্ডে, বাহুতে, জয়েন্টে ইনজুরি খুবই কমন বিষয়, এখন তবে এই বিশাল সংখ্যক যোগগুরু থেরোপিষ্টদের প্রেসক্রিপশন তো তাদের ভক্তদের কোন কাজে আসল না। তাদের ভক্তরা তো ঠিকই নানা ইনজুরিতে ভুগছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যোগ ব্যায়াম অবশ্যই চিকিৎসাবিজ্ঞানের কোন ওষুধের মত না। এটা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করতে গেলেও প্রচুর ইনজুরি হওয়া খুব কমন বিষয়।
মানুষের নিজের শারীরিক সক্ষমতা মানুষ নিজেই বেশিরভাগ সময় অনুধাবন করতে পারে না, অন্য একজন মানুষ এর পক্ষে তো তা দূরের বিষয় সে যত বড়ই যোগগুরু হোক না কেন। উল্টো বিভিন্নি সময় দেখা যায় বিভিন্ন যোগ গুরু নিজেরাই যোগ এর বিভিন্ন আসন ট্রাই করতে যেয়ে শরীরের রগ ছিড়ে ফেলছে।
https://www.goodmorningamerica.com/wellness/story/instagram-yoga-guru-suffered-stroke-tearing-artery-neck-61939841

আবার যোগব্যায়াম সম্পর্কে অগ্নিবীর টাইপের অ্জ্ঞ লোকদের ছড়ানো মিথ, যে যোগব্যায়াম সঠিকভাবে চর্চা করলে বা দক্ষ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে চর্চা করলে বা বিগেনার লেভেলে ধীরে ধীরে চর্চা করলে কোন ক্ষতি বা ইনজুরি হয় না, সঠিক নিয়মে যোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করলে এটি সম্পূর্ন সেইফ, এ ধরনের মিথ খোদ যোগ ব্যায়ামের প্রফেশনাল গুরু ও টীচাররাই নস্যাৎ করেছে। 
https://yogainternational.com/article/view/10-myths-about-yoga-injuries1

অগ্নিবীর এখানে আবার নামাজের প্রসঙ্গ নিয়ে আসল। এরা নিজেদের জ্ঞানের স্বল্পতায় বলতে চাইছে শারীরিক অসুস্থতার কারনে কেউ ‘প্রচলিত নামাজ’(!) বা ‘ইসলাম ধর্মের হুবহু বিধি অনুসারে নামাজ’(!) পড়তে না পারলে তার দোষ নামাজের কিনা। অগ্নিবীরের যে জ্ঞান নেই তা হল, ওজরের কারনে বসে নামাজ পড়া, শুয়ে পড়া, এমনকি ইশারায় নামাজ পড়াও প্রচলিত নামাজই এবং ইসলাম ধর্মের হুবহু বিধি অনুসারে নামাজই। আর এই বিধি সহী হাদিসেই আছে। রাসুলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন, দাঁড়িয়ে নামাজ  পড়ো, যদি না পারো তবে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো তবে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। (সহী বুখারি, হাদিসঃ ১০৫০) মুসলিমের শারীরিক অবস্থা যাই হোক না কেন, সে সব ভাবেই নামাজ পড়তে সক্ষম। এখন যোগ ইশারায় করার বিধান আছে কিনা এটা পারলে অগ্নিবীর তুলে ধরুক।

অগ্নিবীর সৌদির প্রসঙ্গ তুলে এনে মিথ্যাচার করে লেখে যে, সৌদি সরকার নাকি যোগ ব্যায়ামে মুগ্ধ হয়ে তাদের দেশে যোগ ব্যায়াম চালু করেছে, অথচ তাদের শেয়ার করা লিঙ্কেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে পুরো বিষয়টা ইন্ডিয়ান এম্বেসির প্রচেষ্টায় হয়েছে।  এখানে পুরো বিষয়টা কূটনৈতিক এবং ব্যবসায়িক। এটুকু বোঝার মত ব্রেন এইসব অগ্নিবীরের মত লোকদের নেই।

আবার জাতিসংঘও আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষনা করেছে, এতেও অগ্নিবীরের গর্বের শেষ নেই। জাতিসংঘ নাকি যোগের বৈজ্ঞানিক সফলতার স্বীকৃতি দিয়ে এটি ঘোষনা করেছে!  এই সব মূর্খদের জাতিসংঘের কর্মপর্দ্ধতি সম্পর্কে ধারনা নেই। জাতিসংঘ তার অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের কালচারকে প্রমোট করতে বিভিন্ন সময়ই এ ধরনের বহু দিবস ঘোষনা করে। এখানে যোগ দিবস ঘোষণা বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতির জন্য নয়, কালচারাল স্বীকৃতিরি জন্য। আর এটা কি জাতিসংঘ নিজ থেকে যেচে পড়ে দিয়েছে? আসুন দেখি, 
মূলত ২০১৪ সালে জাতিসংঘের অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদি যোগ ব্যায়ামকে তাদের কালচারের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক দিবস ঘোষনার জন্য কাকুতি মিনতি করে। আর এরপর জাতিসংঘ তা অনুমোদন করে। তাই জাতিসংঘ যোগের বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি দিতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষনা করে, এটি একটি মিথ্যাচার। জাতিসংঘ ঘোষনা করে ইন্ডিয়ান কালচারকে স্বীকৃতি দিতে এবং তাও নরেন্দ্র মোদির কাকুতি মিনতির পর। 


মুসলিম ফিলসফিষ্ট আল বিরুনি পতন্জলি যোগ সূত্র অনুবাদ করেছে, তা নিয়েও অগ্নিবীরের ফাল দেখার মত। আল বিরুনি একজন কমপ্যারেটিভ রিলিজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি পতন্জলী যোগের অনুবাদ করতেই পারেন। তাতে কি আসে যায়।

আবার গুগলে Yoga লিখে সার্চ করলে যেসব নগ্ন নারীদের ছবি আসে সে প্রসঙ্গে অগ্নিবীর বলল, সনাতন ধর্মে নাকি বলা আছে মাতৃবৎ পরদারেষু, অর্থাৎ সকল পরস্ত্রী নারী নাকি মা। আমার প্রশ্ন তাহলে বিয়ের আগে একজন মেয়ে তাদের মা। কিন্তু বিয়ের পরেই  হয়ে যায় বউ। এরমানে কি হিন্দুরা নিজেদের মাকে বিয়ে করে?  আবার সব নারী মা সমান হলে মায়ের নিকট সন্তানের অনেক আবদার থাকে। সন্তান মাকে জড়িয়ে ধরতে পারে, চুমু খেতে পারে। এখন সকল নারী যেহেতু মা তাহলে অন্য সব নারীকে মা বলে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করতে পারবে কি অ্গ্নিবীর ? মা বললেই কি মা হয়ে যায়? এ দ্বারা বোঝা যায় আপাতদৃষ্টিতে শুনতে মধুর কিন্তু যুক্তিহীন সনাতন ধর্মের বানি আর ফ্যাক্ট এক জিনিস নয়।অগ্নিবীর আবার দাবি করে নারীকে ভোগবস্তু ভেবে আমরা নাকি যোগ ব্যায়ামকে যৌন বিনোদনের উৎস বলেছি। আসুন দেখি কারা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে নারীকে ভোগবস্তু বানিয়ে যৌন বিনোদন করে।এখানে হিন্দু যোগগুরুদের যোগব্যায়াম শিখানোর মাধ্যমে ধর্ষন উৎসবের লিষ্ট দেয়া হল। 
https://en.wikipedia.org/wiki/Sexual_abuse_by_yoga_gurus

পরিশেষে বলতে চাই, শারীরিক সক্ষমতা অনুধাবন একটি দুরুহ কাজ। আর যোগ ব্যায়াম পুরোটাই অদ্ভুতুড়ে শারীরিক কসরত ছাড়া কিছুই নয়। তাই এতে উপকার থাকলেও এর ক্ষতির পারসেন্টিজ ও ইনজুরির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে এর থেকে দূরে থাকাই উত্তম। এর থেকে স্বাভাবিক জগিং, হাটা, সাঁতার, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ অনেক বেশি উপকারী এবং সেইফ। আর যেসব ভন্ড তাদের ধর্মের গুনগান গাওয়ার জন্য যোগ ব্যায়ামের প্রচার করে, তাদের থেকে সাবধান। বুঝতে হবে, পশ্চিমা বিশ্বে, হিন্দুদের ধর্ম প্রচারের প্রধান উপাদান হচ্ছে যোগ ব্যায়াম আর মেডিটেশন। ভবিষ্যতে মেডিটেশন নিয়েও আলোচনা করা হবে। 











রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৭

ব্রাক্ষা স্বরস্বতির ইনচেষ্ট নিয়ে হিন্দুদের গোড়ামীর জবাব

হিন্দু ধর্মে ইনচেষ্টের রগরগে কাহিনির কথা সবাই ই জানেন।তবে কিছু  হিন্দুরা, এইসব ইনচেষ্টের একটা আধ্যাত্তিক ব্যাখা দেয়ার চেষ্টা করে, বলে এগুলার রুপক ব্যাখা আছে, আধ্যাতিক ব্যাখা আছে, ইত্যাদি। 
আগে আসুন দেখি এক নজরে বাপ মেয়ে তথা ব্রক্ষা স্বরস্বতির ইনচেষ্টের কাহিনিগুলো ,
ভগবত পুরাণ ৩।১২।২৮ তে উল্লেখ আছে-
“বাচং দুহিতরং তন্বীং স্বয়ম্ভুর্হরতীং মনঃ।
অকামাং চকমে ক্ষত্তঃ সকাম ইতি নঃ শ্রুতম।।২৮
ব্যাসদেব বলছেন “হে বিদুর! ব্রহ্মার কন্যা সরস্বতী(যেহেতু সরস্বতী ব্রহ্মার মুখ হইতে উৎপত্তি লাভ করেছিলেন সেই অর্থে ব্রহ্মার কন্যা,
ভগবত পুরাণ ৩।১২।২৬)অতীব মনোহারিণী সুন্দরী ছিলেন, আমি শুনেছি যে একদা নিজকন্যাকে দেখে ব্রহ্মা কামগ্রস্থ হয়েছিলেন যদিও সরস্বতী নিজে কামভাবরহিতা ছিলেন”
ভগবত পুরাণ ৩।১২।২৯
“পিতাকে এই রকম অধর্মজনক কুকর্মে আসক্ত দেখে তাঁর পুত্র মরীচিপ্রমুখ মুনিগণ সবিনয় বচনে বুঝিয়েছিলেন”
গবত পুরাণ ৩।১২।৩০
“হে পিতা! আপনি অসীম প্রভাবশালী হয়েও আপনার মনে উৎপন্ন কামবেগ সংবরণ না করে নিজ কন্যার প্রতি কামাভিলাষ পূরণের মতো যে দুস্তর পাপকর্মে উন্মুখ হচ্ছেন, আপনার পূর্ববর্তী কোনো ব্রহ্মাই (শ্রেষ্ট ব্যক্তি) তো এমন কর্ম অতীতে করেননি আর ভবিষ্যতেও করবেন না।
ভগবত পুরাণ ৩।১২।৩৩
“নিজপুত্র মরীচি প্রভৃতি প্রজাপতিদের এইরকম বাক্য প্রয়োগ করতে দেখে প্রজাপতি পিতা ব্রহ্মা অত্যন্ত লজ্জিত হলেন এবং ব্রীড়াবশত তাদের সামনেই নিজ দেহ পরিত্যাগ করলেন। তখন ব্রহ্মার পরিত্যক্ত সেই নিন্দনীয় শরীরটি দিকসকল গ্রহণ করল। সেটিই কুয়াশা-রূপে পরিণত হল, যাকে অন্ধকারও বলা হয়”
অতঃপর অত্যান্ত অশ্লীল ও ইনচেষ্ট এর এই রগরগে বর্ননা দেয়া ঘটনাগুলোকে হিন্দুরা আধ্যাত্তিক বর্ননা দেয়ার চেষ্টা করে ।
হিন্দুরা লিখে,

এই বিষয় টা দেখে খুব খারাপ ও কুরুচিকর মনে হচ্ছে, এটা তাদের চোখেই খারাপ ও কুরুচিকর মনে হবে যাদের দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই। কারণ আধ্যাত্মিক জ্ঞানের দৃষ্টিতে এর ব্যাখা টাই সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে। আর পুরাণে অধিকাংশ বিষয় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়। মৎস্য পুরাণ ও ভগবত পুরাণ উভয় স্থানে মনু ও ঋষিসমূহ এর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন।
মৎস্য পুরাণের ক্ষেত্রে ভগবান মৎস্য তার উত্তরে বলেছেন – “এই সৃষ্টি রজগুণ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে” যার জন্য স্বয়ং ব্রহ্মা মানে এখানে পৌরানিক ব্রহ্মা রজগুণের প্রতিক, এখানে ব্রহ্মা কোনো ভগবান বা ঈশ্বর নয় 
ব্রহ্মা হল সর্বগুনেশ্বর”, তাই এখনে এই ঘটনায় ব্রহ্মা হল গুণবাচক রজগুণ, আর এই রজগুণের জন্য মানুষের মনে মোহ,কাম ও লোভের উৎপন্ন হয়।
যা এখানে হয়েছে “শতরূপার রূপ দেখে ব্রহ্মা কামার্ত হয়ে পড়লেন”। এখানে শতরূপা হল “সাকার শতসৌন্দর্যের” প্রতিক। আর এটা স্বাভাবিক যে কোনো শতসৌন্দর্যময় জিনিসে প্রতি মানুষের রজগুনের দরুন সেই তার দিকে আকৃষ্ট হবেই। এখানে মানুষের এই রজগুন কে এই ঘটনাতে ব্রহ্মা বলে তুলনা করা হয়েছে এবং শতরূপা হল “সাকার শতসৌন্দর্যময়
পুরুষ মানুষের স্বিয় স্বভাব(ব্যাতিক্রম-যোগীপুরুষ ছাড়া)কোনো সেক্সি,হট,রূপসী মেয়েকে দেখলে পুরুষ মানুষের নিজ রজগুনের দরুন সেই মেয়ে কে দেখে কামগ্রস্থ হয়ে পড়ে এবং তার রূপ কে বিভর ভাবে দেখতে থাকে, আর ভাবে - ইস! যদি এটা আমার গার্লফ্রেন্ড বা বৌ হতো!
মৎস্য পুরাণের ঘটনাটা ঠিক তাই, ব্রহ্মা হল এখানে মানুষের মনের সেই রজগুন ।


আমার জবাবঃ

এভাবে তো চটির মধ্যেও আধ্যাত্তিক বা শিক্ষনীয় জ্ঞান খোজা যেতে পারে। ধরে নিই, কলি নামক চৌদ্ধ বছরের বালিকা ৫০ বছরের এক ব্যাক্তির সাথে সেক্স করল। অতঃপর স্থানে স্থানে সেই কামলীলা ও কামকেলীর বর্ননা। অতঃপরের কাহিনি মেয়ে গর্ভবতী, মেয়ের বাবা মা মেয়েকে দোষারপ করল ও মেয়ে আত্তহত্যা করল।
এখন এই কাহিনিতেও তো শিক্ষনীয় আছে যে এভাবে অবাধ সেক্স করা উচিত নয়। কিন্তু এই শিক্ষা দিয়ে কি এখানে কামকেলির বর্ননা পবিত্র হয়ে যাবে ? বা এই চটি সাহিত্য আধ্যাত্তিক হয়ে যাবে ?
মোটেই না।
অবাধা যৌনতা খারাপ এটা বুঝাতে কি বাপ মেয়ের ইনচেষ্টের কাহিনি আনতে হয় ? এটা সত্যিই অবাক করা বিষয়। প্রাচীন মুনিরিষিদের গাজার প্রকোপে বিভিন্ন দার্শনিক খেয়াল আসত, যেহেতু তাদের মনে থাকত অবমিত কাম তো স্বাভাবিক সেই দার্শনিক ব্যাখাকেও তারা কামলীলা ছাড়া ব্যাখ্যা করতে পারত না।
আর হিন্দুদের মতে এখানে ব্রক্ষা মানে নাকি ব্রক্ষা না বরং সাধারন ব্যাক্তি। বা স্বাভাবিক মানুষের চরিত্র। উল্লেখ্য পুরাণ অনুসারেও কিন্তু ব্রক্ষা ঈশ্বর নয় বরং একজন দেব সত্তা যিনি মহাজগতের সকল জীবের প্রধান। ঋগবেদ পুরুষসুক্ত অনুসারে তার দেহ থেকেই সকল জীব ও মহাজগতের সৃষ্টি। পুরাণ অনুসারে মহাবিশ্ব সৃষ্টি তার অন্ডকোষ হতে তাই এর আরেক নাম ব্রক্ষান্ড। বিভিন্ন জায়গায় ব্রক্ষার অবস্থানও বিভিন্ন বলা হয়েছে। আসুন দেখি স্বামী প্রভুপাদ এই মন্ত্রে ব্রক্ষার ব্যাপারে কি বলেছেন,
The post of Brahmā is the supermost post in the universe, and it appears that there are many Brahmās and many universes besides the one in which we are situated
http://www.vedabase.com/en/sb/3/12/30
তাহলে এত সন্মানীয় একজন সত্তাকে নিয়ে ইনচেষ্ট রচনা করে কেন মানুষকে বুঝাতে হবে যে অবাধ যৌনতা উচিত নয় ? এতে কি মানুষকে বুজানো হবে না বরং উতসাহ দেয়া হবে ?
বরং তখন তো উলটো হবে, যে, যেহেতু এত সন্মানিত একজন করেছে তাহলে আমরা করতে বাধা কোথায় ?
তাই ইনচেষ্ট এর মাধ্যমে নৈতিকতা শিক্ষা এটা সম্ভবত একমাত্র হিন্দু ধর্মেই পাওয়া যায়। 

শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭

কাবাশরীফ নিয়ে হিন্দুদের মিথ্যাচারের জবাবঃ

অনলাইন এবং রিয়াল লাইফেরও কিছু হিন্দুরা একটা কথা প্রায়ই মুসলিমদের মুখের উপর বলে, যে কাবা শরীফ নাকি ছিল শিব মন্দির। কিছু কিছু মুর্খ হিন্দু আবার এক ধাপ এগিয়ে বলে ওটা নাকি এখনো শিব মন্দিরই আছে, মুসলিমরা লুকিয়ে লুকিয়ে নাকি সেখানে শীবের পুজা করে। প্রকৃত পক্ষে এদের সমালোচনা করার ভাষা আমার জানা নেই। এরা নিজেরা নির্লজ্জতার মাথা খেয়ে শীব লিংগ পুজা করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আবার সেই লজ্জা ঢাকতে মুসলিমদের কাবাকে শীব লিংগ এর সাথে তুলনা করে। অনলাইন থেকে এলোপাথারি কিছু ছবি এনে কপিপেষ্ট করে এরা মিথ্যাচার করে। এদের মিথ্যাচারময় দাবীগুলো এখন তুলে ধরা হবে। এদের মিথ্যাচারের প্রধান বিষয় হচ্ছে হাজরে আসওয়াদ বা কালা পাথরটি। এরা বলতে চায় এটাই নাকি শীবলিংগ। মূলত যার চোখ আছে এবং হালকা বুদ্ধি আছে এমন কোন মানুষ জীবনেও এ কথা বলবে না। নীচে হাজরে আসওয়াদ এবং একটি শীবলিংগের ছবি দেয়া হল, দেখুন তো দূর দূর হতেও কোন মিল আছে কিনা ?

 
এরপর দ্বিতীয় নিকৃষ্ট মিথ্যাচার যেটা করে সেটা হচ্ছে হাজরে আসওয়াদকে যোনীর সাথে তলনা (নাউজুবিল্লাহ)। তারা বলে এটা নাকি দেখতে স্ত্রী যোনীর মত। আসলে হিন্দুরা যে শুধু শীবলিংগের পুজা করে এমনটা নয়, বরং সেই সাথে তারা যোনীর পুজাও করে। শীবলিংগটি যেটার উপরে বসানো থাকে এটি একটি স্ত্রী যোনী। পৌরানিক ভাষ্যমতে এটি হচ্ছে পার্বতীর যোণী, যাক গে সেসব বিষয়ে না যাই। তবে হিন্দুরা সাদৃশ্য দেখিয়ে বলতে চায় যে হাজরে আসওয়াদ হচ্ছে যোণি এবং মুসলিমরা যোনীর পুজা করে। প্রকৃতপক্ষে হাজরে আসওয়াদ পাথরটি কোনভাবেই স্ত্রী যোনীর সাথে মেলে না। গুগলে হাজরে আসওয়াদ লিখে সার্চ দিলে যে ছবিটি আসে সেটি হচ্ছে পাথরটির একটি দিক মাত্র। উপরে যে ছবিটি দিয়েছি সেটাই দেখুন, মূলত পাথরটির চারপাশে স্টিলের পাত বসানো, যাতে এটা ক্ষয়ে না যায়। মূল পাথরটি ভিতরে। হাজরে আসওয়াদ এর মূল টুকরো পাথরটির আকার এবার দেখুন নীচের ছবিতে, ছবিটি উইকিপিডিয়া হতে নেয়া, নিজেরাই যাচাই করুন এটা কোনভাবে স্ত্রীযোনীর সাথে মিলে কিনা,

উইকিপিডিয়া লিংক https://en.wikipedia.org/wiki/Black_Stone

একিসাথে উইকিপিডিয়াটি ভালো করে পড়ুন তো, কোথাও কোন প্রমান পান কিনা যে হাজরে আসওয়াদ শিবলিংগ বা কাবা শরীফ কোনকালে শীব মন্দির ছিল? আর হিন্দুদের ওপেন চ্যালেঞ্জ, কেউ এমন কোন ঐতিহাসিক প্রমান দিতে পারবে যে কাবা শীব মন্দির ছিল ? ওপেন চ্যালেঞ্জ। কাবায় তো দূরে থাক, সারা সৌদি আরবে কোথাও জীবনে শীব মন্দির পাওয়া গেছে কিনা পারলে কেউ প্রমান দেখাক।


এরপর মুসলিমরা কাবার পুজা করে এই মর্মে হিন্দুরা বেশ কিছু যুক্তি দেয়, সেগুলোর যৌক্তিকতা বিচার করা হল। হিন্দুদের যুক্তিঃ মুসলিমরা কাবার দিকে ফিরে নামাজ পড়ে, আবার হজের সময় তার চারদিকে তাওয়াফ করে, এগুলো কি মুর্তি পূজা নয়? যৌক্তিকতা খন্ডনঃ কাবা আমাদের কেবলা। আর কেবলা অর্থই হচ্ছে দিক নির্দেশ। অর্থাৎ কেবলা আমাদের দিক নির্দেশ মাত্র। এর দিকে ফিরে বিশ্বের সব মুসলমানকে নামাজ পড়ার আদেশ দেয়া হয়েছে, যাতে সবার মধ্যে একতা থাকে। যদি দিক নির্দেশ না থাকে, তবে দেখা যাবে একজন নামাজ পড়বে দক্ষনে একজন উত্তরে, এভাবে গন্ডগোল লেগে যাবে। এজন্যই ইউনিটির জন্য কাবাকে কিবলা বা দিক নির্দেশ ধরা হয়েছে। আর কাবার দিকে ফিরে নামাজ কখনোই মুর্তি পুজার সাথে তুলনীয় হতে পারে না। কারন সুদুর সৌদি আরবে অবস্থিত কাবার পুজা মানুষ পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে বসে করছে, এটা চিন্তা করতে গেলেও হাস্যকর মনে হয়। ধরুন কখনোকি এমন দেখেছেন কোণ হিন্দুকে, মুর্তি রয়েছে গৌহাটি, আর সে কেরালায় বসে প্রনাম দিচ্ছে ? দেখেন নি, তাই না ? তাহলে নামাজকে কিভাবে কাবার পুজা বলা যায় ? এরপর তাওয়াফের ব্যাপারে বলছি, মুসলিমরা তাওয়াফ করে আল্লাহর একত্ববাদ প্রদর্শনের জন্য। তারা কখনোই তাওয়াফ দ্বারা কাবার পুজা করে না। মুসলিমরা এমনকি কাবার মধ্যে ঢুকেও নামাজ আদায় করে। আবার প্রাক ইসলামী যুগে কাবার উপর দাড়িয়েও আজান দেয়া হত। তাহলে চিন্তা করুন যার পুজা করছে তাকে কি কেউ নিজের পায়ের নিচে রাখে ? যদি মুসলিমরা কাবার পুজা করত তবে কাবার উপর পা দিয়ে উঠে দাড়াতো ? হিন্দুরা কি পারবে তাদের মুর্তির মাথায় পা দিয়ে দাড়াতে? তাই হিন্দুদের এসব কোন যুক্তিই ধোপে টিকে না। হিন্দুদের যুক্তিঃ মুসলিমরা হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেয়, আর এটিও মুর্তি পুজার সদৃশ। যৌক্তিকতা খন্ডনঃ ইসলাম মতে কাবার পাথরটি দিক নির্দেশনের জন্য আল্লাহ আদম আঃ কে প্রেরন করেছিলেন স্বর্গ হতে। অর্থাৎ পাথরটি ইহজাগতিক কোন পাথর নয়। আর মিরাকলের বিষয় হচ্ছে, বিজ্ঞানীরাও গবেষনা করে দেখেছেন যে কাবার এই পাথরটি আসলে পৃথিবির কোন পাথর নয়, বরং এটি উল্কার মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা।আর্কিওলজিষ্ট Paul Partsch গবেষনা করে এমনোটাই ব্যাখা দিয়েছেন। বিস্তারিত জানতে উইকিপিডিয়া হতে এর Scientific origins অংশটি পড়ুন, https://en.wikipedia.org/wiki/Black_Stone । তাই মুলত মুসলিমদের এই কালো পাথরটির চুমু দেয়াটা আর কিছুই নয়, বরং স্বর্গীয় একটি পদার্থকে স্পর্শ করার মাত্র। মুসলিমরা কখনোই এটিকে পুজা করে না। আর চুমু দেয়া মানেই কি পুজা? চুমু দেয়া কখনোই প্রতিমা পুজা হতে পারে? কখনো কি দেখেছেন কোন হিন্দুদের মন্দিরে গিয়ে দেবীদের চুমাচুমি শুরু করতে ? তাহলে এধরনের বক্তব্য তারা কিভাবে দেয়? মানুষ তো ভালোবেসে শিশুকেও চুমু দেয়, তারমানে কি শিশুটির পুজা করে? হিন্দুদের যুক্তিঃ হজ্জের সময় মুসলিমরা সবাই সাদা কাপড় পড়ে এটাও প্যাগান সংস্কৃতির সাথে মিলে। যৌক্তিকতা খন্ডনঃ আমি আসলে জানি না, সাদা কাপড় পড়া কোথাকার প্যাগান সংস্কৃতি তবে বলি, হজ্জ্বের সময় সাদা কাপড় পড়া হয় যাতে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ না থাকে সেখানে। মানুষ অপর একজন মানুষকে আলাদা করে ফেলে তার পোশাক আসাক দেখে। পোশাক দেখেই আমরা বলতে পারি কে গরীব কে ধনি, কে আফ্রিকান কে ইউরোপিয়ান। কিন্ত মানুষে মানুষে এই ভেদাভেদ যাতে না থাকে এজন্যই হজ্জের সময় সবাই সাদা কাপড় পড়ে। কোন প্যাগান সংস্কৃতিতে মানব সমতার এরকম দর্শন আছে কিনা আমার জানা নেই। হিন্দুদের যুক্তিঃ মক্কায় মুসলিমরা শয়তানকে পাথর মারে প্রতীক কল্পনা করে। আর এটাও মুর্তি পুজা সদৃশ। যৌক্তিকতা খন্ডনঃ ইসলামে একমাত্র আল্লাহ তালার সাথে কোন প্রকার শরীক করতে নিষেধ করা আছে এবং তার মুর্তি, প্রতীক বা কোন কিছুর সহিত তুলনা করতে নিষেধ করা আছে। কিন্তু এই নিয়ম শয়তানের জন্য নয়। ইসলাম প্রতীকি কর্মে অবিশ্বাসী নয় বরং শুধু সৃষ্টার প্রতীক তৈরিতে অবিশ্বাসী। আর একিসাথে পুজা আর পাথর মারা এক কিভাবে হল ? এটি তো সম্পুর্ন বিপরীত দুটি বিষয় ? তাই মক্কায় শয়তানকে পাথর মারা কোনভাবেই মুর্তি পুজার সাথে মেলে না। পরিশেষে বলব যারা শুধু এই জাতীয় যুক্তি প্রদান করে তারা আসলে কখনো সত্য জানার চেষ্টা করেনা বোঝার চেষ্টাও করে না। তারা নিজেরাই নিজেদের গোমরাহী করে। সত্য তাদের ধরাছোয়ার অনেক বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে এবং নিজেরা অজ্ঞতার অন্ধাকারে নিমজ্জিত হয়।

মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭

অশ্বমেধ যজ্ঞ শঙ্কা সমাধান, নাকি শঙ্কা বৃদ্ধি ?

উগ্রবাদি হিন্দু ওয়েবসাইট “অগ্নিবীর” আমার লেখা নোট অশ্বমেধ যজ্ঞ কে রিফিউট করার হাস্যকর চেষ্টা করেছে। নোটের শুরুতেই সনাতনী হিন্দু অর্থাৎ যারা আর্য সমাজের না তাদের প্রতি অগ্নিবীরের খোটাটা নজরে আসল। উগ্রবাদীর বক্তব্য ছিল আমার পোষ্ট এর জবাব অন্য সনাতনীরা কেন দিচ্ছে না ? মূলত সনাতনী অন্য ভাইয়েরা খুব ভাল করেই শাস্ত্রের জ্ঞান রাখে, তাই আমি যখন পয়েন্ট বাই পয়েন্ট শাস্ত্র থেকে রেফারেন্স দিয়েছি তারা এটা মেনে নিয়েছে। কারন এরা অগ্নিবীরর মত শাস্ত্রবিমুখ নয়। আর অশ্বমেধযজ্ঞ নিয়ে ফানাটিক সাইট অগ্নিবীরের লোকেরা যে পুর্বের পোষ্টে তুমুল মিথ্যাচার করেছে তা আমি পুর্বের নোটে প্রমান করেছি। যাক গে উগ্রবাদি মিথ্যাবাদীর আমাকে রিফিউট করা নোটের পয়েন্ট গুলো পর্যবেক্ষন করা যাক।

উগ্রবাদি অগ্নিবীর লেখে,
মূর্খ জিহাদি লিখেছে, “তিনি মুলত শাস্ত্রীয় বচনের বিরুদ্ধে গিয়েই তিনি বেদের অনুবাদ হতে অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছেন।” হাহাহা, মহর্ষি নাকি বেদের অনুবাদ থেকেই অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছে। এটা কি করে সম্ভব? ঋগবেদ ১/১৬২-১৬৩ এবং যজুর্বেদ ২২-২৫তম অধ্যায় অশ্বমেধ প্রকরণ নামে পরিচিত। মহর্ষি অশ্বমেধ প্রকরণ তো দূরে থাক একটি মন্ত্রেরও অর্থ বাদ দেন নি। )
আমার জবাবঃ
কথার একটি সামান্য ভুলকে এদের তিলকে তাল বানানোর কোন জুড়ি নেই। আমি বলেছিলাম “তিনি মুলত শাস্ত্রীয় বচনের বিরুদ্ধে গিয়েই তিনি বেদের অনুবাদ হতে অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছেন।” এখানে অশ্বমেধ যজ্ঞকে বাদ দিয়েছেন বলতে বুঝিয়েছি সেই রানীকে ঘোড়ার সাথে শয়ন , ঘোড়া হত্যা, ও তারপর ঘোড়ার লিংগ মর্দনকে। এটি না বোঝার কিছু নেই। কারন প্রথম লাইনেই আমি লিখেছ, “স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতি কোন শাস্ত্রীয় বচনের দ্বারা কারো অনুবাদকে বাদ দেয় নি।” তাই এখানে আমার মুল বক্তব্য না বোঝার কিছু নেই।
উগ্রবাদির লেখাঃ
বরং তিনি (স্বামী দয়ানন্দ) অশ্বমেধ প্রকরণের যথার্থ আধ্যাত্মিক অনুবাদ করেছেন যার প্রশংসায় পঞ্চমুখ গায়ত্রী পরিবারের পণ্ডিত রাম শর্মা, পণ্ডিত ভগবতী শর্মা, অরবিন্দ আশ্রম এবং স্বয়ং ঋষি অরবিন্দ। (দ্রষ্টব্য: যজুর্বেদ হিন্দি অনুবাদ, ভূমিকা পৃষ্ঠা ৬-১৩, গায়ত্রী পরিবার এবং ঋষি অরবিন্দ লিখিত “ Dayananda and Vedas”
আমার জবাবঃ
মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে অগ্নিবীর যাদের নাম বলল আমি যদি তাদের বেদ অনুবাদ অগ্নিবীরকে এনে দেই, অগ্নিবির কি তা মানবে ? যেমন পন্ডিত রাম শর্মা যিনি গায়েত্রী পরিবারের তার করা বেদ এর অনুবাদে কিন্ত স্পষ্টভাবে পশু বলির কথা আছে ? এখন ফানাটিক অগ্নিবার কি তা মানবে ?
আর অগ্নিবীরের কাছে প্রশ্ন রাম শর্মা বা অরবিন্দ বড় বৈদিক পন্ডিত নাকি স্বামী বিবেকানন্দ ? যে ম্যাক্স মুলার ও গ্রিফিন্থএর অনুবাদকে অগ্নিবীর তুচ্ছতাচ্ছুল্য করে আসুন দেখি তাদের অনুবাদ প্রসংগে স্বামী বিবেকানন্দ কি বলেছেন,
প্রথমেই আচার্য সায়ন যার অনুবাদও ফ্যানাটিক অগ্নিবীর মানে না তার প্রসংগে স্বামীজি কি বলেছেন, তা দেখি,
Sometimes while explaining the arguments of Sayana to establish the eternity of the Vedas, Swamiji was praising very highly the commentator’s wonderful ingenuity; sometimes again while arguing out the deeper significance of the doctrine, he was putting forward a difference in view and indulging in an innocent squib at Sayana.
ম্যাক্স মুলার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের বক্তব্যঃ
“do you know, my impression is that it is Sayana who is born again as Max Müller to revive his own commentary on the Vedas? “
তিনি আরো বলেন,
after I had seen Max Müller. Even here in this country, you don’t find a scholar so persevering, and so firmly grounded in the Vedas and the Vedanta.
[ Complete work of Swami Vivekananda, vol 6]

সরাসরি পড়ুন,
http://www.ramakrishnavivekananda.info/vivekananda/volume_6/conversations_and_dialogues/ix_sharat_chakravarty.htm
ম্যাক্স মুলার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের এরকম বক্তব্যের পরো কিভাবে অনলাইন স্বামীজী অগ্নিবীর ম্যাক্স মুলারকে গালি দেয় ? এইসব ছালহীন অনলাইন উগ্র হিন্দুরা কি বেদ স্বামী বিবেকানন্দের থেকেও বেশী বুঝে ?
এরপর অগ্নিবীর “অধ্বর” শব্দের অর্থ চন্দ্রশেখর উপাধ্যায় নামক একজন লেখকের বই বৈদিক শব্দগ্রন্থ থেকে দেখানোর চেষ্টা করল যা হাস্যকর ছাড়া আরকি ? একটি শব্দের মুলত অনেক অর্থ থাকতে পারে। এক্ষত্রে সঠিক অর্থটি বাছাই করা হবে অবশ্যই প্রাসংগিক শাস্ত্র হতে। আর আমি যযুরবেদের প্রাসংগিক শাস্ত্র ও শাখা হচ্ছে শতপথ ব্রাক্ষন যাকে বৈদিক যজ্ঞের ব্যাখা বলা হয়, সেখান থেকে অধ্বর এর অর্থ দেখালাম তবুও ফানাটিকরা মানছে না। এদেরকে আর কি বলা যায় ? শতপথ ব্রাক্ষনের ১/৪/১/৪০ এ, এখানে বলা আছে, যজ্ঞের সময় যজ্ঞকারী ব্যাক্তি ক্ষতিসাধিত হতে পারে না। এজন্যই এর নাম অধ্বর, এখানে পশু হত্যা হবে না এই সেন্সে অধ্বর এমন কোন প্রকারের কথা নাই কারন বেদ খুব স্পষ্টভাবে যজ্ঞে পশু হত্যার বিধান দিয়েছে। যা শুধু আর্য সমাজীরা ছাড়া সকল স্কলাররাই মানে। যেমন অগ্নিবীর ফ্যানাটিক উপরে যে চারজন বেদ স্কলারদের নাম বল তাদের থেকেই একটা প্রমান দিচ্ছি, যেমন গায়েত্রী পরিবারর শ্রীরাম শর্মা , দেখুন তিনি ঋগ্বেদ ১০/২৭/১৭ এ কি অনুবাদ করেছেন,
Sri ram sharma
“বুড়ো নে বলশালী মেষকো পরিপাক কিয়া”
এখানে मेष (মেষ)=ভেড়া
पचत(পাচত)= রান্না
দেখুন গায়েত্রী পরিবারের অনুবাদ এবং বেদের মুল সংস্কৃততেও একেবারে স্পষ্ট আছে। এরপরো অগ্নিবীর নামধারীরা এরকম মিথ্যাচার করে কিভাবে যে যজ্ঞে পশু বলি নাই ?
এরপর অগ্নিবীর জোকার যা করল তা হচ্ছে সবচেয়ে হাস্যকর। সে মহাভারত দিয়ে প্রমান দিতে চাইল যে যজ্ঞে পশু বলি নাকি মানা। চিন্তা করুন যেখানে আমি মূল শাস্ত্র ধরে ধরে প্রমান দিচ্ছি সেখানে সে প্রমান দিচ্ছে মহাভারত বা উপন্যাস, গাথা থেকে ? আবার রেফারেন্স দেয়ার পরে শেষে লিখল,
“তাই এটা সহজেই অনুমান করা যায় যেসব গ্রন্থে যজ্ঞে পশুবলির আয়োজন রয়েছে সে অংশ প্রক্ষিপ্ত বা বিকৃত”
তারমানে কি ? অগ্নিবীরের কাছে প্রধান গ্রন্থ মহাভারত, যে সে এর আধারে সব গ্রন্থকে প্রক্ষিপ্ত বলল ? তাহলে উপরে যে বেদ থেকে যে পশু বলির রেফারেন্স দিলাম তারমানে বেদও প্রক্ষিপ্ত ? :O 
যতদুর জানি আর্য সমাজীরা মহাভারত এর মত রুপকথা মানে না। তাহলে অগ্নিবীর এটা থেকে কেন দিল রেফারেন্স ? এটা পিক এন্ড চুজের কি সর্বোচ্চ সীমা হয়ে গেল না ? এখন যদি আমি এই মহাভারত থেকেই প্রমান দেই যে যজ্ঞে পশু বলির কথাও আছে, তাহলে এই ফ্যানাটিক কি করবে ? যেমন
মহাভারত খন্ড ৩, বনপর্ব, নীচে কিশোরী মোহোন গাংগুলীর অনুবাদ
mahavarat 3
আরো দেখুন গরু উতসর্গের কথাও আছে একি বন পর্বে,
mahavarata khnda 3 bana parba
আর যে অশ্বমেধযজ্ঞ নিয়ে কথা হচ্ছে, অগ্নিবীর ফ্যানাটিক কি জানে না যে মহাভারতে এই অশ্বমেধ যজ্ঞের কথাও আছে যেখানে ঘোড়াকে কেটে কুটে খাওয়ার কথাও আছে ? মহাভারত অশ্বমেধ পর্ব, সেকশন ৮৯, অনুবাদ কিশোরী মোহন গাংগুলী
Aswamedha
অগ্নিবীর নামক উগ্র হিন্দুরা যে মিথ্যাচারের বেসাতী খুলেছে অনলাইনে হিন্দুদের ধোকা দিতে, এ ব্যাপারে কি কারো কোন সন্দেহ আছে ?
এরপর অগ্নিবীর আমার দেয়া বেদের সংস্কৃত মুল অংশকে রিফিউট করার চেষ্টা করল, আসুন দেখি সে কি করল।
সে এখানে রেতোধা কে লিখল পরাক্রমশালী এবং রেতোকে লিখল পরাক্রম।
আমি মুল সংস্কৃত ডিকশানারী থেকে স্ক্রীনশট দিচ্ছি। রেতো মানে কি ?
Dictionary
[The Student’s English-Sanskrit Dictionary, page 384]
অর্থাৎ রেতো মানে হচ্ছে সিমেন বা বীর্য, রেতোধা মানে হচ্ছে গর্ভাধারন আর দধাতু মানে ধারন করা। অর্থাৎ এই মন্ত্রে খুব স্পষ্টভাবে বলা বীর্য ধারনপুর্বক গর্ভধারন এর কথা। কার বীর্য ? ঘোড়ার বীর্য । এরপুর্বে লাইনেই আছে বৃষ বাজী। এখানে অগ্নিবীর বৃষা কে বলবান অনুবাদ করলেও বাজীকে ঘোড়া অনুবাদ না করে , করেছে বীরপুরুষ। অথচ বাজী অর্থ যে ঘোড়া এ কথা কে না জানে ? ক্লাস ফাইভের ব্যাকারন বইটা চেক করলেও পাওয়া যাবে।
এরপর অগ্নিবীর ইনিয়ে বিনিয়ে বলল বৈদিক শব্দ বোঝা কত কঠিন তা । কিন্তু সে কোন বৈদিক শাস্ত্র হতে রেত এর অর্থের রেফারেন্স দেখালো না।
আসুন দেখি তৈতরীয় সংহিতা বা কৃষ্ণা যযুরবেদ এ কি আছে,
(উল্লেখ্য কৃষ্ণা যযুরবেদ হচ্ছে যযুরবেদ এরই আরেক অংশ যেটা আর্য সমাজীরা মানে না। আবার দক্ষিন ভারতের ব্রাক্ষনরা যযুরবেদ হিসেবে এটাকেই মানে। এখানে বেদ এর অথেনটিসিটি নিয়ে খোদ হিন্দুদের মধ্যেই বিভিন্ন মত প্রতীয়মান)
কৃষ্ণা যযুরবেদ ৭/৪/১৯ এ আছে,আমি মূল সংস্কৃত দিচ্ছি ও নীচে স্ক্রীনশট
সংস্কৃত বিশেষজ্ঞরাই যাচাই করুক,
krishna yajurveda
এবার উগ্রবাদি লিখল,
গোবধ যেমন বেদে নিষিদ্ধ তেমনি ঘোড়া হত্যা করাও বেদে নিষিদ্ধ। অথর্ববেদের ৮/৩/১৫ তে বলা আছে,”
oooooooooooooo
আমার জবাবঃ
এই ফ্যানাটিক বোধহয় জীবনেও নিজের ধর্মগ্রন্থ ঠিকমত পড়ে নাই। অথবা পড়েও মিথ্যাচার করছে। সে যে অথর্ববেদের ৮/৩/১৫ এর রেফারেন্স দিল যে এখানে ঘোড়ার মাংস ও গরুর মাংস খাওয়া নিশেধ সে কি এই সুক্তের কনটেক্সট আদৌ পড়েছে ? এই শুক্তে বহিঃশত্রু হতে দেশ আক্রমনের প্রেক্ষিতে অগ্নির কাছ প্রার্থনা করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে মন্ত্রগুলা পড়লেই তা দেখা যায়, যেমন ৭,৮,৯,১০ ও ১৪ নাম্বার মন্ত্রগুলা দেখলেই তা পরিস্কার হয়। ফ্যানাটিক যে ১৫ নাম্বার মন্ত্র দিল, ঠিক সেখানেই খেয়াল করুন স্পষ্টভাবে গরুর দুধ গ্রহনকারীর কথাও আছে এবং তাকেও একি শাস্তি দেয়ার কথা আছে। তার মানে কি গরুর দুধ খাওয়াও বেদের নিষেধ ? এটি আরো স্পষ্ট আছে ১৭ নাম্বার মন্ত্রে, এখানে বলা গরুর দুধ যে খায় তার বুকে বর্শা মারার কথা।
ppppppppppppppp
pppppppppp
এখন এই মন্ত্রগুলোর অর্থ সার্বজনীনভাবে নিলে ফানাটিক কি বলবে যে বেদ অনুসারে দুধ খাওয়াও মানা ? তাহলে গরুকে মায়ের আসনে বসায় তারা যে  যুক্তিত্‌  যে , শিশু গরুর দুধ খায় এজন্য গরু মা এর মত, সেই যুক্তিই তো এখানেই ভুপাতিত হয়ে যায়।কারন সেক্ষেত্রে তো শিশু তো দুধই খেতে পারবে না এবং প্রত্যেক শিশু ও তাদের বাবা মা বেদ অনুসারে খারাপ দুশ্চরিত্র ও হত্যার যোগ্য বলে গন্য হবে। এখন বেদ সম্পর্কে অজ্ঞ এসব ফানাটিক হিন্দুরা কি বলবে ?
উগ্রবাদি আবার লিখল, যেখানে আমি বেদ থেকে পুরান মানার কথা বলেছি,
“ব্রাহ্মণ গ্রন্থেরই অপর নাম ইতিহাস, পুরাণ, কল্প, গাথা ও নারাশংসী।” অর্থাৎ বেদে উল্লিখিত পুরাণ হচ্ছে ব্রাক্ষণ গ্রন্থ।
এখন তাহলে সেই বেদের প্রেসক্রাইব করা গ্রন্থই অর্থাৎ ব্রাক্ষন থেকেই যখন আমি রেফারেন্স দিলাম, সে লিখল,
যেখানে পশুহত্যাই যজ্ঞের মূলনীতি বিরুদ্ধ সেখানে শতপথের এই বক্তব্যকে প্রক্ষীপ্ত হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। 
চিন্তা করুন তাহলে সে এবার খোদ বেদের প্রেস্ক্রাইব করা গ্রন্থকেই মানতে অস্বীকার করছে। আর অজস্র রেফারেন্স দিয়েই আমি দেখিয়েছি যে যজ্ঞে বেদ অনুসারে পশূ হত্যার বিধান আছে। উপরে আচার্য শ্রী রাম শর্মার বেদ অনুবাদ থেকেও দেখিয়েছি। এরপরো এসব ফ্যানাটিকরা মানবে না।
এরপর ফ্যানাটিক লিখল,
তারপরেও হরিবংশ যে প্রচলিত ১৮ পুরাণ, ১৮ উপ পুরাণের অন্তর্গত নয় তা জিহাদীর গুরু মুসাফিক তাকে জানায় নি।
অগ্নিবীরকে জিজ্ঞেস করা হল আমার পুরা নোটের কোথায় আমি লিখেছি হরিবংশ পুরান ১৮ পুরানের অন্তর্গত ? সে একে উপপুরাণ বলে এর গুরুত্ত হ্রাস করার চেষ্টা করছে। অথচ উপপুরানো হিন্দু ধর্মালম্বিদের কাছে সমানই গুরুত্তপুর্ন। যেমন অন্তিম অবতারের বর্ননা দেয়া কল্কি পুরান হচ্ছে একটি উপপুরান। ইস্কনী, বৈষ্ণবীদের কাছে প্রভুত সমাদৃত নৃসংহপুরানও হচ্ছে একটি উপপুরাণ।
এরপর রামায়ন থেকে যেখানে অশ্বমেধ যজ্ঞের বর্ননা দিলাম সেখানে লিখল, যে সকল রামায়ন গবেষকই এই মত দিয়েছেন বাল কান্ড ও উত্তর কান্ড রামায়নে প্রক্ষিপ্ত। অথচ সে এখন রামায়ন গবেষকেরও হাওয়ালা দিল না। এই উগ্রবীরদের কাছে নিজেদের মতের বিরুদ্ধে শাস্ত্রের কোন কথা গেলেই তা প্রক্ষিপ্ত। এখন উপরে তো মহাভারত থেকেও দিলাম, এখন সেটাকেও এখন নিক্ষিপ্ত করবে।
আর অগ্নিবীরকে যদি আমি এবার ৬ বেদাংগের একটি হতে অশ্বমেধ যজ্ঞের বর্ননা দেই তাহলে এই ফ্যানাটিক কি করবে ?
Apastamba Srauta Sutra যেটি ৬ বেদাংগের একটি “কল্প” এর অংশ, সেখানেও অশ্বমেধ এর এরকম বর্ননা আছে,
২০/১৭/১২-১৮
the Chief Queen recites some Slokas (mentioned in Yajurved) and then all the wives of the king circumambulates the horse, fan it, tie their hairs on the right side of their head. Ramayana tells us that queen Kaushalya the mother of Hindu god Ram had spent a night with the horse.

সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

হিন্দু ধর্মে শিশু বিবাহ

ফেসবুকিয় দাদারা নবিজির বিবাহ নিয়ে অত্যন্ত বিকৃত প্রপাগন্ডা ছড়িয়ে বেরায়। তারা হরহামেশাই আয়শা রাঃ এর বিয়ে নিয়ে মুসলিমদের খোটা দেয়। তাই আসুন দেখা যাক, তাদের অবতার, ভগবান ও দেবতারা কি করেছেন, শ্রী রাম বিয়ে করেন মাত্র ৬ বছর বয়স্ক সীতাকে। হ্যা ঠিকই শুনেছেন। রাম হিঁদুদের কারো কাছে ভগবান, কারো কাছে মহাপুরুষ। আর সীতা হচ্ছে হিঁদুদের নিকট সবথেকে আদর্শ নারী চরিত্র। কিন্তু হিন্দুরা অনেকেই জানে না কিংবা যারা জানে তারা জানতে দেয় না যে সীতার বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর যখন রাম তাকে বিবাহ করে। ৬ বছর বয়স থেকেই সে রামের সাথে সংসার শুরু করে রাজা দশরথের প্রাসাদে। রেফারেন্স, বাল্মিকি রামায়ন, অরন্য খন্ড, ৩.৪৭.৩-১০, বলা আছে, সীতার বয়স ছিল ১৮ বছর যখন সে ভগবান রামের সহিত বনবাসে গমন করে। বনবাসের পুর্বে তিনি স্বামী রাম সহিত ১২ বছর কাটিয়েছেন রাজা দশরথের প্রাসাদে। এখানে যদি আমরা সিম্পল অংক করি, তবে দেখতে পাব বিবাহের সময় সীতার বয়স, ১৮-১২= ৬ বছর। নীচের লিংক থেকে বিস্তারিত পড়ে ও অংক কষে নিজেরাই দেখুন। http://www.valmikiramayan.net/utf8/... রামের সাথে বিয়ের সময় সীতার বয়স ৬ বছর ছিল এটি স্পষ্টভাবে পুরানেও উল্লখে আছে। রেফারেন্স, স্কন্দ পুরাণ ৩.২.৩০.৮-৯, বলা আছে, রাম বিয়ে করেন রাজা মিথিলার ৬ বছর বয়সী সুন্দরী কন্যা, সীতাকে। এবার হিন্দু দাদারা রামের ব্যপারে কি বলবে ? (নীচে স্ক্রীনশট)



Skanda Purana, Translated By: Sri Desiraju Hanumantha Rao

কৃষ্ণ বিয়ে করেন ৮ বছর বয়স্ক রুক্মনীকে। হ্যা ঠিকই শুনেছেন। হিঁদুদের সর্বাধিক জনপ্রিয় অবতার ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, যখন রুকমনীকে বিয়ে করেন তখন রুকমনীর বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। রেফারেন্স, স্কন্দ পুরাণ, ৫.৩.১৪২.৮-৭৯,








Screenshot 1







Screenshot 2
আর সেই শিশু রুকমনীর সাথেই শ্রী কৃষ্ণের যৌনাচার, রেফারেন্স, ব্রাক্ষ বৈবর্ত পুরান, কৃষ্ণ জন্ম খন্ড, ১১২,১-১০, "কৃষ্ণ তাহার স্ত্রী রুকমনীর পানে বিমুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছেন, যে কিনা এখনো পরিপুর্নভাবে বেড়ে ওঠে নি এবং যার বয়োসন্ধি শুরু হয়েছে মাত্র এবং যৌনতা সম্বন্ধে এখনো যার কোন ধারনাই গড়ে ওঠে নি । এমন মুহুর্তে কৃষ্ণ তার সহিত যৌনক্রিড়া শুরু করে দিল এবং রুকমনী জ্ঞান হারিয়ে ফেলল " নীচে স্ক্রীনশট








Brahma Vaivarta Purana, Translated by: T. R Rajendra Nath Sen
শিব বিয়ে করে ৮ বছর বয়স্ক পার্বতীকে। হ্যা, অবাক হলেও এটাই সত্য, শিব পার্বতীকে অতি অল্প বয়সেই বিবাহ করে হিমাচলে নিয়ে এসে সংসার শুরু করে। পার্বতীর বয়স ছিল তখন ৮ বছর। রেফারেন্স, শিবপুরাণ, রুদ্রসংহিতা, পার্বতীখন্ড, ৩.১১.১-২,

Shiva Purana, Translated by: J. L. Shastri

এখানে Himavat হচ্ছে পার্বতীর আরেক নাম। হিন্দু দাদাদের কি কিছু বলার আছে তাদের প্রধান প্রধান অবতারদের শিশু বিবাহ নিয়ে ? নোটটির দ্বিতীয় পর্ব ও বিস্তারিত আরো রেফারেন্স http://sottosomagoto.blogspot.com/2017/04/blog-post.html

মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭

জাকির নায়েক এর সাথে ডিবেট নিয়ে হিন্দুদের মিথ্যাচারঃ



ফেসবুকে হিন্দুদের নিকট থেকে সবচেয়ে বেশী বিদ্বেষ পাওয়া জীবিত ব্যাক্তি হয়ত জাকির নায়ক।তারা জাকির নায়েককে নিয়ে বহু মিথ্যাচার করে। তাদের করা মিথ্যাচারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মহেন্দ্রপাল নামের একজন অখ্যাত ব্যাক্তির নাম জাকির নায়েকের নামের সাথে জুড়ে দেয়া। ইউটিউবে একটা ভিডিও দেখা যায় Guru of zakir naik defeated by pandit mahendra pal arya নামে। তারা বলে আর্য সমাজী মহেন্দ্রপাল নাকি  জাকির নায়েককে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে এবং জাকির নায়েক তার ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়। আসুন দেখা যাক তাদের মিথ্যাচারের পোষ্টমর্টেম।

প্রথম মিথ্যাচার 
মহেন্দ্রপাল জাকির নায়েককে চ্যালেঞ্জ করেছে আর জাকির নায়েক নাকি তার ভয়ে পালিয়ে বেড়ান।

জবাবঃ
হিন্দুরা যতগুলো মিথ্যাচার করে তার মধ্যে এটা তার মধ্যে সবথেকে নিকৃষ্ট।
প্রথমে দেখা যাক মহেন্দ্র পাল কে? মহেন্দ্রপালের নিজ ভাষ্যমতে উনি ছিলেন একজন ওহাবী মৌলভী, তিরিশ বছর আগে ইসলাম ছেড়ে আরিয়া সমাজে যোগ দেন অথচ ইসলামে ওহাবীবাদের কোন স্থান নেই। তাই উনি কখনই একজন সত্যিকারের মুসলিম ছিলেন না কোনকালে।আর একজন প্রাক্তন ওহাবী মৌলভী হবার সুবাদে সে কোরান তেলাওয়াত করে নিজেকে জ্ঞানী বানানোর চেষ্টা করে।

এবার আসি আসল ব্যাপারে। হিন্দুরা যা প্রচার করে আসল ঘটনা সম্পুর্ন উলটো।
মূলত জাকির নায়েকই ২০০৪ সালে মহারাষ্ট্রে একটি প্রগ্রামে মহেন্দ্রপাল সহ আর্য সমাজের প্রধান স্কলারদের পাবলিক ডিবেটের আমন্ত্রন জানায়। কিন্তু এই মহেন্দ্রপাল তখন ভয় পেয়ে জাকির নায়েকের সামনে যায় নি।জাকির নায়কের সামনে না গিয়ে সে চোরের মত ইমেইলে তাকে প্রশ্ন করেছে। কি হাস্যকর।
শুনুন তার নিজের মুখেই,


ভিডিওটি দেখতে সমস্যা হলে ইউটিউব লিংক এ এখানে দেখুন https://www.youtube.com


মূল ভিডিও লিংকঃ https://www.youtube.com/watch?v=tYor776Iqug


আর কেনই বা সে যাবে ? জাকির নায়েকের সাথে তর্ক করার মত জ্ঞান কি তার আছে ?  সেটা সে নিজেও জানে।
মুলত জাকির নায়কের সামনে দাড়ানোর সাহস কোন হিন্দু খ্রিষ্টান বা অন্যান্য ধর্মের স্কলারদের নেই, সেটা মহেন্দ্রপালই আবার প্রমান করল।    
বর্তমান সময় হচ্ছে এরকম যে নিজের নাম যদি বিখ্যাত ব্যাক্তিদের নামের সাথে জুড়ে দেয়া যায়, তবে সেও বিখ্যাত হয়ে যায়।আর এই অখ্যাত মহেন্দ্র পাল ফেমাস হবার আশায় সেটাই করছে। সারাদিন জাকির নায়েক জাকির নায়েক করছে, কিন্তু জাকির নায়েক সরাসরি চ্যালেঞ্জ দিলে তার সামনে যেতে ভয় পাচ্ছে, আবার উলটো প্রচার করছে জাকির নায়েক নাকি তার সামনে আসছে না। হিন্দুদের চরম দ্বিমুখী মিথ্যাচার।


দ্বিতীয় মিথ্যাচারঃমহেন্দ্রপাল নাকি জাকির নায়েকের গুরু মুহাম্মদ তারিককে ডিবেটে হারিয়েছেন।

জবাবঃ

যারা জাকির নায়েক কে চেনে এবং তার জীবনি পড়েছে তারা এ খবর শুনে হাসতে হাসতে অক্কা পাবে , কারন জাকির নায়েকের গুরু হচ্ছেন প্রাক্তন শেখ আহমেদ দিদাত যা জাকির নায়েক তার বহু বক্ততায় স্বীকার করেছেন। কিন্তু এই গুরুর নাম তারা কোথায় পেল? এরকম কোন রেফারেন্স পাওয়া যায় না মহেন্দ্র পালের সাথে তর্ক করা এই মুহাম্মদ তারিক জাকির নায়েকের গুরু। এর চেয়ে বড় মিথ্যাচার আর হতে পারে না।এই মুহাম্মদ তারিক হচ্ছেন ভারতের একটি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং IRF এর একজন সদস্য মাত্র। তিনি জীবনেও জাকির নায়েকের গুরু নন। আর যদি তর্কের খাতিরে মেনেও নেই যে তিনি জাকির নায়েকের গুরু তবে ইতিহাসে এটা প্রথম হবে যে , কেউ একজন গুরুকে হারিয়ে এখন তার চ্যালাকে চ্যালেন্জ করছে।মুলত এগুলো হাস্যকর কথা । আর হ্যা উক্ত ডিবেটে জাকির নায়েক তো ভাল, IRF এর ও কোন সংযোগ ছিল না। কারন উক্ত ডিবেট কখনই IRF এর পক্ষ থেকে হয় নি, বরং তারিক তার ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে উক্ত ডিবেটে অংশ নিয়েছিলেন।

তৃতীয় মিথ্যাচারঃ
ডিবেটে নাকি আব্দুল্লাহ তারিক পন্ডিতজীর কাছে হেরেছেন। 

জবাবঃ 
এবার ভিডিওটার প্রসংগে যাই, আপনারা কি কেউ সেই ভিডিওটা পুরো দেখেছেন। মূলত উক্ত ডিবেটে মোহাম্মদ তারিক মোটেই হারেন নি বরং অত্যন্ত সফলভাবে জিতেছিলেন।আর পন্ডিত মহেন্দ্র পাল অত্যন্ত অসহিষ্ণু মনোভাবের পরিচয় দিয়েছিলেন ।
তারিক পন্ডিতজীর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন ।
ডিবেটের বিষয় ছিল ইসলাম শান্তির ধর্ম কিন। কিন্তু মুহাম্মদ তারিক তার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পর পন্ডিতজী তাকে আর আটকাতে না পেরে টপিকের বাইরে সম্পুর্ন ভিন্ন বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন।তিনি আল্লাহর আরশ, মরিয়মের গর্ভে ঈশা আঃ এর জন্ম ইত্যাদি নিয়ে কথা শুরু করে।অতঃপর মডারেটর তাকে ওয়ার্নিং দেয় ।এরপর মুহাম্মদ তারেক বেদের কতিপয় ভয়াবহ সহিংশ্র শ্লোক পন্ডিতজীর সামনে তুলে ধরলে পন্ডিতজী বলেন ওখানে দুষ্টের দমনের কথা বলা আছে। অতঃপর তারিক পাল্টা রেফারেন্স দেন যে ওখানে মুলত যারা বেদকে অস্বীকার করে তাদের নিঃশংসভাবে হত্যার কথা বলা আছে। অতঃপর পন্ডিতজি এই বিষয়ে তেমন কিছু না বললে মডারেটরই এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন। ডিবেটের এক পর্যায়ে তারিক মহেন্দ্র পালের নির্বুদ্ধিতায় হেসে ফেলেন এবং তাকে তার একটি প্রশ্নের একটি চরম উত্তর দেন । ফলে তারিকের পক্ষে হাত তালি শুরু হয় কিন্তু তারিক সাথে সাথে হাত উঠিয়ে তাদেরকে থামিয়ে দেন। এবং অত্যন্ত শান্তভাবে নিজের বক্তব্যকে তুলে ধরতে থাকেন ।
মহেন্দ্রপালের ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটা নিজেরাই পুরোটা দেখুন,
 https://www.youtube.com/watch?v=_246Zd5xeHE

আর মহেন্দ্রপালের ইসলামের ব্যাপারে করা প্রশ্নগুলোর ব্যাপারে বলি, এগুলোর জবাব বহু আগেই মুসলিমরা অনলাইনে দিয়ে রেখেছে।  সবগুলোর জবাব এখানে,
https://www.youtube.com/watch?v=wp7pRCzgTVM

মহেন্দ্রপালের ইসলাম নিয়ে ধোকাবাজি দেখুন, https://www.youtube.com/watch?v=psl4hTaHozc

সাধারন একটা মুসলিম ছেলে মহেন্দ্রপালকে সরাসরি ফোনে চ্যালেঞ্জ দিলেও দেখুন সে কিভাবে পালাচ্ছে, https://www.youtube.com/watch?v=balqh1rsiZg&list=PLlrPMRXOcCBCM9UdkytPsdjAcr_AT4fbK

যাই হোক, পরিশেষে বলব ইসলাম বিদ্বেষীদের মিথ্যাচার থেকে সচেতন থাকুন।

শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭

হিন্দু ধর্মে স্বর্গবাসীর জন্য হুর ও কুমারী নারী


হিন্দুরা কথায় কথায় মুসলিমদের বেহেশতে হুর নিয়ে খোটা দেয়, বলে মুসলিমরা তো বেহেশতে ৭২ টা  হুর পাবে। যদিও কোরানে কোথাও বলা নেই ৭২ হুর দেয়া হবে। শুধু বলা আছে, হুর দেয়া হবে, হুর মানে সংগী, আর মানুষ সংগী ছাড়া থাকতে পারে না। একিসাথে হুর শব্দটা স্ত্রী লিংগ ও পুলিংগ উভয়ই বুঝায়। তাই স্বর্গবাসীর একাকিত্ব দূর করতে সেখানে থাকবে তাদের জন্য সংগী।
কিন্তু সনাতনী হিন্দুরা এই বিষয়টি নিয়ে মুসলিমদের সবচেয়ে খোটা দেয়, অথচ এইসব দাদারা জানে না যে তাদের ধর্মগ্রন্থে ১টা, ২টা কিংবা ৭২ টা না, বরং স্বর্গে সহস্র বা হাজার হুর, অপ্সরী ও কুমারী নারী দেয়ার কথা বলা আছে।

অথর্ববেদ ৪/৩৪/২, বলা আছে, 

"নাইশাম শিশ্নামং প্রা দাহাতি যাতাভেদাহ,
স্বর্গলোকে বহু স্ত্রীনামেশাম"
অর্থঃ অগ্নি (যাহারা ধার্মিক) তাহাদের 
লিংগ (শিশ্না) পোড়াবে না এবং স্বর্গে তাহারা পাবে বহু স্ত্রী।

নীচে আর্য সমাজের আচার্য্য বিদ্যানাথ শাস্ত্রীর অনুবাদ, 



যদিও বিদ্যানাথ শাস্ত্রী অনুবাদে লিখেছে One for each one as his wife কিন্ত মুল সংস্কৃততে এরকম কোন কিছুই নেই। তিনি হিন্দু ধর্মে একক বিবাহ প্রতিষ্টায় বাড়তি কথা যুক্ত করেছেন, স্বর্গালোকে বহুস্ত্রীনামেশং এর পরে আর কোন শব্দ নেই যা ঐ অর্থ নির্দেশ করে।
অন্য একটি অনুবাদ প্রদান করলেই ব্যাপারটা পরিস্কার হয়ে যাবে,
গায়ত্রী পরিবারের প্রতিষ্টাতা আচার্য শ্রীরাম শর্মা এর অনুবাদ লেখেন,
"অগ্নি উসকি উৎপাদক অংগকো নষ্ট নেহি করতা, স্বর্গমে উসকি বহুতছি স্ত্রী হ্যায়"
অর্থাৎ অগ্নি তাহার উৎপাদক অংগকে নষ্ট  করে না এবং স্বর্গে তাহার বহু স্ত্রী থাকে। 




মহাভারত শান্তিপর্বে বলা আছে, ১২/৯৮
"স্বর্গে হাজারো অপ্সরী তীব্রবেগে ছুটে যাবে, যুদ্ধে নিহত বীরের আত্নাকে আনার জন্য"
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি


মহাভারত, অনুশাসন পর্ব, ১৩/৭৩ এ বল আছে,
গোসম্পদের সেবার মাধ্যমে মানুষ স্বর্গে গমনের পর এক হাজার স্বর্গীয় কুমারী নারী পাবে, যাদের থাকবে আকর্ষনীয় কটিদেশ এবং থাকবে সুন্দর পোষাক ও গহনায় সুসজ্জিত।
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি

মহাভারত বনপর্ব, ৩/৪২ এ বলা আছে,
ব্রাক্ষন, ক্ষত্রিয় বৈশ্য, স্বর্গে গেলে তাদের সকল দুশ্চিন্তা দূর হবে এবং তারা স্বর্গবাসীর সহিত ক্রীড়া করবে।
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি




মহাভারত, অনুশাসন পর্ব,  ১৩/১০৬ এ বলা আছে,
যারা রোগে শোকে অবিচল, যজ্ঞে  আত্ননিয়োগের গুনাবলি অর্জন করে প্রতি পদে , তাহাদের জন্য  স্বর্গে শত অপ্সরা অসাধারন গুনাবলির সহিত অপেক্ষারত, তাহাদের সহিত ক্রিড়া করার জন্য।
অনুবাদঃ কিশোরী মোহন গাংগুলি


ব্রাক্ষ বৈবর্ত পুরাণ, কৃষ্ণজন্ম খন্ড, অধ্যায় ৫৯, শ্লোক ৭৭-১০৩ এ বলা আছে,
"উত্তম চরিত্রের লোক পবিত্র কর্ম সম্পাদন করিয়া স্বর্গে গমন করে, এবং সেখানে স্বর্গের কুমারী নারীদের সহিত দীর্ঘ সময় ব্যাপী স্বর্গীয় সুখ লাভ করে।"
অনুবাদঃ রাজেন্দ্রনাথ সেন। 




হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হতে এরকম আরো বহু রেফারেন্স প্রদান করা যাবে।