মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১

যোগব্যায়ামের ভয়াবহতাঃ ভন্ড অগ্নিবীরকে জবাব

দুদিন আগে আমি এবং ব্রাদার রুহুল ভাই যোগ ব্যায়াম যে ক্ষতিকর এই মর্মে  একটি লেখা শেয়ার দিই। অগ্নিবীর নামক এক ভন্ড অনলাইন মিথ্যাবাদী হিন্দু গোষ্ঠী এটার জবাব  দেয়ার চেষ্টা করেছে। আসুন দেখি তারা ভন্ডামি করে কোথাকার পানি কোথায় নিয়েছে। প্রথমেই এরা শুরু করে রুহুল ভাইয়ের প্রতি পার্সনাল এটাক দিয়ে, যে সে অশিক্ষিত, প্রাক্তন মোবাইল মেকানিক ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ রুহুল ভাই University of Kalyani থেকে পড়াশুনা করেছে এটা তার প্রফাইলেই দেয়া রয়েছে। এই মিথ্যাবাদী ভন্ড কি তা পড়তে পারেনি? এই অগ্নিবীরের শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? সেটা পারলে তারা তুলে ধরুক। এদের বৈদিক সাইন্স টাইপের লেখা গুলো পড়লে তো এদের  ইন্টারফেল পাবলিক বলে মনে হয়। আবার এরা রুহুল ভাইকে প্রাক্তন মোবাইল মেকানিক বলে অবজ্ঞা করল, এ দ্বারা প্রমানিত হয় যে এরা যতই নিজেদের ধর্মীয় সাম্যের গান গাক, এদের কাছে নিজেদের জাত প্রথার মত পেশায়ও্ উচুনিচু আছে। মুখে যতই সাম্যতার বুলি ছড়াক অন্তরে ঠিকই অবজ্ঞা করে। 

তারা রিফিউট শুরু করে একটি হাস্যকর ভুল ধরার চেষ্টার মাধ্যমে, যেগাদর্শন এবং ইয়োগাকে আলাদা প্রমান করতে চেয়ে। অথচ  যোগ ব্যায়াম যোগ দর্শনেরই অংশ এটা তাদের দেয়া লিংকগুলোতেই বলা আছে। হঠযোগ যে যোগেরই শাখা এটা তাদের দেয়া উইকিপিডিয়া লিঙ্কেই দেয়া আছে। বিষয়টা অনেকটা এরকম যে, আম্রপলি  এক ধরনের আম। কিন্তু  কেউ যদি বলে আম্রপলি ফল তাহলে সে ভুল বলছে, এই হচ্ছে অগ্নিবীরের লজিক। যোগ দর্শন থেকে যোগ ব্যায়ামকে হাটিয়ে দাও, তাহলে আর যোগ দর্শনে অবশিষ্ট কি থাকে?

এরপর অগ্নিবীর উক্ত টাইমস অফ ইন্ডিয়ার লিংক নিয়ে জবাব দেয়ার চেষ্টা করল। প্রথমে বলতে চাই, উক্ত পোষ্ট যে একটা শেয়ার পোষ্ট ছিল তা পোষ্টের কার্টেসীতেই লেখা ছিল। অর্থাৎ পোষ্টের লেখক না ছিল রুহুল ভাই না ছিলাম আমি। যেহেতু এটা কার্টেসী দেয়া পোষ্ট অতএব পোষ্টের কোন ভুলের দায়ভারও লেখকের। কিন্তু অগ্নিবীর এখানে জবাব দিতে গিয়ে যে ছালছাতুরি করেছে এবং টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টের তথ্য গোপন করেছে তা আগে তুলে ধরা যাক। 

এটা সত্য যে রিপোর্টটিতে নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে ঘটা ৭৬টি কেস নিয়ে প্রথমে আলোচনা করেছে। কিন্তু অগ্নিবীর এই সংখ্যাকে মিথ্যাভাবে তুলে ধরেছে এই বলে যে এটা নাকি সমগ্র নর্থ আমেরিকা এবং ইউরোপের সংখ্যা। শুধু তাই না, তারা এখানে কাল্পনিক ১০ লাখ একটা সংখ্যাও তুলে ধরেছে এই বলে যে ১০ লাখের মধ্যে নাকি এখন পর্যন্ত ৭৬টা রিপোর্ট পাওয়া গেছে, অথচ রিপোর্টটিতে এমন কথা কোথাও নেই। মূলত এটি ছিল জাষ্ট ৭৬ জন যোগব্যায়ামকারী যারা যোগব্যায়াম করে আহত হয়েছে এবং মারা গেছে তাদের নিয়ে একটি স্টাডি যে যোগব্যায়ামে কি ধরনের ভয়াবহ ইনজুরি হতে পারে। এখানে কোথাও বলা হয়নি যে সারা নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে মাত্র এই ৭৬ জনই যোগ ব্যায়াম করতে যেয়ে আহত হয়েছে।
তবে আক্রান্ত হওয়া যোগব্যায়ামকারীদের সংখ্যা কত? তারও একাধিক উপাত্ত রিপোর্টতে দেয়া আছে যা অগ্নিবীর গোপনে এড়িয়ে গেল। যেমন রিপোর্টটিতে বলা আছে, ১১০ জন অষ্টাঙ্গ যোগ চর্চাকারীদের ৬২% এর মাংসপেশী বা মেরুদন্ডে ইনজুরি হয়েছে। এটা যদিও লো স্কেল স্টাডি ছিল কিন্তু পার্সেন্টিজটা কত বড় সেটা সহজেই বোধগম্য। লার্জ স্কেলে পার্সেন্টিজ এ উনিশবিশ বা আঠারো বিশ হতে পারে কিন্তু সংখ্যাটা কত বড় হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। 
অগ্নিবীর খুব গর্বের সাথে “অস্ট্রেলিয়ায় ২৫০০ জন যোগব্যায়ামকারীর ৭৮.৭% জানিয়েছে তাদের কখনো কোন প্রকার ইন্জুরি হয়নি” এই অংশটুকু প্রচার করলেও পরের অংশটুকু ঠিকই গোপন করে  গেছে। তা হলো, সমগ্র নর্থ আমেরিকার প্রধানতম ১৩০০ এর বেশি যোগ ব্যায়ামের গুরু ও থেরাপিষ্টরা জানিয়েছেন, তাদের ভক্তদের মধ্যে যোগ ব্যায়ামের কারনে মেরুদন্ডে, বাহুতে, জয়েন্টে ইনজুরি খুবই কমন বিষয়। এবার শুধু নর্থ আমেরিকার প্রধান ১৩০০ এর বেশি যোগ ব্যায়াম শিক্ষকের কত শত স্টুডেন্ট যোগব্যায়ামের মাধ্যমে ইনজুরি হয়েছে সংখ্যাটা এবার নিজেই হিসেব করুন।
https://timesofindia.indiatimes.com/home/science/Scientific-study-reports-side-effects-of-yoga/articleshow/24763495.cms



অগ্নিবীর যোগব্যায়ামের কিছু উপকারীতা তুলে ধরতে চাইলো চিকিৎসা জার্নাল পাবমেড এর কিছু লিংক দিয়ে যে যোগব্যায়াম করলে এই হয়, সেই হয়। অথচ সেই একই পাবমেট জার্নালে ইয়োগার ক্ষতিকর দিক নিয়েও বহু রিসার্চ পেপার আছে। গুগলে Pubmed Yoga adverse effect লিখে সার্চ করলেই অনেকগুলি রিসার্স পেপার পাওয়া যাবে। এই লেখায় আমি নিজেও একটা সাইটেশন ইউজ করেছি। তবে সবচেয়ে বড় কথা হল আমার বা রুহুল ভাইয়ের শেয়ার করা পোষ্টটিতে আমরা কোথাও কিন্তু দাবি করিনি যে যোগব্যায়ামের কোন উপকার নেই। যে কোন শারীরিক পরিশ্রমেরই উপকার রয়েছে। কিন্তু যখন উপকারের মধ্যে বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা থাকবে তখন সেই উপকার এড়িয়ে চলাই কাম্য।

এরপর অগ্নিবীর গর্বের সাথে তুলে ধরেছে আমেরিকার কিছু ডাক্তারদের দেবতা জ্ঞান করে যে তারা তাদের রোগীদের ইয়োগা প্রেসক্রাইভ করেছে। অথচ হিন্দুদের দেবতাতুল্য এই সাদা চামড়ার বিজ্ঞানীরাই বর্তমানে যোগ ব্যায়ামের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে মানুষকে সাবধান করছে এ থেকে। তারা বলছে যোগ ব্যায়ামকে আগে যতটা ক্ষতিকর ভাবত এটা তার থেকে বেশি ভয়ংকর ক্ষতি সাধন করতে পারে। 
https://www.telegraph.co.uk/news/2017/06/28/yogamore-dangerous-previously-thought-scientists-say/

ব্যথা নিরাময়ে যোগ কার্যকরী এই তত্ত্ব প্রদানকারীদের ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির গবেষকরা সাবধান করেছেন। তারা দেখিয়েছেন যোগ ব্যায়ামে শতকরা ১০ ভাগ মানুষ ব্যাথায় আক্রান্ত হয় যা নিরাময় করা দুঃসাধ্য। এবং ২১% মানুষের উল্টো পূর্বের কোন ব্যাথা থাকলে তা ফিরে আসে। 
https://www.sciencedaily.com/releases/2017/06/170627105433.htm?fbclid=IwAR1KWLb9WMQIs5dWfGHLUeQo5rdMPrz3IdS27gRprdu8KWi2UWJmSqcwlIs#:~:text=Summary%3A,of%20existing%20injuries%2C%20research%20shows

জার্মানীতে যোগ ব্যায়াম চর্চাকারীদের মধ্যে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যোগ ব্যায়াম চর্চাকারীদের মধ্যে ২১.৪% মানুষ ৭০২ রকমের মারাত্নক ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে।
https://bmccomplementmedtherapies.biomedcentral.com/articles/10.1186/s12906-019-2612-7?fbclid=IwAR0ShGF9q3ZVOASI2r7rYBoToqpTvaaWlQ8ZR9uhJt9IvKcB3ENiahXbwLc

ব্রিটেনে যোগব্যায়াম চর্চাকারীদের মধ্যে গবেষণায় দেখা গেছে ভাল ফল থাকার পরও শতকরা ২০% মানুষ ই যোগ ব্যায়াম করতে যেয়ে কখনো না কখনো আহত হয়েছে। 
https://europepmc.org/articles/pmc7044896/bin/bmjopen-2019-031848supp001.pdf


অগ্নিবীর যুক্তি দেয়, তারা লেখে,
যোগব্যায়ামকারীরা নিজ নিজ শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ীই কেবল যোগব্যায়াম করবে, যে ব্যায়মে প্রয়োজন নেই সেটা করবেনা এবং একজন অভিজ্ঞ যোগগুরুর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী করবে। এটাই আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বাভাবিক নিয়ম। আপনি চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ইচ্ছামতো খুশিমতো ওষুধ খেলে সাইড ইফেক্ট হলে দোষ তো আপনার, ওষুধের নয়। যেমন অনেক হাঁড়ক্ষয়ের রোগী, স্পন্ডালাইটিস এর রোগীকে প্রচলিত নামাজ পড়তে নিষিদ্ধ করা হয় এবং বলা হয় পড়লেও কেবল চেয়ারে বসে পড়তে পারবে। এখন যদি সেটা না করে ইসলাম ধর্মের হুবহু বিধি অনুসারে নামাজ পড়তে যায় সে আহত হবে, এবং প্রচুর মানুষ আহত হয়ও। তাহলে রুহুলের যুক্তি অনুসারে নামাজ পড়াও ক্ষতিকর এবং তা বর্জন করা উচিত, তাই নয় কি?

আমার জবাবঃ
উপরে যে নর্থ আমেরিকার ১৩০০ প্রধানতম যোগব্যায়ামের টীচারের সীকারোক্তি দেয়া হল যে তাদের স্টুডেন্টদের মধ্যে যোগব্যায়ামের ফলে মেরুদন্ডে, বাহুতে, জয়েন্টে ইনজুরি খুবই কমন বিষয়, এখন তবে এই বিশাল সংখ্যক যোগগুরু থেরোপিষ্টদের প্রেসক্রিপশন তো তাদের ভক্তদের কোন কাজে আসল না। তাদের ভক্তরা তো ঠিকই নানা ইনজুরিতে ভুগছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যোগ ব্যায়াম অবশ্যই চিকিৎসাবিজ্ঞানের কোন ওষুধের মত না। এটা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করতে গেলেও প্রচুর ইনজুরি হওয়া খুব কমন বিষয়।
মানুষের নিজের শারীরিক সক্ষমতা মানুষ নিজেই বেশিরভাগ সময় অনুধাবন করতে পারে না, অন্য একজন মানুষ এর পক্ষে তো তা দূরের বিষয় সে যত বড়ই যোগগুরু হোক না কেন। উল্টো বিভিন্নি সময় দেখা যায় বিভিন্ন যোগ গুরু নিজেরাই যোগ এর বিভিন্ন আসন ট্রাই করতে যেয়ে শরীরের রগ ছিড়ে ফেলছে।
https://www.goodmorningamerica.com/wellness/story/instagram-yoga-guru-suffered-stroke-tearing-artery-neck-61939841

আবার যোগব্যায়াম সম্পর্কে অগ্নিবীর টাইপের অ্জ্ঞ লোকদের ছড়ানো মিথ, যে যোগব্যায়াম সঠিকভাবে চর্চা করলে বা দক্ষ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে চর্চা করলে বা বিগেনার লেভেলে ধীরে ধীরে চর্চা করলে কোন ক্ষতি বা ইনজুরি হয় না, সঠিক নিয়মে যোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করলে এটি সম্পূর্ন সেইফ, এ ধরনের মিথ খোদ যোগ ব্যায়ামের প্রফেশনাল গুরু ও টীচাররাই নস্যাৎ করেছে। 
https://yogainternational.com/article/view/10-myths-about-yoga-injuries1

অগ্নিবীর এখানে আবার নামাজের প্রসঙ্গ নিয়ে আসল। এরা নিজেদের জ্ঞানের স্বল্পতায় বলতে চাইছে শারীরিক অসুস্থতার কারনে কেউ ‘প্রচলিত নামাজ’(!) বা ‘ইসলাম ধর্মের হুবহু বিধি অনুসারে নামাজ’(!) পড়তে না পারলে তার দোষ নামাজের কিনা। অগ্নিবীরের যে জ্ঞান নেই তা হল, ওজরের কারনে বসে নামাজ পড়া, শুয়ে পড়া, এমনকি ইশারায় নামাজ পড়াও প্রচলিত নামাজই এবং ইসলাম ধর্মের হুবহু বিধি অনুসারে নামাজই। আর এই বিধি সহী হাদিসেই আছে। রাসুলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন, দাঁড়িয়ে নামাজ  পড়ো, যদি না পারো তবে বসে নামাজ পড়ো, যদি তাও না পারো তবে ইশারা করে নামাজ আদায় করো। (সহী বুখারি, হাদিসঃ ১০৫০) মুসলিমের শারীরিক অবস্থা যাই হোক না কেন, সে সব ভাবেই নামাজ পড়তে সক্ষম। এখন যোগ ইশারায় করার বিধান আছে কিনা এটা পারলে অগ্নিবীর তুলে ধরুক।

অগ্নিবীর সৌদির প্রসঙ্গ তুলে এনে মিথ্যাচার করে লেখে যে, সৌদি সরকার নাকি যোগ ব্যায়ামে মুগ্ধ হয়ে তাদের দেশে যোগ ব্যায়াম চালু করেছে, অথচ তাদের শেয়ার করা লিঙ্কেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে পুরো বিষয়টা ইন্ডিয়ান এম্বেসির প্রচেষ্টায় হয়েছে।  এখানে পুরো বিষয়টা কূটনৈতিক এবং ব্যবসায়িক। এটুকু বোঝার মত ব্রেন এইসব অগ্নিবীরের মত লোকদের নেই।

আবার জাতিসংঘও আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষনা করেছে, এতেও অগ্নিবীরের গর্বের শেষ নেই। জাতিসংঘ নাকি যোগের বৈজ্ঞানিক সফলতার স্বীকৃতি দিয়ে এটি ঘোষনা করেছে!  এই সব মূর্খদের জাতিসংঘের কর্মপর্দ্ধতি সম্পর্কে ধারনা নেই। জাতিসংঘ তার অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের কালচারকে প্রমোট করতে বিভিন্ন সময়ই এ ধরনের বহু দিবস ঘোষনা করে। এখানে যোগ দিবস ঘোষণা বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতির জন্য নয়, কালচারাল স্বীকৃতিরি জন্য। আর এটা কি জাতিসংঘ নিজ থেকে যেচে পড়ে দিয়েছে? আসুন দেখি, 
মূলত ২০১৪ সালে জাতিসংঘের অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদি যোগ ব্যায়ামকে তাদের কালচারের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক দিবস ঘোষনার জন্য কাকুতি মিনতি করে। আর এরপর জাতিসংঘ তা অনুমোদন করে। তাই জাতিসংঘ যোগের বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি দিতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষনা করে, এটি একটি মিথ্যাচার। জাতিসংঘ ঘোষনা করে ইন্ডিয়ান কালচারকে স্বীকৃতি দিতে এবং তাও নরেন্দ্র মোদির কাকুতি মিনতির পর। 


মুসলিম ফিলসফিষ্ট আল বিরুনি পতন্জলি যোগ সূত্র অনুবাদ করেছে, তা নিয়েও অগ্নিবীরের ফাল দেখার মত। আল বিরুনি একজন কমপ্যারেটিভ রিলিজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি পতন্জলী যোগের অনুবাদ করতেই পারেন। তাতে কি আসে যায়।

আবার গুগলে Yoga লিখে সার্চ করলে যেসব নগ্ন নারীদের ছবি আসে সে প্রসঙ্গে অগ্নিবীর বলল, সনাতন ধর্মে নাকি বলা আছে মাতৃবৎ পরদারেষু, অর্থাৎ সকল পরস্ত্রী নারী নাকি মা। আমার প্রশ্ন তাহলে বিয়ের আগে একজন মেয়ে তাদের মা। কিন্তু বিয়ের পরেই  হয়ে যায় বউ। এরমানে কি হিন্দুরা নিজেদের মাকে বিয়ে করে?  আবার সব নারী মা সমান হলে মায়ের নিকট সন্তানের অনেক আবদার থাকে। সন্তান মাকে জড়িয়ে ধরতে পারে, চুমু খেতে পারে। এখন সকল নারী যেহেতু মা তাহলে অন্য সব নারীকে মা বলে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করতে পারবে কি অ্গ্নিবীর ? মা বললেই কি মা হয়ে যায়? এ দ্বারা বোঝা যায় আপাতদৃষ্টিতে শুনতে মধুর কিন্তু যুক্তিহীন সনাতন ধর্মের বানি আর ফ্যাক্ট এক জিনিস নয়।অগ্নিবীর আবার দাবি করে নারীকে ভোগবস্তু ভেবে আমরা নাকি যোগ ব্যায়ামকে যৌন বিনোদনের উৎস বলেছি। আসুন দেখি কারা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে নারীকে ভোগবস্তু বানিয়ে যৌন বিনোদন করে।এখানে হিন্দু যোগগুরুদের যোগব্যায়াম শিখানোর মাধ্যমে ধর্ষন উৎসবের লিষ্ট দেয়া হল। 
https://en.wikipedia.org/wiki/Sexual_abuse_by_yoga_gurus

পরিশেষে বলতে চাই, শারীরিক সক্ষমতা অনুধাবন একটি দুরুহ কাজ। আর যোগ ব্যায়াম পুরোটাই অদ্ভুতুড়ে শারীরিক কসরত ছাড়া কিছুই নয়। তাই এতে উপকার থাকলেও এর ক্ষতির পারসেন্টিজ ও ইনজুরির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে এর থেকে দূরে থাকাই উত্তম। এর থেকে স্বাভাবিক জগিং, হাটা, সাঁতার, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ অনেক বেশি উপকারী এবং সেইফ। আর যেসব ভন্ড তাদের ধর্মের গুনগান গাওয়ার জন্য যোগ ব্যায়ামের প্রচার করে, তাদের থেকে সাবধান। বুঝতে হবে, পশ্চিমা বিশ্বে, হিন্দুদের ধর্ম প্রচারের প্রধান উপাদান হচ্ছে যোগ ব্যায়াম আর মেডিটেশন। ভবিষ্যতে মেডিটেশন নিয়েও আলোচনা করা হবে। 











1 টি মন্তব্য: